আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজা মশাইয়ের গল্প

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই

আজ সকালে আমাকে রাজামশাই অনেক স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। তাই এই গল্পটি রাজামশাইয়ের জন্য । আমার বাচপানকালের গল্প। তখন রাজা সিপাহসালার খেলা খেলি। আমি আর আমার বাড়ির ভাড়াটিয়া ও আশেপাশের পোলাপান মিলে এই খেলায় দিনের পর দিন রাজায় রাজায় যুদ্ধ করেছি।

খেলায় নিয়ম ছিল এইরকম। পুরো দলে ছিল ৮ থেকে ১০ জন। তাদের মধ্যে ২ জন হত রাজা। প্রত্যেক রাজার একজন করে সেনাপতি বা সিপাহসালার থাকত। সিপাহসালারের অধীনে থাকত কয়েকজন সৈন্য।

লোক বেশি থাকলে রাজার মন্ত্রী বা উজির হত কেউ কেউ। দুই রাজা বাড়ির উঠোনের দুই দিকে বসতেন। দু'জন রাজার দু'টো সিংহাসন। সিংহাসন মানে দু'টি মই। দেয়ালের সাথে মই লাগিয়ে তার উপর রাজা বসতেন।

রাজা ওখান থেকেই যুদ্ধ পরিচালনা করতেন। মূল যুদ্ধ করত সৈন্যরা। আমাদের বাসার পাশের স মিল থেকে আনতাম কাঠের লাঠি। সেগুলো হচ্ছে তরোয়াল। সেই তরোয়াল দিয়ে যুদ্ধ চলত।

কারো পেটে গুতো দিতে পারলে সে মারা যেত। সৈন্যরা মারা গেলে সিপাহসালার দু'জন যুদ্ধ করত। যে কোন এক পক্ষের সিপাহসালার মারা গেলে তারপর আসত রাজামশাইয়ের পালা। রাজার সাথে কোন অলৌকিক কারণে সিপাহসালার পারত না। মারা যেত সিপাহসালার।

তারপর শুরু হত দু' রাজার যুদ্ধ। সে এক ভয়াবহ যুদ্ধ। দু রাজা ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করতেন। ঘোড়া ছিল নারকেলের ডাটি। দুই পায়ের ফাকে নারকেলে ডাটি ঢুকিয়ে ঘোড়া বানানো হত।

সেই ঘোড়ায় চড়ে দুই রাজা ভয়াবহ যুদ্ধ করতেন। অবধারিতভাবে এক রাজা মারা যেতেন। অন্য রাজা যুদ্ধ জয় করতেন। এই ছিল খেলার নিয়ম। কিন্তু মাঝে মাঝে খেলায় ব্যতিক্রম ঘটত।

কখনও কখনও কোন রাজা আত্মসমর্পণ করতেন। যেই রাজা আত্মসমর্পণ করতেন, সেই রাজা হত বিজয়ী রাজার ক্রীতদাস। ক্রীতদাসকে নিয়ে যাওয়া হত অন্য রাজার সিংহাসনের সামনে। বিজয়ী রাজা সিংহাসনে বসতেন আর ক্রীতদাস তাকে মদ ঢেলে দিতেন। বিজয়ী রাজা মহা উল্লাসে মদ খেতেন।

এই মদ মানে সাধারণ পানি। জগ ভরে পানি নেয়া হত। বিজয়ী রাজা মইয়ের উপর বসতেন একটি গ্লাস হাতে নিয়ে। মাঝে মাঝে হুংকার দিতেন, মদ দে। ক্রীতদাস জগ থেকে তার গ্লাসে মদ ঢেলে দিত।

বিজয়ী রাজা পরম আয়েশে মদ খেতেন। একবার এই মদ খাওয়া নিয়ে ঘটল এক মজার ঘটনা। আমাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া এক ছেলে জিতেছে। সে এখন রাজা। অন্য রাজা এখন ক্রীতদাস।

বাকিরা যুদ্ধে মারা গেছি। বিজয়ী রাজা হুংকার দিচ্ছেন, মদ দে। ক্রীতদাস রাজা মদ ঢেলে দিচ্ছেন। বিজয়ী রাজা মদ খাচ্ছেন তো খাচ্ছেনই। জগ প্রায় খালি।

আমরা মৃত লাশেরা আশে পাশে শুয়ে দেখছি তাদের কাণ্ড কারখানা। হঠাৎ করে মইয়ে বসা রাজামশাই তার প্যান্ট খুলে ঝর্ণাধারা ছাড়তে শুরু করলেন। আমরা যারা মইয়ের নিচে মৃত সৈনিক হিসেবে পড়েছিলাম, তারা উঠে দৌড়ে পালালাম। অল্পের জন্য তার প্যান্ট খুলে ছেড়ে দেয়া ঝর্ণার ধারা আমাদের গায়ে পড়েনি। পরবর্তী সময়ে বুঝতে পারলাম, রাজামশাই জোশের চোটে বেশি মদ খেয়ে ফেলেছিলেন।

তাই প্যান্ট খুলে অতিরিক্ত মদ ছেড়ে দিতে হয়েছিল।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.