সুন্দর সমর
রবীন্দ্রনাথকে একটা বিশাল বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে নামতে দেখলাম।
গাড়িতে অতি সুন্দরী তরুণী একজন বসে ছিলেন কবির পাশে। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পা নাকি? একবার ভাবলাম। ফলের মতো তার বুক আকড়ে ধরেছিলেন রবীন্দ্রনাথ সে কথা
ওকাম্পা লিখেছিলেন। মনে এলো।
তড়িঘড়ি এগিয়ে গেলাম। কাছে থেকে ভিক্টোরিয়ায়া ওকাম্পার যদি দেখা মেলে। কিন্তু গাড়ি চলে গেল।
একটা ফতুয়া পড়েছেন কবি।
তাতে লেখা আই লাভ পিউর ওয়াটার ।
হায় বাংলাদেশে এখন পিউর ওয়াটার কোথায় পাওয়া যায় যদি জানতাম! ডিজিটালের সোনার বাংলাদেশ! এমন ভাবতে ভাবতে হাক দিলাম।
-কবিরাজ মানে রাজকবি মানে কবিদের রাজা এ দিকে তাকান একটু কথা আছে।
সেল ফোনে কারও সাথে কথা বলছিলেন।
আমার ডাক শুনতে পেয়েছেন।
হাসি মুখে হাত ইশারায় চুপ থাকতে বললেন কবি আমাকে।
-ওকে ওকে দ্যাটস নো প্রোবেলম। রিং ব্যাক করো। সেল ফোনের এ নম্বরটাই সেফ করে রাখো। সিম কার্ড আপাতত চেঞ্জ করব না। আর যদি করি হানি তোমাকে আগেই জানাব।
বুঝতে পারলাম কোনো তরুণীর সাথেই কথা হচ্ছিলো কবির।
-এনি প্রোবলেম?
-জ্বি। আমার ভাগনে ক্লাস ফাইভে পড়ে। আপনার একটা কবিতা ওদের পাঠ্য। ওটার একটা সারমর্ম যদি লিখে দেন।
আমি একটা লিখেছিলাম কিন্তু ক্লাস টিচারের পছন্দ হয় নি।
-তোমার লেখার কোনো কপি আছে?
-জ্বি। আমি শার্টের না না প্যান্টের পকেট থেকে প্রিন্ট আউট টা বের করে দিলাম।
কবি এক নজর দেখে বললেন, ফ্যান্টাস্টিক হয়েছে। সহজ ভাষায় এতো কথা বুঝিয়েছো।
একসিলেন্ট। ...
কবিকে আর বলতে দিলাম না।
-সমস্য ওখানেই। ভাষা সহজ হয়ে গেছে। আসলে নাকি গুরু গম্ভীর মেঘের ঘন ডাক বা সিংহের গগন বিদারী নিনাদের মতো কঠোর ভাষায় হতে সব সারমর্ম।
এটা নাকি ক্লাস টু
উপযোগী হতে পারে সহজ কথা গুলো বদলে খানিকটা ঘষেমেজে নিলে।
-ইজ ইট?
-জ্বি, হে কবিদের রাজা। আপনি তো জানেন না। আপনার শেষের কবিতা ক্লাস থ্রিতে পাঠ্য করার কথা ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া...
-হোয়াট এ্যা ননসেন্স।
ক্লাস ফাইভে কি পড়ান হয়?
-এ কথার একটা জবাব হবে না। তবে মোটামুটি মার্টাভ সের পাঠ্যসূচি ফলো করে সবাই..
কবি আমাকে থামিয়ে দিলেন। আর কথা বাড়াতে দিলেন না।
-না এটা এক ধরণের জেনোসাইড। শিশুর উপর পড়ার বোঝা চাপানো মানে শিশুকালকে কিল করা।
আমি এর সাথে থাকব না। আমার সকল রচনা পুড়িয়ে দিবো।
তারপর আমাকে হতবাক করে দিয়ে ক্ষিপ্ত রবি বজ্র কন্ঠে শ্লোগান ধরলেন
রবীন্দ্র নাথের সকল লেখা পুড়িয়ে দাও পোড়াতে হবে। তবু তা পাঠ্য করা যাবে না
যাবে না।
শ্লোগান দিতে দিতে রবীন্দ্রনাথ গুলশানের দুই নম্বর মোড় ধরে ছুটতে লাগলেন।
কেউ তার শ্লোগানে পাত্তাই দিলো না।
কেউ কেউ বলল, দ্যাশে আইছে নতুন পাগল!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।