আমার জীবনের সকল অস্তিত্ব হঠাৎ জ্বলে উঠা আলোর ঝলকানিতে উদ্ভাসিত করেছিল দিক দিগন্ত। কিন্তু পথিকের পথচলা সহজতর হওয়ার পরিবর্তে আলোর ঝলকানি ধাধিয়ে দিয়ে গেল দৃষ্টিশক্তি। ফলে এখন আমার পথ চলার গতি রুদ্ধ। আমার হারিয়ে যাওয়া আলোর ঝলকানি, অর্জিত সাফল্য, প্রচেষ্টা অাবার ফিরে আসবে কি আসবে না সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হল, অসুন্দর তৃষ্ণার অগ্নীতে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে ভালবাসা ব্যতিরেকে জীবন কী অসম্ভব? কিন্তু এ কথা তো সত্যি যে, মানুষের জীবনে এমন কিছু সময় আসে যখন এমন অসহায়ত্ব নিয়েই অতিক্রম করতে হয় দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, কিংবা বছরের পর বছর।
আমার এই ছোট্ট জীবনে যতটুকু বাস্তবতার সাথে পরিচিত হতে পেরেছি জানিনা। তবে সেই বাস্তব যত কঠিনই হোক সেটাকে মেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নেই। মহাসমুদ্রে একফোটা অশ্র যেমন কিছুই না তেমন আমার জীবনের এই কথাগুলোও হয়তো ব্যস্ত সামাজিক জীবনের কাছে খড়কুটোর মতোই। তবুও চলমান জীবনে হাজারো বিড়ম্বনাকে উপেক্ষা করে বেঁচে থাকার প্রেরণা পাওয়া যায় কিছু কিছু মানুষের ভালবাসায়। তখন আবার আমার মনের জানালা দিয়ে হিমেল হাওয়া বয়ে যায়।
মৃদু ভেসে আসে বেঁচে থাকার আহবান। মাথার উপর উত্তপ্ত সূর্যের রশ্মিগুলোকে একগুচ্ছো মেঘ এসে ছায়ায় আবিষ্ট করে। মধ্যাহ্নের তপ্ত বালুচরেও এগিয়ে যায় সামনের দিকে, আশা প্রত্যাশার অতল সাগরের খোঁজে। সুখের অনুভূতিগুলো আবার সিঞ্চিত হয়। তবে কোন প্রিয়জনের মৃত্যু হলে বা হারিয়ে গেলে কিংবা অনিচ্ছা সত্বেও তাদের মাঝে কোন ব্যবধান সৃষ্টি হলে উভয়ের সম্পর্ক দিনদিন নষ্ট হয়েই যায়।
মৃত্যুতে দুঃখ বেশি থাকলেও তা স্থায়ী কম হয়। মনটাকে এই বুঝ দেয়া যায়, তাকে আর পাওয়া সম্ভব নয়। নিজেকেও তো একদিন এ পথেই যেতে হবে! হারিয়ে গেলে পাওয়ার আশা থাকে। এ আশায় দীর্ঘদিন খুজাখুজি করার পর ধরে নেওয়া হয় যে, হয়তো সে আর বেঁচে নেই। কিন্তু তাকে অন্য কোথাও যদি বিয়ে দেওয়া হয় তাহলে মনে হাজারো রকমের চিন্তা ভাবনা শুরু হয়।
এই চিন্তার চাপ সহ্য করতে না পেরে বিভিন্ন জন বিভিন্ন পথ বেঁছে নেয়। যার পরবর্তী জীবনটা হয় উন্নত থেকে আরও উন্নত অথবা জীবনে আসে ধ্বংস। কেউ হয়তো প্রিয়ার শোকে বিষপান করে, গাড়ী চাপা পড়ে, গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে আর কেউবা জীবনটাকে তিলে তিলে ধ্বংস করে যেমন, মদ, গাঁজা, হেরোইন খেয়ে বা প্যাথেডিন ইনজেকশন ব্যবহার করে থাকে। আবার কেউবা রাগে দুঃখে নিজেকে বড় করে তার কাছে গিয়ে দেখানোর স্বপ্নও দেখে। আবার কিছু মধ্যপন্থী লোক আছে যারা জীবনটাকে জনকল্যাণমূলক কাজে উৎসর্গ করে।
কেউ-বা কবিতা লেখে, কেউ-বা সাধু সাজে, কেউ-বা বসে বসে আত্মজীবন রচনা করে। অনেককে আবার পাগল হয়ে যেতেও দেখা যায়। জীবনে সবচেয়ে ভালভাবে যে বিষয়টা উপলব্ধি করতে পারছি তা হলো মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা। এই ভালবাসার জন্যই সকল রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্মনীতি, সমাজনীতি। কেউ দেশকে ভালবেসে জীবন দেয়,কেউ-বা নিজেকে বেশি ভালবেসে আপন সন্তানও বিক্রি করে দেয়।
আবার কেউ-বা খোদাকে ভালবেসে জীবনবোধন অবহেলা করে তার দিকেই মত্ত থাকে। প্রেম নিয়েও লীলাখেলা। একই মেয়েকে কয়েকজন ভালবেসে তাদের মাঝে সংঘাতের সৃষ্টি হয়। স্বয়ং খোদাই মানুষের ভালবাসা পাবার জন্য অর্থাৎ তাদেরকে দিয়ে এবাদত বন্দেগী করানোর জন্য আদমকে তৈরি করলেন আর তার অনেক আগেই নাকি রছুল (স) কে সৃষ্টি করেছিরেন। যাকে সৃষ্টি না করলে নাকি এই আসমান, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র কিছুই সৃষ্টি করতেন না।
আর রছুল (স) মানুষকে ভালবাসতেন। তাইতো সে অনেক অত্যাচার সহ্য করেও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট ছিলেন।
বর্তমানে আমরা দেশকে ভালবাসি, সমাজকে ভালবাসি, আর ভালবাসি এ বিশ্বকে। অর্থাৎ যে ভালবাসা ছাড়া পৃথিবীর কোন কিছুই ঘটছে না। সেই কথাটিকে আমরা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কত অন্যায়, অত্যাচার, ব্যাভিচার এ লিপ্ত তার হিসেব দেয়া অসম্ভব।
এই ভালবাসি কথাটি দিয়ে এত অশ্লিল, অনাচার, দুর্নীতি করা যায় কারণ এর প্রতি আমরা সবাই দুর্বল। কেননা 'ভালবাসা' সবাই ভালবাসে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।