সময় হয়েছে আজ আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠার; দৃপ্ত শপথ করে সম্মুখে পা ফেলে ছুটে চলার চিরন্তন সত্য ও সুন্দরের পথে......
ব্লগে যারা ব্লগিং করে তাদেরকে বলা হয় ব্লগার। প্রথমেই বলে রাখি, আমি আসলে ব্লগার নই; ব্লগ পাঠক! সামুতে রেজিষ্ট্রেশন করার ৭ মাস পূর্ব থেকেই পাঠক। একদিন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পোস্ট দেখে রেজিষ্ট্রেশন করলাম। প্রথম অবস্থায় ব্লগকে আমি অত্যন্ত ভালোবাসতাম; একথা অনেক আগেই জানে শুধু একজন ব্লগার। তিনি হলেন শ্রদ্ধেয় বিবর্তনবাদী।
যার উৎসাহে আমি এই ব্লগে লেখা শুরু করেছিলাম।
গত এক মাস যাবত লক্ষ্য করছি ব্লগে অশ্লীলতাকে কিছু ব্লগার শিল্পে পরিণত করেছে। ছেলে আর মেয়ে নেই সবাই এমনভাবে গালির আবৃত্তি করতে পারে যা শুনে শিমুল মুস্তাফাও হার মানতে বাধ্য হবে।
ব্লগে অনেক বিষয়েই দ্বি-মত থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই স্বাভাবিকতা এক পর্যায়ে আর স্বাভাবিকতা থাকে না।
এই দ্বি-মত পরিণত হয় ব্যক্তিগত আক্রোশে। আর এর থেকেই সৃষ্টি হয় গালাগালির। তারা কেবল গালাগালি-ই করতে জানে; তা গলাগলিতে পরিণত করতে পারে না। অধিকাংশ ব্লগারই তার মূল নিক ছাড়া অন্য নিকে এইসব গালাগালি করে। আর গালিবাজরা এইসব গালাগালিকে বাহবা দেয়।
একেক ব্লগার তার পোস্টে একেক ধরণের ভাব ফুটিয়ে তুলে। কেউ তা সমর্থন করে যদি তার মতের সাথে মিলে যায়। অন্যথায় সে পোস্ট আবাল পোস্টে পরিণত হয়। যা আমরা সবাই কমবেশী লক্ষ্য করেছি।
ব্লগে যে বিষয়টির সবচাইতে কদর বেশী তা হলো- দালালি, পদলেহন ও লেজুড়বৃত্তি'র।
যারা এগুলোকে কার্যে পরিণত করতে পারে তারাই হিট ব্লগারে পরিণত হয় অনেকের কাছে। লেজুড়বৃত্তি'র ফলে অনেক ভালো লেখায়ও মাইনাস দেয়া হয়, এমনকি এর বিপরীতে পুরোপুরি উল্টোটা দেখা যায়।
অনেক ব্লগার আছে যারা পোস্টে ঢুকে প্রথমেই দেখে তার মতো স্বভাব-চরিত্রের ব্লগার’রা কি রকম মন্তব্য করেছে। তা দেখেই তারা মাইনাস-প্লাস দেয়া ও মন্তব্য করা শুরু করে । যদি এই পোস্টটি তাদের মতের সাথে মিলে যায় তবে সেই ব্লগারকে দেয়া হয় বিশেষণের পর বিশেষণ।
অনেক ব্লগার অন্য ব্লগারকে কটাক্ষ করে পোস্ট দেয় ও এমনভাবে মন্তব্য করে যাতে সেই ব্লগার গালি দেয়। আর গালি দিলেই তো তারা ব্যান করার রব তুলতে পারবে। আর তাদের লেজুড়ব্লগাররা এই কটাক্ষমূলক পোস্ট ও মন্তব্যগুলোকে পরটা-অমলেট ও সর্ষে-ইলিশের সাথে তুলনা করে। কিন্তু তারা একথা ভাবে না যে নিজের ওপর পড়লে কেমন লাগে। এটাই হলো এক ধরণের বিবেকবান (?) ব্লগারদের চরিত্র।
তারা সবকিছুই একচোখ দিয়ে দ্যাখে। তাদেরকে বলি-
"একচোখে সব ভালো আর
একচোখে সব কালো,
একচোখ বুজে থেকোনা ব্লগার
দু'চোখে প্রদীপ জ্বালো। "
"কলম হাতে লিখছে কতো কিছু কতো ব্লগারের গুরু
চোখ বুলিয়েই লেজুড়রা মারহাবা করে শুরু। "
এইভাবে লেজুড়বৃত্তি করাই অনেক ব্লগারের স্বভাব। তারা নিজের দিকে তাকায় না।
নিজের হাতও লক্ষ্য করে না যে এই হাতে কি লিখছে। এই হাতে কি আছে ও হচ্ছে-
"কনিষ্ঠায় একটি তিল,
অনামিকা অলংকারহীন
মধ্যমায় ঈষৎ টনটনে ব্যাথা।
তর্জনী সংকেতময়,
বৃদ্ধাঙ্গুলি বীভৎস বিকৃত। "
তারা তাদের এইসব অগোচরেই রেখে দেয়। এভাবেই তারা অন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হায়েনার মতো।
কি জানি, আমি পূর্বে বলেছিলাম কি না; আমার হাত শিকলে বাধা থাকবে না .. .. .. ..
পনুশ্চঃ এই লেখাটা কেবলই আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা। এই ব্লগের প্রায় সবাই আমার সিনিয়র। আমি সদ্য বিশ পেরুনো এক তরুণ। আমার এই লেখাটা যদি সিনিয়রদের মনে আঘাত লাগে তাহলে আমি দুঃখিত। আগামীকাল প্রায় দু মাসের জন্য বাড়ি যাচ্ছি।
হতেও পারে এটাই আমার শেষ লেখা। সকল ব্লগারদের জীবনে পৃথিবীর সমস্ত কালো, আলো হয়ে জ্বলে উঠুক। আর আমার পক্ষ থেকে রইল সকলের জন্য অকৃত্রিম ভালোবাসা ও চিরন্তন মঙ্গল কামনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।