ছায়ায় হারাই
Share
Wednesday, April 15, 2009 at 12:11pm
বাঁচাও কে আছো মোরে- কবিতা কি করে কবিতা হয়ে ওঠে? বলে দিন-
Share
Today at 11:55am
বিনয় মজুমদারের কবিতার একটি লাইন পড়ে দেখলাম-রসাত্মক বাক্য মাত্র কবিতা। আর কাজল চাচা বলেন, কবিতা লেখা হয় বুদ্ধি আর আবেগের সমন্বয়ে। কবিতায় থাকে চিত্রকল্প, প্রতীক, রহস্যময়তা, শব্দের ঐন্দ্রজালিকতা এবং ব্যক্তিগত উপলদ্ধির সূচিস্নিগ্ধ প্রকাশ যা ইঙ্গিময়তার মধ্য দিয়ে কবিতার পরতে পরতে গেথে থাকে। আরো কিসব বলেন কাজল চাচা, বেশ খটোমটো। আমার মোটা মাথায় বোঝা মুশকিল।
তামান্না বলল, কবিতা তোকে বুঝতেই হবে। কবিতার ভেতরে অনেক গোলক ধাঁধাঁ থাকে। এগুলো আবিষ্কার করতে পারলে কবির সমান্তরালে পৌছেঁ যান পাঠক এবং তখনই কবিতার সততা প্রতিষ্ঠিত হয়।
একে ঢাকের বাড়ি, তাতে নাচুনে বুড়ি! তামান্নার কথাগুলো আরো কঠিন লাগল। ও বলল, ঠিক আছে, তোকে এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে না।
তোকে ছয়টি কবিতা দিলাম। এগুলো পড়ে দেখ। কিছু বুঝতে পারিস কিনা।
পড়ে দেখলাম। ভালই লাগল।
বেশ রস রস ভাব পেলাম। কিন্তু কোন রস সেটা বুঝতে পারলাম না। সে রসের কি রসায়ন তা বোধের বাইরে থেকে গেল। তামান্নাকে বললাম, একটু বুঝিয়ে বল।
তামান্না সাফ সাফ বলে দিল, আমি এখন তোকে ব্যাখ্যা করবে না।
তোকে চেষ্টা করে ব্যাখ্যা উদ্ধার করতে হবে। কি করে এগুলো কবিতা হয়ে উঠেছে, এগুলো আদৌ কবিতা হয়ে উঠেছে কিনা - এ বিষয়গুলো তোকেই নির্ণয় করতে হবে। মহা ঝামেলায় পড়লাম। কেন যে একটি কবিতা লিখতে গেলাম আমি!
এখন কি করতে পারি আমি? কবিতা ছয়টি ফেসবুকে আমার নোটে তুলে দিলাম। প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা আমাকে একটু হেল্প করেন।
আপনারা কবিতাগুলো গভীরভাবে পাঠ করে আপনাদের উপলদ্ধির মর্মার্থ কমেন্ট আকারে আমার জানাবেন?
আর এই ছয়জন কবিওতো ফেসবুকে সচল আছেন। পাঠকদের পাশাপাশি আপনারাও আপনাদের নিজের এই কবিতা বিষয়ে বলুন, বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। তারপর আমি আমার ভাবনার সঙ্গে সব ভাবনাকে মেলাব। বুঝতে পারব, কবিতা কি করে কবিতা হয়ে ওঠে?
কবি ছয়জন- মাসুদ খান, কাজল শাহনেওয়াজ, তুষার গায়েন, পলাশ দত্ত, তারিক টুকু ও জাহানার পারভীন।
মাসুদ খানের কবিতা
সোনার খনির খুব কাছে
সোনার খনির খুব কাছে গিয়ে বসে থাকে রোজ
স্বর্ণজরে ভোগা রোগামতো একটি মানুষ।
পাশেই জলধি এক, অথই অপার।
শামুকে শ্যাওলায় মাখামাখি
আশ্চর্য সোনালী এক শৈবালিনী জেগে ওঠে যদি,
আকার ও অলংকারসহ,
কোনো এক মৎসগন্ধা সন্ধ্যাবেলায়-
সেই লোভে লোকটা এসে বসে থাকে মোহ-লাগা সারাটা দিবস...
বেসামরিক দর্জিঘর
কাজল শাহনেওয়াজ
বেসামরিক দর্জিঘরের সামনে দাঁড়ায়ে বলি
খলিফা সাহেব কই, খোলেন ভাই দর্জাটা তাড়াতাড়ি
কাশেমের টুকরাগুলি কুড়ায়ে কুড়ায়ে আনছি
কাশেমকে জোড়া দিয়া দেন
ওহাব খলিফার গুহা জংগলের। গুহা হলেও একটা গাছের গুড়ির গুহা।
কাঠের গুহায় কাঠের মেঝে
তাতে কাঠের চেয়ার কাঠের চোকি
একটা কাঠের সেলাই মেশিন
আমরা ঢুকতেই সে কাঠের সালাম ঠুকল
আমরা বললাম ভাই সাহেব
মরা রোমিও জুলিয়েটকে সিলাই করে বাঁচান
আপনার হাতে কত কেরামতি!
