মানুষের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা কিংবা অক্ষমতা এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত। তা হলো নিজের উপর নিয়ন্ত্রন
বিশ
১। ভালোবাসা কি? একই ভালোবাসা একাধিক মানুষের জন্য একই সময়ে অনুভব করা কি সম্ভব?
২। স্বার্থপর কারা? তুমি কি সেই দলে পরো?
৩। উদারতা কি? কখনো কি কারো প্রতি উদার হয়েছ?
৪।
মানুষ হিসেবে তোমার স্থান কোথায়?
৫। মানুষ হিসেবে তোমার সফলতা আর ব্যর্থতা গুলো কি কি?
মনোজঃ “তোর এই প্রশ্ন গুলো দিয়েতো ৪ ক্রেডিটের একটা কোর্স দেয়া যাবে। তুই কোনো ক্লাস নিলি না, প্রিলিমিনারী ছুটি দিলি না, কোনো নোটিস নাই। ধুম করে প্রশ্ন ধরিয়ে দিয়ে বললি নাও শুরু কর। এটাতো মামলা করার মতন অপরাধ করে ফেলেছিস।
”
স্বগতঃ “ওর আর কি দোষ বল। ওতো সারা জীবন জেনে এসেছে তুই অনেক আগেই সিলেবাস শেষ করে রাখিস। তাই তোর জন্য এবার সারপ্রাইজ কুইজ। হা হা হা। ”
রঞ্জনঃ “এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিয়ে তুই কি করবি? আমাদের উত্তর নিয়ে সেটা কোনো কাজে আসবে বলেতো আমার মনে হয় না।
আর তুই নিজে এসব প্রশ্নের উত্তর জানিসতো? ”
স্বগতঃ “ও কি কখনো কোনো প্রশ্নের উত্তর মনোজের আগে জেনেছিল? শুধু শুধু অবান্তর প্রশ্ন করছিস কেন?”
“হা হা হা হা হা...ভালোই বলেছিস। আমিতো বলিনি এখনি উত্তর দিতে হবে। চিন্তা কর, চিন্তা ভাবনা করে ঠিক উত্তরটা দিলেই হবে। ”
স্বগতঃ “একটা সুসংবাদ আছে। তোরা সবাই কি প্রস্তুত?”
রঞ্জনঃ “সুসংবাদের জন্যও প্রস্তুতি লাগবে? এ কেমন সুসংবাদ? এই সুসংবাদ শোনার পর সর্বোচ্চ কি হতে পারে?”
স্বগতঃ “আমার প্ল্যানিং শেষ।
ফান্ড কালেকশনও শেষ। এখন যাত্রা শুরুর অপেক্ষা। ”
মনোজঃ “তোর এই নাটক করার স্বভাবটা মাঝে মাঝে মেজাজ খারাপ করে দেয়। বিস্তারিত বল। আর এর মাঝে বাড়তি কথা বললেই মার খাবি।
”
রঞ্জনঃ “এই ব্যাপারে আমি মনোজের পক্ষে। আর মৃদুল এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবে না। অতএব মাইরের বিল পাশ। ভঙচঙ বাদ দিয়ে আসল কথা বল। ”
স্বগতঃ “সেদিন আমরা আলোচনা করছিলাম তোদের মনে নেই? শেষ পর্যন্ত একটা প্রযেক্ট দাড় করানো গেছে।
একটা স্পন্সরশীপের ব্যবস্থাও হয়ে গেছে। অবশ্য স্পন্সরটা শর্তসাপেক্ষ। একটা নির্দিষ্ট সময়ের সন্তোষজনক কাজের উপর ভিত্তি করে মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা সেটা নির্ধারন করা হবে। আপাতত আমাদের টার্গেট হবে স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে কম্পিউটার আর ইন্টারনেটের সাথে শিক্ষার্থীদেরকে পরিচিত করানো এবং ক্ষেত্র বিশেষে ইন্টারনেটের সুবিধা সম্পর্কে তাদেরকে জ্ঞান দান যাতে করে তারা এই সুবিধাটা গ্রহন করতে পারে। আস্তে আস্তে এই প্ল্যান বাড়বে।
আপাতত আমরাই শুরু করছি। শুরুটা এক ঢিলে দুই পাখি মারা দিয়ে হবে। ”
মনোজঃ “সেটা কেমন?”
