ঘূণিঝড় আইলার প্রভাবে নোয়াখালী উপকূল এখন এক স্তব্দ জনপদে পরিণত হয়েছে। চারদিকে শুধু ধ্বংসের চিহ্ণ। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার উপকূলীয় চরাঞ্চলে কমপক্ষে ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যাদের বেশিরভাগই শিশু। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক।
জোয়ারের তোড়ে ঘর ভেসে এবং বিধ্বস্থ হয়ে গৃহহারা হয়েছে অন্তত ৫ হাজার পরিবার। ভেসে গেছে সহস্রাধিক গরু-ছাগল। সরকারি হিসাবে এরিপোর্ট লিখা পর্যন্ত (মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) ১৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হলেও এ সংখ্যা আরো বাড়ার আশংকা করছে হাতিয়া উপজেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ১০ টন চাউল আর নগদ ২০ হাজার টাকা।
স্থানীয় লোকজন এবং ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে এসে অক্সফামের দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচীর সমন্বয়ক ইয়াহিয়া বাঙালী জানায়, জোয়ারের পানিতে ডুবে এবং ঘর চাপা পড়ে কেরিং চর, নলের চর, নঙ্গলিয়া এবং চরবাশারে সাথী (৬), সাজনা বেগম (৫), রাশেদ (১৭), রুমী দাস (৫), আব্দুল মালেক ওরফে কাসেম (৪০), আবুল কাসেম ব্যাপারী (৪৫), কাঞ্চন (৮), রোজিনা (৩৫), আজিফা খাতুন (৬০), শাহ আলম (১৩), তানজিনা আক্তার (৩), আলআমিন (১২) ও এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া ঘরচাপা পড়ে বয়ারচরের নবীপুর রাজীব (১৫), গাবতলীতে মারুফ (৭) এবং চরলক্ষ্মীতে আম্বিয়া খাতুন (৫৫) এবং সোমবার রাতে বয়ারচরের চেয়ারম্যান ঘাট বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়ে মালেকা খাতুন (৬০) নামের এক বৃদ্ধা মারা যায়।
ক্ষতিগ্রস্থ মানুষজন, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ ও পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা জানায় পানিতে ডুবে এখানে রাহেলা বেগম (২৬), সাব্বির (১২), হাফেজ মাঝি (৬০), আয়েশা (১০) সজীব (৫), কবির (৮), করিম (৫), তাহমিনা (৫), আবুল হাসেম (৭), জহির উদ্দিন (১০), হেদায়েত উল্যা (১২), এবং নাজমা বেগম (১০) মারা যায়। এছাড়া হাতিয়ার সুখচরে পলি বেগম (৫) নামের এক শিশু মারা গেছে পানিতে ডুবে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জোয়ারের পানিতে ৫ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হওয়ায় এসকল পরিবার সম্পূর্ণগৃহহারা হয়ে পড়েছে। ১২’শ গরু-ছাগল ও হরিণ ভেসে গেছে জোয়ারের তোড়ে।
হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম ১৫জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া ৪ হাজার ৩৭২টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৭ হাজার ৪৭০টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে তিনি জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।