আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সচিব মহোদয়ের সালার দৌরাত্মে জানটা ঝালাপালা হইয়া গেলো

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

সালাকে হ্যান্ডেল করার জন্য আমারে দায়িত্ব দিয়া বস মোটামুটি নিশ্চিন্ত। কিন্তু এইটা এমন মাল যে লাইত্থাইয়া কবরে শোয়াইয়া দেয়া উচিত। তার দুলাভাই কোন একটা মন্ত্রণালয়ের সচিব। আমাদের অফিসের কাজের সূত্রে সেইখানে যাইতে হয়। সচিব মহোদয় তার সালার জন্য জিওলজিস্ট পদে নেবার অনুরোধ করছিলো।

কোন একটা প্রজেক্টে। প্রজেক্ট মানে একটা নিদৃষ্ট মেয়াদে এর স্থিতি, প্রজেক্ট শেষ চাকুরী শেষ। তবে আবার অন্য কোন প্রজেক্টে যদি জিওলজিস্টের দরকার হয় তবে তার আবার চাকুরী হইতে পারে। ঘটনা এইরকম। ম্যানেজমেন্টও সিদ্ধান্ত নিছে সরাসরি না তো বলা যায় না, সেক্রেটারি হয়তো আবার কোন ফাইল আটকাইয়া দিতে পারে, তারচেয়ে যদি প্রার্থী মোটামুটি যোগ্য হয় তবে একটা প্রজেক্টে তারে কিছুদিনের জন্য নিয়া নিতে।

তো তারে যে প্রজেক্টে নেবার জন্য ভাবা হইছিলো সেইটার কন্ট্রাক্ট তখন সাইন হয় নাই। নতুন সরকার - কবে সাইন হবে তাও বলা যাইতেছে না। সেক্রেটারীর সালা আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে সেইটা তারে জানানো হইলো। কিন্তু এরপরে চুদিরভাই নিয়মিত ফোন করা শুরু করলো। আমিও নিয়মিত মিষ্টিহাস্যে তাকে একই কথা বলি।

সে বলে, আমি তো চাকুরী ছাইড়া দিছি। স্কেফ কোম্পানীতে নাকি ত্রিশ/চল্লিশ হাজার টাকা বেতনে চাকুরী করে। শুইনা কইলাম, পাগল হইছেন নি মিয়া! চাকুরী কনফার্ম না কইরা কেউ চাকুরী ছাড়ে! সে কয়, তিনমাসের আগাম নোটিশ দিতে হয়। আমি কইলাম, কন্ট্রাক্ট সাইন যে তিনমাসের মধ্যে হইবে এরম কোন নিশ্চয়তা নাই। সে কয়, চাকুরী হইবে তো? আমি কইলাম, হইবে নিশ্চিত তবে প্রজেক্টে আর তাও প্রজেক্ট সাইনের পরে।

এরমধ্যে তারে সিভি পাঠাইতে কওয়া হইলো। সে যে সিভি পাঠাইছে তাতে মোটামুটি আমাদের বোঝা হইয়া গেছে যে হালায় জিওলজির জও জানে না। জিওলজিস্ট সিভি পাঠাইছে বাংলায় লিইখ্খা আর তার মধ্যে তার ঔষধ বেচার অভিজ্ঞতার বয়ান। যে গ্রেডের কথা বলছে সেইটা আবার আমি স্কেফ ফার্মাসিটিক্যালস ফোন কইরা জানলাম যে এইটা একটা সেলসম্যানের পোস্ট, বেতন বড়জোর ১২/১৫ হাজার টাকা। তো, যেহেতু সেক্রেটারীর রেফারেন্স এবং এমন একজন সেক্রেটারী যার বিষয়ে সবাই একবাক্যে বলবে হারামাজাদা - তারে তারপরেও ৫মাসের জন্য নেয়ার চিন্তা করা হইলো।

যে প্রজেক্টে তাকে নেয়া হইবে বইলা আমরা ভাবছি সেইটাতে জিওলজিস্টের ইনপুট মাত্র পাঁচ মাসের। তাও আবার প্রজেক্ট এরিয়াতে। মানে রাজশাহী অঞ্চলে। ঐ প্রজেক্টর টিম লিডার ভাবলো, এরে দিয়া তো কোন কামই হইবে না, আরেকজন তো নিতেই হবে, সুতরাং তার বেতন থেকে ৮/১০ হাজার টাকা কাইটা এই হালার জন্য বরাদ্দ করা হইতে পারে। এমনিতেই তারে দিয়া বাল ছিড়নের কামও হইবে না।

