চোখ খুবলে নেয়া অন্ধকার, স্ফুলিঙ্গ জ্বেলে দাও!
ভূমিকাঃ সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের অস্তিত্ব এবং এদেশ ও ভারতের লাখো মানুষের জীবন বিপন্নকারী ভারতীয় শাসকগোষ্ঠীর যে হীন প্রতিক্রিয়াশীল ষড়যন্ত্র আমরা প্রত্যক্ষ করি তা হল "ভারতের আন্তঃ নদী সংযোগ প্রকল্প"। "ভারতের এক অঞ্চলে পানির প্রাচুর্য্য এবং অন্য অঞ্চলে খরা, এ এক বিশাল প্যারাডক্স"- এভাবেই ২০০২ সালের ১৪ আগষ্ট স্বাধীনতা দিবসের ভাষনে ভারতের রাষ্ট্রপতি এপিজে আবুল কালাম নদী সংযোগের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসেন এবং পরবর্তীতে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট এই প্রকল্পের উপর আইনগত বৈধতা ও ন্যায্যতার ছাপ মারে ২০১৬ সালের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের আদেশ প্রদান করে।
ভারতের গৃহীত এই প্রকল্পটি এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ নদী সংযোগ প্রকল্প যার পেছনে ব্যয় হবে ২০০ বিলিয়ন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি রূপী। এই মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ওড়াউড়ি হবে বিশেষজ্ঞ গ্রুপের পরিকল্পনা, বিশাল প্রযুক্তিগত দক্ষযজ্ঞ, বিপুল মুনাফার লুটপাটের পেছনে। কিন্তু এসবের মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের সাধারন মানুষের স্থান কোথায়? মুনাফার যুপকাষ্ঠে বলি হয় যে সাধারন মানুষ এক্ষত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
প্রকল্পের ফলে তারা হারাবে তাদের বাসস্থান, কৃষক ও পেশজীবীরা হারাবে তাদের কাজ, হারাবে ন্যুনতম জীবনমান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার। প্রকল্পের আগে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এবং প্রকল্পের পর মুনাফার ঘানি টানার জন্য তারাই হবে উপযুক্ত বাহন।
ভারত প্রায় ২০ বছর যাবৎ তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিলেও বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্নকারী এই প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশে সোরগোল উঠে মূলত ২০০০ সালের পর, তাও বেসরকারী পর্যায়ে। এরপরই আমরা মূলতঃ সরকারী পর্যায়ে যতটুকু না হলেই নয়, ততটুকু নড়াচড়া প্রত্যক্ষ করি। যদিও প্রকল্পের বিরুদ্ধে এই নড়াচড়া এখনো নিস্ফল রোদন ছাড়া আর কিছুরই জন্ম দিতে পারেনি।
বেসরকারী পর্যায়ে প্রকল্প নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা এবং আন্দোলন সংগ্রাম ও সংগঠিত হয়েছে। সম্প্রসারণবাদী দেশ হিসেবে দক্ষিন এশিয়ার জনগণের উপর ভারতের যে আগ্রাসণ এবং সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থায় একচেটিয়া মুনাফার কাছে বিশ্বের জনগণের উপর যে শোষণ তাই আরো নগ্ন এবং নির্মমভাবে প্রকাশিত হয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে। এই প্রকল্পকে সত্যিকার অর্থে রুখতে হলে কেবলমাত্র বাহ্যিক লাভ-ক্ষতির হিসাব নয়, প্রত্যেকের ভূমিকা এবং স্বার্থকে যথাযথ বিশ্লেষণ করে শত্রু চিহ্নিত করা এবং সঠিক করণীয় নির্ধারণ করতে বাংলাদেশ সহ দক্ষিন এশিয়ার জনগণকে শিখতে হবে।
>>
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।