আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিনটি ওয়েষ্টার্ন মুভি



একটু ওয়েস্টার্ন জ্বরে আছি। কৈশোরে সেবা প্রকাশনীর ওয়েস্টার্ন পড়েছি এক বসায়, কল্পনায় ঘুরে বেরিয়েছি নায়কের সাথে যে কিনা কোমরে গান ঝুলায়, আর গুলি করে হাতে ধরা পয়সা ফুটো করে দিতে পারে। এই ভালোবাসা এখনো শেষ হয়নি, বই থেকে মুভিতে টার্ন করেছে। সবসময়ই ওয়েস্টার্ন দেখার চেষ্টা করি, গত কয়েকদিন ও টানা তিনটা মুভি দেখলাম। Dead Man (১৯৯৫) জিম জারমুশের পরিচালনায় এই মুভিতে জনি ডেপ অভিনয় করেছে।

ওয়েস্টার্ন মুভিগুলোর তুলনায় একটু ভিন্ন রকমের, কেমন যেন পাগলাটে। সমালোচকরা একে পোস্ট ওয়েস্টার্ন মুভি বলে আখ্যায়িত করেছেন। উইলিয়াম ব্লেক নামের এক লোক স্যুটেড অবস্থায় একাউন্টেন্টের চাকরি নিয়ে আসে 'মেশিন টাউন' এ। কিন্তু একমাস আগেই চাকরি হয়ে গেছে আরেকজনের। রাতে এক মেয়ের সাথে শোয়ায় তার পাগলাটে প্রেমিক গুলি করে, কিন্তু মারা যায় মেয়েটি আর ব্লেকের গুলিতে সেই প্রেমিক।

বুকে গুলি নিয়ে প্রেমিকের ঘোড়াটি চুরি করে পালায় সে। ঘটনাক্রমে এই প্রেমিক তার চাকরিদাতার ছেলে। সুতরাং সে তিনজন বিখ্যাত খুনিকে ভাড়া করে যাদের একজন প্রচুর কথা বলে, একজন কম বয়সী কিন্তু ১৪টা খুন করেছে এবং অন্যজন কোন কথা বলে না এবং সে নাকি তার বাবা-মাকে খুন করে কাবাব বানিয়ে খেয়েছিল। এছাড়াও পুরস্কার ঘোষনা করায়, খুনির সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। সুতরাং ব্লেককে আরও খুন করতে হয়।

এদিকে এক ইন্ডিয়ানের সাথে দেখা হয় যে কিনা তাকে কবি উইলিয়াম ব্লেক বলে মনে করে! বেশ অদ্ভুত কাহিনী, তবে মজা লাগবে। মুভিটা সাদাকালো। আমার রেটিং ৬.৫/১০। Unforgiven (১৯৯২) ডার্ক ওয়েস্টার্ন মুভি দেখার জন্য আনফরগিভেন দেখা যেতে পারে। এ মুভিটাও গতানুগতিক ওয়েস্টার্ন নয়।

ক্লিন্ট ইস্টউডের পরিচালনায় এ মুভিটি ৯২ সালে সেরা মুভি, পরিচালক সহ চারটি অস্কার পায়, অবশ্য ইস্টউড 'সেন্ট অব উওমেন' মুভিতে অভিনয় করা আল পাচিনোর কাছে হেরে যায়। এইটা এমন এক সময় যখন বন্দুকবাজী শেষ পর্যায়ে, কুখ্যাত বন্দুকবাজরা অবসর নিয়েছে, কোমড়ে বন্দুক ঝোলানো নিষিদ্ধ হয়েছে অনেক জায়গায়। এমন এক সময় এক 'হোর' এর শরীরে ছুড়ি দিয়ে কাটাকুটি করার জন্য ১০০০ ডলার পুরস্কার ঘোষনা করে তারাই সম্মিলিতভাবে। দরিদ্র 'উইল মানি' (ইস্টউড) তার ছোট ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভালোভাবে বাচার জন্য স্কলফিল্ড কিড এর আমন্ত্রনে প্রায় ১১ বছর পরে অস্ত্র তুলে নেয়, সাথে তার পুরানো বন্ধু নেড (মরগ্যান ফ্রিম্যান)। এদিকে পুরানো বন্দুকবাজ ইংলিশ বব তার বায়োগ্রাফার কে নিয়ে শহরে আসে এবং মার্শাল লিটল বিল তাকে ব্যাপক পেদানি দেয়।

দুজনেই তাদের পূর্ব ঘটনা অনেক বাড়িয়ে বলে কিন্তু শেষ পর্যন্তু বায়োগ্রাফার একজন সত্যিকারের বন্দুকবাজের দেখা পায়, সে হল উইল মানি। অন্ধকার দৃশ্যাবলী সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তবে মুভিটা এনজয়েবল। ৮/১০। 3.10 to Yuma (২০০৭) আমার দেখা সেরা ওয়েস্টার্ন মুভি। অনেক আগে একই নামে একটি মুভি হয়েছিল, এটা রিমেক।

ক্রিস্চিয়ান বেল আর রাসেল ক্রো অভিনিত। ক্রো কুখ্যাত লোক, তাকে ধরতে পারলে ফাসি নিশ্চিত। আর বেল একজন রেঞ্চার, যার টাকার অভাব যাচ্ছে। শুরুতেই দল নিয়ে ক্রো একটি স্টজেকোচ ডাকাতি করে, এবং পরে বেল তাকে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করে। এই ক্রো কেই ৩.১০ এর ট্রেনে তুলে দেয়ার দায়িত্ব নেয় বেল এবং আরও তিনজন।

কিন্তু পেছনে আছে অত্যন্ত প্রভুভক্ত চার্লি প্রিন্স যে যেকোন মূল্যে তার বস ক্রো কে উদ্ধার করবে। সিনেমার গ্রামার মেনেই ক্রো র পোশাক এবং ঘোড়া কালো, তাই না! টান টান উত্তেজনার মুভি। কিন্তু মজা হল ক্রো কিংবা বেল কে ছাপিয়ে উঠেছে চার্লি প্রিন্সের অভিনয়। অথচ অভিনেতা হিসেবে তার তালিকাটা খুব বড় নয়। আমার রেটিং ৯.৫/১০।

মাস্ট সি! এই হলো চার্লি, তার 'বস' ডাকটা এখনো কানে বাজছে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.