পাঁচমাসে ঐ ১০ হাজার টাকা কইরা ৫০ হাজার টাকই ফিসাবিলিল্লাহ ধইরা নিতে হবে। তারে সেইটা জানাইলাম যে ৫মাসের জন্য আপনারে নেয়া হইতে পারে, বেতন হইবে ৮/১০ হাজার টাকা, থাকতে হইবে ফিল্ডে। সে সেইটা শুইন্না কয় তাইলে প্রজেক্টের শেষে কি করুম, আমি কই, এইটা আপনার ব্যাপার। তারপরেও তার উৎসাহ কমে না। ত্রিশ/চল্লিশ হাজার টাকা বেতন ছাইড়া খন্ডাকলিন একটা জবে কেন সে আইবে সেইটা খালি ফোন কইরা বলে।

আমিও কই, তাইতো, কেন আইবেন! কিন্তু তারপরেও কবে কন্ট্রাক্ট সাইন হবে, কবে সে জয়েন করতে পারবে এইসব খালি অনবরত জিগাইতেই থাকে - আর আমিও টেপরেকর্ডারের মত একই কথা বলতে থাকি। তারপরে একসময় প্রজেক্টটা সাইন হইলো। ইতিমধ্যে চারমাস অতিবাহিত হইয়া গেছে। তারে ডাকা হইলো ইন্টারভিউএর জন্য। সে অবাক হইয়া কয়, আবার ইন্টারভিউ লাগবে, চোদনা হালায় ভাবছিলো আইবো আর চাকুরী হইয়া যাইবো।

বুঝাইয়া কইলাম যে অফিসের একটা প্রসিডিউর আছে, প্রজেক্টের জব ও আমাদের এইচআরডি মারফত যাইতে হবে। ইন্টারভিউ কমিটি হবে, তারা রিটেন নিবে, ভাইবা হবে - তারপরে সেইটা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে - তারপরে নিয়োগ। গত সপ্তাহে তার ইন্টারভিউ হইলো। তিন জন জিউলজিস্ট সহ পাঁচজনের একটা বোর্ড তার ভাইভা নিলো। ভাইভার পরে কোন বোর্ড মেম্বারই ইভালুয়েশন সিট জমা দেয় না।

আমার কাম ছিল নন-টেকনিক্যাল ইভালুয়েশন। সানন্দে সবগুলা প‌্যারামিটারে জিরো দিলাম। ক'দিন আগের ঝড়ের নাম কি জিগাইলে কইলো, পেপারে নামটা পড়ছিলাম। তো আমি যদিও জিরো দিয়া ইভালুয়েশন সিট জমা দিয়া দিছি - অন্যান্যরা জিরো দিতেও চাইতেছে না। তাদের বক্তব্য এইটার কোয়ালিফিকেশন হইলো মাইনাচ-জিরো।

কিন্তু সেক্রেটারীর সালা বইলা কিছু লিখতে ভয় পাইতেছে। আইজকা আবার ফোন করছে। বস আমারে কইলো তারে জানাইতে যে রেজাল্ট খুবই পুয়োর হইছে, তারপরেও তারে ঐ আগের কন্ডিশনেই নেয়া যাইতে পারে। ৫ মাস এবং ফিল্ডে, বেতন দশ হাজার। শুইনা কয়, ৫মাসের জন্য কেন আমি সেইখানে জব করবো।

তারপরে আরেকটু রাইগ্গা কয়, আপনার বস তো আমার ক্যারিয়ার নষ্ট কইরা দিলো। আমার দুলাভাই বিষয়টা নিয়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলবে। শুইন্না মেজাজটা এতো খারাপ হইলো - ৫মাস যাবত ধৈর্য্যের চরম পরীক্ষার অবসান ঘটানো বাধ্যতামূলক মনে হইতেছে। ফোন হোল্ড কইরা, বসের রুমে গিয়া এই কথা কইলাম, বস কইলো, ওবামার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন - আর একটা রিগ্রেট লেটার পাঠাইয়া দেন। আইসা কইলাম, ভাইজান, আপনি খুবই একটা খারাপ কথা বলছেন, যার ফলে আপনার ৫মাসের জন্য চাকুরীটাও দেয়া যাইতেছে না।

শুইন্না কয়, আমার তো ক্যারিয়ার শেষ - প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার দুলাভাই নালিশ দেবে। ইচ্ছে হইতেছিলো পাছায় একটা গদাম লাথি দেই। কিন্তু অফিস ডিকোরাম বইলা কথা, ফোন কাইটা দিলাম। বিদ্রঃ ব্যানের ভয়ে কিছু কুশীল শব্দ বিয়োগ করাহ হইলো।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.