যে রূপ আমি শুনলাম কানে
তুষার গায়েন
যে রূপ আমি শুনলাম কানে
মালিনী মাসির হাসি, নিলাজ গুঞ্জন তুলে আনে
আনন্দিত শিহরণ এই ভীত মনে- সরোবরে
ছায়া পড়ে আছে তার এ অমোচনীয় আঠার প্রলেপ
বায়ুযোগে ঢেউ ওঠে গোল হয়ে, সরে যায় দূর
গোলাকার তলে-তবু রূপ তার হাসিতে অনড়
বেড়ালের মতো এই অপরাহ্ণ বেলা!
নিবিড় নৈঃশব্দ চারিদিকে, ফুল ফোটাবার যত
আয়োজন গাঢ় প্ররোচনা করে যায় ঝিঝিঁদেঁর
দল, জোনাকিও জোটে এসে-জ্বলে নেভে ঈর্ষাতুর
দূর তারাদের দেখে। যে গেছে চন্দনবনে-
মাসি তার চোখ বেঁধে রাখো কেন?
সুরভি কি ঢেকে রাখা যায় বলো, আঁচলের তলে?
সখির কাঞ্চনরূপ কালির কলঙ্কে বুঝি মোছে!
হয়েছে হযেছে মাসি, তাকেঁ দূর থেকে ভালবাসি
দেখি নাই যাকে কোনদিন, তবু তার রূপের কীর্তন
তাঁর শুনেছি তো কানে!
পাখির পালক
পলাশ দত্ত
পাখির গায়ের পাতলা কাপড় দিয়ে
চশমা মুছতে চাইছিলাম
পাখি হাসতে হাসতে আমাকে ডাকে
বলে পালকের ভার
সইতে পারবে না
অন্ধ হয়ে যাবে
তোমার যতো চোখ
এই পাখায় উড়ে ঘুরে বেড়াবে
তুমি মাটির কিছুই
দেখতে পাবে না
পাখির কথা বিশ্বাস হয়নি
গায়ের পাতলা পালকে
চোখ মুছছিলাম
সেই থেকে অন্ধ
আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছি
মহাশূন্যে একাকিত্ব
পৃথিবীর মানুষ কাছে ডাকে না
ড্রাগন-ডানার দিকে
তারিক টুকু
জানালা খুলেই দেখি সমুদ্রে উত্থিত হলো ভোর
তরঙ্গনৃত্যের এক অস্থির প্রত্যাবর্তনে, একে একে
খুলে যায় দোর বিস্মৃতির
রুদ্ধশ্বাসে খোলে শামুক-প্রাণের কথা, চন্দ্রগিরি, নৈশজ্যামিতির!
যদিও এসব থেকে বেরুতে চেয়েছি আমি চুপে
তোমাকে না-বলে-কয়ে, ড্রাগন-ডানার দিকে
অববাহিকার।
লঘু হেসে, নিজের সমস্ত গুপ্তস্মৃতি অবহেলা করে দেখি আজ
তস্কর, আমার জন্যে তুমি সেই পথে ফেলে গেছ শুধু তিরস্কার।
প্রত্যাবর্তনই শেষ কথা নয়
জাহানারা পারভীন
আরো যারা নেমেছিল পথে, গেছে ফিরে;
প্রত্যাবর্তনের অন্য অর্থ মেনে।
পুরাতন গুহায় ডেকে এনে বান্ধব রোদ, তারা ভেবেছে-
মন্দ নয় এই স্থির বর্তমান। ফিরে যাওয়াও এক প্রস্থান বটে;
কাঁধে পিঠে মধ্যাহ্নের সূর্য নিয়ে আমরা যারা হেঁটেছি, ছুটেছি,
সূর্যাস্তের দিকে; করতোয়া, ইরাবতী, মহানন্দায় করেছি স্নান, পিঠে করে
সেই জল পৌঁছে দিয়েছি খরাক্রান্ত পাখিপল্লীর গাছের কোটরে কোটরে;
আহত পাখির শুশ্রূষায় কেটেছে নির্ঘুম রাত, আত্মজার মুখ মনে করে
বিষণ্ন হতে গিয়েও ভেবেছি জনপদের সব ঘরেইতো থাকে জায়া, কন্যা,
জননীর পদচিহ্ন; তারা সবাই আজ বিপন্ন গাঙের বিরুদ্ধ স্রোতের সাঁতারু।
প্রচলিত জীবন কিছুটা হেলে উঠলে আমরা যারা নির্বিকার থাকি,
তাদের পথেই কাঁটা বিছিয়ে রাখেন আরবের সেই দুষ্ট বুড়ি।
অবশেষে এই মধ্যাহ্নে দেখি-
আর সবার মতো নিজের ছায়াও কেমন ছেড়ে যায় নিজেকে।
মূল নোটটি দেখতে ক্লিক করুন-
Click This Link
Written last Wednesday · Comment · LikeUnlike · Report Note
You like this.
