বর্তমানে স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্তীরা বিশাল ব্যাকপ্যাক নিয়ে ক্লাস থেকে ক্লাসে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীরা যখন শিক্ষকের সাথে বইয়ের পাতা উল্টায় ক্লাস গমগম করে উঠে। এইসবের দিন বোধহয় ফুরাল। এখন আসছে ই-পাঠ্যপুস্তক। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস (অস্টিন) এ আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষামুলক ভাবে চালু হয়েছে ই-পাঠ্যপুস্তক।
আমাজনের যন্ত্র কিন্ডল দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যপুস্তক পরছে। মিসৌরির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সনি (Sony Corp.) তাদের পাঠ্য যন্ত্র ই-পাঠক (e-reader) পরীক্ষামুলক ভাবে চালু করেছে। পাঠ্যপুস্তক প্রতিষ্ঠানগুলো দিন দিন আরো নতুন নতুন পাঠ্যপুস্তক এই পাঠ যন্ত্রের মাধ্যমে পড়ার জন্য সহজলভ্য করছে। শিক্ষার্থীরা ইচ্ছে করলে অনলাইন থেকে পাঠ্যপুস্তক ডাউনলোড করে সাথে সাথে পরতে পারছে।
ই-পাঠ যন্ত্র যদিও এখনো মূলধারায় প্রবেশ করিনি, তবে খুব শিঘ্রী তা পাঠ্যপুস্তক ব্যবহারে আমূল পরিবর্তন আনবে।
সেই দিন আর দূরে নয় যখন শিক্ষার্থীদের ব্যগে থাকবে ই-পাঠ যন্ত্র এবং তাতে থাকবে এক থেকে দু হাজার পাঠ্যবই।
পাঠ্যপুস্তক প্রতিষ্ঠানগুলো এই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেস্টা করছে। প্রযুক্তির এই বৈপ্লবিক বিবর্তনের সাথে নিজেদেরকে পরিবর্তন করার চেস্টা করছে।
এখন দেখা যাক ই-পাঠক বা কিন্ডল কি?
ই-পাঠক বা কিন্ডল হলো ল্যপটপের মতোই একটি যন্ত্র। ই-পাঠক অথবা কিন্ডলের পড়ার স্ক্রিন ল্যপটপের স্ক্রিনের (লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে) মতো দেখতে হলেও এটি LCD স্ক্রিন থেকে আলাদা।
আমরা যখন বই পড়ি, তার পাতা থেকে কোন আলো বাহির হয় না। ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে আলো বাহির হয়। এই জন্য ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে বই পড়া অনেক কঠিন। অল্পসময়ের মাঝে পাঠক ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং মনোযোগ হারিয়ে ফেলে।
ই-পাঠক কিংবা কিন্ডলের স্ক্রিনটি তৈরী হলো ই-কালী নামে এক টেকনলজী দিয়ে।
ই-কালীর স্ক্রীন থেকে কোন আলো বের হয় না। এর স্ক্রিনের লেখা একবার লেখা হলে আর পরিবর্তন হয় না, যদি না আপনি পরের পৃষ্ঠায় যান। অর্থাৎ একবার এর স্ক্রিনে লেখা হলে, তা ধরে রাখার জন্য আর কোন শক্তির প্রয়োজন হয় না। এই জন্য একবার ব্যাটারী চার্জ দেয়া হলে তা থাকে দিনের পর দিন।
ই-পাঠক বা কিন্ডল প্রায় তিন বছর আগে প্রথম বাজারে আসে।
এখন পর্যন্ত শুধু উপন্যাস এবং গল্পের বইয়ের ই-কপি পাওয়া যেত, যা এই ই-পাঠক বা কিন্ডল দিয়ে পড়া যায়। এখন চেস্টা করা হচ্চে পাঠ্য পুস্তককে এই ই-পাঠক বা কিন্ডলের পাঠ যোগ্য করার।
এখানে একটা তথ্য দিয়ে রাখা ভালো যে, এখন পর্যন্ত ই-পাঠক বা কিন্ডল কিন্তু সাধা-কালো। বিজ্ঞানীরা চেস্টা করেছে রঙ্গীন ই-কালী তৈরী করতে। সম্প্রতি এই ক্ষেত্রে কিছু সফলতা দেখা গিয়েছে।
সেই দিন আর দূরে নয় যখন কিন্ডল বা ই-পাঠক হবে সম্পূর্ন রঙ্গীন।
সুতরাং সেই দিন আর দূরে নয়, যখন শিক্ষার্থীকে আর ভারী ভারী বই বহন করতে হবে না। একটি ই-পাঠক বা কিন্ডলে থাকবে হাজার হাজার বই। যখন কোন কিছু জানার দরকার পড়বে মহুর্তে তা দেখে নেয়া যাবে। সারাবিশ্ব চলে আসবে একটি যন্ত্রে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।