সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত...............।
অগ্নিদগ্ধ বসুন্ধরা সিটির ভেতর হতে অক্ষত কোরআন শরীফ উদ্ধার নিয়ে বেশ তোলপাড় দেখছি কাল রাত হতে। আল্লাহতাআলার অশেষ মেহেরবানী আর নিদর্শনরূপে একে প্রচার করার বেশ চেষ্টা-চরিত্র চালানো হচ্ছে।
Click This Link
Click This Link
কিন্তু ব্যাপারটা কী আসলেই তাই? একটু চিন্তা করে দেখি?
কোরআন নিজেকে আল্লাহর তরফ থেকে আসা বাণী সংকলন এবং সমগ্র মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক হিসেবে ঘোষনা করে।
আর আমরা কী করি? সারা বছর পাতলা কাপড়ে মুড়িয়ে একে বইয়ের সবচেয়ে উঁচু তাকে তুলে রাখি।
রমযান বা শবে বরাতের সময় বের করে ঝেড়ে-ঝুরে নিয়ে চুমো খাই। দুই-চারদিন অর্থহীন তেলাওয়াত করি। তারপর যেই কে সেই? কী লাভ এতে? না কোরআনের না আমাদের!
আমি প্রশ্ন করতে চাই, অর্থহীন তেলাওয়াতকৃত কোরআন আর জার্মান ভাষায় লিখিত কার্ল মার্ক্সের দ্য ক্যাপিটলে কী পার্থক্য?
এই কথায় অনেকেই ক্ষেপে যাবেন, আমায় মুরতাদ বলবেন। আবার, অনেকেই খুশি হয়ে বলবেন যে, আমি তথাকথিত মুক্ত চিন্তার পথিক হয়ে উঠেছি। বিনয়ের সাথে বলতে চাই, আমি কোন দলেই নেই।
আমার কথা সোজা-সাপ্টা। বই হিসেবে কোরআন কতগুলো কাগজের সমষ্টি মাত্র। এটি পোড়া না পোড়ায় আল্লাহর মেহেরবাণীর কোন হেরফের হয় না। ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী যখন বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছিলো তখন কোরআন শরীফ ও রেহাই পায় নি। সে সময়ের এ রকম অর্ধ পোড়া কোরআন শরীফের ছবি মনে হয় অনেকেই দেখেছেন।
আবার, মহানবীর (স) জীবদ্দশায় কোরআন মোটে ও এভাবে বই আকারে সংকলিত ছিলো না। তাঁর তিরোধানের প্রায় দুই দশক পর হযরত ওসমানের (রা) সময় যখন তার পূর্ণাঙ্গ সংকলন করা হয় তখনো কিন্তু পুরাতন সবগুলো কপিই জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কেউ তো তখন আপত্তি তোলে নি; বলে নি আল্লাহর নিদর্শন পুড়ে যাচ্ছে!
সত্যিকার অর্থে সে সময়ের মানুষেরা কোরআনকে বুকে ধারন করে ছিলেন, জীবন চলার পাথেয় হিসেবে নিয়েছিলেন। আর আমরা একে বেদ-উপনিষদের মত কঠিন বই বানিয়ে তাকে তুলে রেখেছি। বিশেষ একটা শ্রেনীর মানুষের জীবিকা উপার্জনের (ইমামতি, তাবিজ-কবজ ইত্যাদি) হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে দিয়েছি।
তাই, একটা শব্দ না বুঝে ও মুসলমানের কোরআনের তেলাওয়াত আর হিন্দুর সংস্কৃত বেদবাক্য উচ্চারনে আমি কোন ফারাক খুঁজে পাই না।
যারা কোরআনকে ভালবাসেন তারা হয়তো আমার কথায় মর্মাহত হবেন। আমার সহমর্মিতা তাদের জন্য। কিন্তু সত্যের মুখোমুখি তো হতেই হবে তাই না! ভুল রাস্তায় আবেগ দেখালে, হিতে বিপরীত হয়- জংগীবাদের উত্থান আমাদের তাইতো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
কোরআন পোড়া বা অক্ষত থাকার মত ছোট ব্যপারে বিশ্বাসীদের বিশ্বাস ও টলবে না; অবিশ্বাসীদের মন ও আল্লাহর দিকে ঘুরে যাবে না!
কোরআন আল্লাহর সৃষ্ট এক অনুপম নিদর্শন।
সৃষ্টির পুজা না করে আসুন স্রষ্টার আরাধনা করি। সত্যের আলোয় আলোকিত করে তুলি এ জীবনকে।
ধন্যবাদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।