বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মন গলাতেই সরকারের এই নমনীয়তা। গত নভেম্বরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এখন তাদের অনাপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে মার্চের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে। এতে ইলিশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ কমে যেতে পারে, দামও বেড়ে যাবে।
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় আসার সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। উৎপাদন, সরবরাহ স্বল্পতার প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ বাজার সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য সরকার ইলিশ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও স্থলপথে চোরাচালান বন্ধ হয়নি, বেড়েছে। সাগরে হাতবদল বন্ধ করতে পারেনি বিজিবি ও কোস্টগার্ড।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
ইলিশ রপ্তানি বাবদ বছরে ৫০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হবে- এই যুক্তিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানি করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করেন, রাজনৈতিক কারণেই প্রধানত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে। যে পরিমাণ ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয় তার দ্বিগুণেরও বেশি যায় চোরাই পথে। আর বঙ্গোপসাগরে যে মাছ ধরা পড়ে জেলেরা তার সিংহভাগই ভারতীয়দের কাছে বিক্রি করে দেয়।
যে কারণে আড়তে ইলিশই আসে অনেক কম। চলতি অর্থবছরে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল সাড়ে ৮ হাজার টন। গত বছর ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৪০ হাজার টন। এবার কিছুটা কমলেও ৩ লাখ টনের কম ইলিশ উৎপাদন হবে না।
জাটকা নিধন, মওসুমি বায়ুর অভাবে বৃষ্টিপাত কম হওয়া, তাপমাত্রা বেশি থাকা, পাহাড়ি ঢল, বৃষ্টি ও সুস্বাদু পানির অভাবে নদ-নদীতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, জলবায়ুর পরিবর্তনে ইলিশের উৎপাদন যেমনি কমেছে, বাংলাদেশের নদীতে আসাও কমেছে। গত বছর সাড়ে আট হাজার টন ইলিশ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রায় অর্জিত হয় ৩৫২ কোটি টাকা। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতে ইলিশ রপ্তানি হয়। এরমধ্যে ভারতে রপ্তানি হয় ৩০০৫ টন, আয় হয় ১৩১ কোটি টাকা। এবারে চোরাই পথে পাচার ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
তারচেয়ে উদ্বেগজনক হলো বঙ্গোপসাগরে জেলেরা মাছ ধরার পর লাভজনক দামে ভারতীয়দের কাছে অবাধে বিক্রি করে দেয়। এ ব্যাপারে কয়েকটি শক্তিশালী চক্র সক্রিয় রয়েছে। জলদস্যুরা জেলেদের মাছসহ ট্রলার, নৌকা ছিনিয়ে ভারতীয়দের কাছে বিক্রি করে দেয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।