Polash Datta
Polash Datta at 2:09pm April 15
নূরী আফরিন,
কবিতার বোঝাবুঝি তো আসলে পাঠকে-পাঠকে বদলে যায়। ধরুন পাখির তো আলাদা পোশাক প্রয়োজন হয় না কখনো। কোনো প্রাণীরই লাগে না, মানুষ ছাড়া। সভ্যতার নাম দিয়ে আমরা বেশ পোশাকের ভেতরে ঢুকে গেছি।
মানুষে-মানুষে কোনো সংযোগ নাই। তাই পাখির অনন্ত আকাশে চলেফেরা দেখে দু:খ লেগে এই কবিতাটা লেখা। মনে হচ্ছিলো পাখি হলে কি মুক্তি পেতাম বন্দি স্বার্থপর-একাকিত্ব থেকে? এই ভেবে ভেবে লিখতে লিখতে শেষে দেখি পাখিও আসলে একা। মানুষ তাকে দেখতেই ভালোবাসে শুধু, সঙ্গে রাখতে নয়। মুক্তি নাই মুক্তি নাই।
Polash Datta
Polash Datta at 2:10pm April 15
আর একটা কথা। উদ্ধৃত কবিরা যেহেতু ফেসবুকে সচল তারা অন্যের কবিতা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেও ভালো হয় বোধহয়।
Rakeeb Hassan
Rakeeb Hassan at 7:11pm April 15
শিল্প সাহিত্য কাহাকে বলে এবং কত প্রকার তাহা যদি নিরুপন করা যাইতো তাহা হইলে আর্ট কলেজ থেকে যাহারা পড়াশুনা শেষ করিয়া বাহির হয় সবাই শিল্পী আর সাহিত্যের সকল ছাত্রই কবি সাহিত্যিক হইয়া যাইত।
হুম ! কিছু না থাকিলে এই লইয়া গ্যাজানো যায়... বলা যায় অমুকে কবি না কিংবা তিনি কবি! তবে শেষ কথা কইলহম ’সময়ের ছাকনি’ নামক জিনিষ খানা। এই ছাকনিতে যাহা "নকল মাল" তাহা আ... Read Moreটকাইয়া যাইবে, চিন্তার কোন কারণ নাই।
শিল্প সাহিত্য করতে আইসা ফ্রেন্ডলিষ্টে নাম কাটাকাটি দরকার নাই। মিল্লা মিশ্যা নান্দনিকতার উঠানে পান বিড়ি কলকি সাজাইয়া আলোচনা করা যাইতে পারে।
Aditya Kabir
Aditya Kabir at 10:56pm April 15
i wouldn't know. jibanananda dus likhsilen - "kobita ki taha bolibar purbe bola bhalo, kobita onek prokar." seitai mone hoy thik. ekekta ekek karone kobita hoy.
Polash Datta
Polash Datta at 2:36am April 16
কোনটা কী কারণে হয় তার আভাষ-ইঙ্গিত দেয়া যায় না?
Aditya Kabir
Aditya Kabir at 3:13am April 16
je pore eita to mone hoy tar discretion-e thakar kotha. je lekhe sei shala to likhei khalash. baki dai pathoker.
bhul bolle khoma chai.
Jahir Ahmed
Jahir Ahmed at 4:24am April 16
suman rahman bole - nuree afrin naki choddo nick?
Papree Rahman
Papree Rahman at 7:02am April 16
Rakeeb Hassaner সংগে সহমত ।
Eka Adhare
Eka Adhare at 7:06am April 16
Kicu bolbar nei.
Abul Hasan
Abul Hasan at 10:17am April 16
Jahir Ahmed... Read More@ সুমন রহমান খুব পণ্ডিত এবং সাইজী ধরনের আলেম ব্যক্তি। যাহারা ভীন্ন মত প্রকাশ করেন তাহাদেরই তিনি ছদ্মনাম বলেন, মুখোশধারী বলেন বা নিক নাম বলে গালি দেনএবং সম্প্রতি তাহাদের বিরুদ্ধে কিরিচ নিয়ে নেমে পড়েছেন।
একটি প্রচার নোটও খুলেছেন। এবং সেখানে কাজ করার জন্য ভলান্টিয়ার খুঁজছেন। উনাদেরতো অনেক টাকা পয়সা। এ ব্যপারে উনাদের এনজিও টিও আছে। আছে কিসব কায়দাকানুন।
সবই করতে পারেন নিজেদের গা বাঁচাতে। প্রশ্ন হলো, যখন পূর্বা রহমান নামে একমন মুখোশধারী তাদের পক্ষে বলছেন, তখন কিন্তু তার নাম কাটা হয়না। কারণ কি? তিনি কি গোলাপ ফুলের ছবি ধারণ করে সুমন সাহেবদের গরল সুধা পরিবেশন করছেন সেজন্যে?
Jahir Ahmed
Jahir Ahmed at 1:04pm April 16
abul hasan, apnke hats off...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।