মন তুমি কৃষিকাজ জানো না, এমন মানবজমিন রইলো পতিত; ফলালে ফলতো সোনা
যারা খুব কম ঝামেলায়, আরামে ভ্রমন করে এবং কম খরচে দেশের বাইরে অসাধারণ একটা জায়গা ঘুরে আসতে চান তাদের জন্য আদর্শ জায়গা হচ্ছে শিলং। শিলং হচ্ছে ভারতের 'সেভেন সিস্টার্স' এর অন্যতম মেঘালয়ের রাজধানী। শিলং যেতে সিলেট থেকে প্রথমে যাবেন তামাবিল বর্ডারে, যেতে ঘন্টা দেড়েক লাগবে গাড়ী ভাড়া করে যেতে পারেন। তামাবিলের রাস্তাটাই আপনার ভ্রমণের আনন্দ বাড়িয়ে দেয়ার জন্য যথেস্ট। এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখবেন দূরে অনেক উচু সব পাহাড়।
এই পাহাড়ের উপরেই আপনাকে যেতে হবে, কারণ এখানেই শিলং। তামাবিল হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজ বর্ডার। এখান থেকে ২ কদম হাটলেই ইন্ডিয়ার বর্ডার, একদম সামনাসামনি। ইমিগ্রেশন শেষ করেই সামনে মারুতি পাবেন, শিলং এর কথা বলে উঠে পড়ুন।
এর পর আড়াই-তিন ঘন্টার পাহাড়ের পথে যাত্রা।
অনেক উচুতে উঠবেন, কিন্তু কোনধরনের পাহাড়ে উঠানামার কষ্ট পাবেন না। রাস্তা বেশ ভালো এবং মাঝেমধ্যে পাহাড়ে সমতলভুমির পরশ পাবেন। (লোকজন রেগুলার মারুতির মতো গাড়ী নিয়ে যাওয়া আসা করতেছে, সো বুঝতেছেন রাস্তা কত ভালো) এটুকু বলতে পারি পুরা জার্নিটাতে চারপাশ আপনাকে মুগ্ধ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। প্রথমে বেশ কিছুক্ষন বাংলাদেশ দেখা যায়, পরে পাহাড়ি পথে ঝর্না আর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে পৌছে যাবেন শিলং। ভ্রমনের কোন ধরনের ক্লান্তি টেরও পাবেননা।
শিলং অসম্ভব সাজানো গোছানো সুন্দর একটা ছোট শহর। শহরের বাইরে থেকেই দেখবেন সুন্দর সব একতলা, দোতলা বাড়ী। রাস্তা ঘাট বেশ ভালো, ঘুরে বেড়াতে মজা পাবেন। তবে টেক্সি ক্যাব ছাড়া আর কিছু নেই। শহরের অর্ধেক জুড়েই আবার ক্যান্টনমেন্ট।
শিলংএ খ্রীস্টান সম্প্রদায় বেশী, সে কারনে চার্চ ও অনেক। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো, প্রায় সব বাড়ীর সামনেই গোলাপগাছের ঝাড়। নানা রংয়ের গোলাপ ফুটে আছে। শহরে অনেক ভালো খারাপ হোটেল, থাকা খাওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা। থাকা খাওয়ার খরচও টুরিস্ট সিটি হিসেবে কম।
শহরের অধিকাংশ দোকান চালায় বাংগালীরা, সো কথাবার্তা নিয়েও টেনশন নাই। তবে শপিং করাটা বোধহয় খুব একটা সুবিধার হবেনা। দাম একটু বেশীই। তবে ওখানেও বংগবাজার টাইপের মার্কেট আছে।
ঘুরে বেড়াতে চাইলে শহরের বাইরে অসংখ্য ঝর্না, পাহাড়।
শিলং এ গিয়ে একদিন আশেপাশের পার্ক, ফলস্ এইসব দেখতে পারেন, আরেকদিন যাবেন এলিফ্যান্ট ফল্স, শিলং পিক এইসব দেখতে। আছে উমিয়াম লেক নামের চমৎকার একটা লেক। এটা শিলং থেকে একটু বাইরে, এখানে অবশ্যই যাবেন। আপনি একটা ক্যাব একেবারে প্রত্যেকদিনের হিসেবে ঠিক করতে পারেন। প্রচুর ক্যাব ওখানে।
আর চলে যেতে পারেন চেরাপুন্জি। একদিন পুরা হাতে রাখবেন চেরাপুন্জির জন্য। মেঘের জন্য চারপাশে কিছু দেখবেন না। এরমধ্যেও যা দেখবেন পাহাড়ের উপর থেকে মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য যাথেষ্ট। পায়ের নিচ দিয়ে দেখবেন মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে।
দূর থেকে দেখলে কুয়াশা মনে হতে পারে, আসলে সব মেঘ। মাঝেমধ্যে এমন হয় কিছু দেখা যায়না, হঠাৎ করে সব ফুঁড়ে উঠে। এই অবস্হা অবশ্য শিলংয়েও হতে পারে। এই কারণেই এই রাজ্যের নাম মেঘালয়। মেঘের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কখনে হাত দিয়ে ধরা যায়না
হাতে সময় বেশি থাকলে পাশের দুই রাজ্যে ইম্ফল, গোয়াহাটি ঘুরে আসতে পারেন।
আরাম করে ৩/৪ দিনে ঘুরে চলে আসতে চাইলে এখনি শিলং যাওয়ার জন্য ব্যাগ গোছাতে পারেন। এটাই সবচেয়ে ভালো সময়। তবে শিলং এর আবহাওয়ার কোন আগামাথা নেই। এই ঝুমঝুম বৃষ্টি, এই রোদ আবার এই ঠান্ডা। সব অনুভূতি একদিনে পেয়ে যাবেন।
(কিছু ছবি দিলাম। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।