স্বগতঃ “আন্দাজ করতো দেখি পারিস কিনা?”
রঞ্জনঃ “আন্দাজ করার দরকারটা কি? তুই বলে দিলেইতো ক্ষতম হয়ে গেল। ”
“আমার মনে হয় এই কাজের সাথে একটা ট্যুর প্ল্যান করে ফেলেছিস। কি ঠিক ধরেছি না।
”
স্বগতঃ “হম্ম। ঠিক ধরেছিস। সবাইকে আগে থেকেই বলে রাখছি। কিভাবে সময় বের করবি আমি জানি না। দুই দিন ছুটি ম্যানেজ করতেই হবে।
সাথে দুইটা সাপ্তাহিক ছুটি। দুই দিন আমরা আমাদের কাজ করবো। ওই দুই দিনও যাতে ঘোরাঘুরি করতে পারি এই জন্য কক্সবাজার দিয়েই শুরু করবো বলে ঠিক করেছি। সেই সুযোগে সেণ্টমার্টিন চক্কর দিয়ে আশা যাবে। কারো কোনো আপত্তি কিংবা পরামর্শ আছে? ”
সবাই হঠাৎ চুপ মেরে গেলো।
বোধহয় সুখস্মৃতি রোমন্থন করছে। আমরা সবাই মিলে গিয়েছিলাম সেণ্টমার্টিন। ওটাই আমাদের শেষবারের মতন একসাথে কোথাও যাওয়া। এবং এর চেয়ে সুখ স্মৃতি আমাদের খুব কমই আছে।
রঞ্জনঃ “তুই জটিল একটা কাজ করেছিস স্বগত।
খুব দরকার ছিল এমন একটা কিছু। আমার কোনো সমস্যা নেই। আর আপত্তি করারতো প্রশ্নই আসে না। ”
মনোজঃ “আমাকে দুদিন আগে তারিখটা জানালেই হবে। আমি ম্যানেজ করে ফেলবো।
”
স্বগতঃ “আর মৃদুল?”
“আমি কি কখনো না বলেছি? ”
স্বগতঃ “তাহলে আমি শিডিউল করে তোদেরকে জানাবো। সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখিস। ওখানে গিয়ে যেন কারো মুখে না শুনি ইশশ্ একটা ফুটবল থাকলে ভালো হতো, কিংবা এস,এল,আর ক্যামেরাটা নিয়ে আসা উচিত ছিল। এখন থেকেই প্ল্যান করে ফেল কি কি করবি, কিভাবে করবি? হয়তো পরের সপ্তাহেই হতে পারে সবকিছু। সে ক্ষেত্রে আগে থেকে টিকেট বুকিং দিতে হবে।
মৃদুল...পারবি না সেবারের মতন সব কিছু সামলে নিতে? তোর ম্যানেজ করার ক্ষমতার উপর আমাদের যে অসীম আস্থার আরেকবার প্রতিদান দে। এই দায়িত্ব তোর উপর ছেড়ে দিতে পারলে আমি আরেকটু রিলাক্স হয়ে আমার কাজ করতে পারবো। ”
“ তুই নিশ্চিন্তে তোর কাজ কর আর আমাকে জানা আমি কিভাবে তোকে তোর কাজে সাহায্য করতে পারি। ”
মনোজঃ “আমারতো শুধু ওই সময়ের কথা মনে পরছে। পুরো মাস জুড়ে প্ল্যানিং করেছিলাম।
একটা বিশাল দল। কয়জন ছিলাম আমরা সবাই মিলে? পনের নাকি ষোল? কি দুর্দান্ত একটা উত্তেজনার মধ্য দিয়ে কেটে ছিল সময়টা। ইশশ্ সব ভিডিও করে রাখা গেলে এখন কি মজা নিয়েই না দেখা যেত?”
“আমার কাছেতো সবই এখনো ৩৫ মিলিমিটার এর জীবন্ত ছবি। ভিডিও করার দরকার কি? চোখ বন্ধ কর। অনুভব করার চেষ্টা কর।
সময়টাকে ধরার চেষ্টা কর। এখনি দেখতে পাবি। ওই যে আমি দেখতে পাচ্ছি। সেণ্টমার্টিনের টলটলে পানিতে আমাদের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।