আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জব্বর একখান দিন গ্যালো...কানের পাশ দিয়া অ মাথার ওপর দিয়া



ঘটনাচক্র১.দুপুরের ঝা রোদে শিল্পকলা একাডেমী থিকা রাস্তায় নামবো, সেগুন বাগিচার এই সাইডের(বার কাউন্সিল এর উল্টা দিকে) গেইট। উদ্দেশ্য, রিকশা নিয়া নীলক্ষেত গমন। ঠিক ওই মুহুর্তে এখানে রিকশা আশা করা যায়না। একটু বামে গিয়ে মোড়টার মধ্যে পাওয়া যাবে। ভিআইপি সড়ক হওয়াতে ডান দিকে, মৎস্যভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়া সম্ভবও না।

কিন্তু কিসের কি, দেখি একটা রিকশা দাড়িয়ে। আমি প্রায় গেইট ছেড়ে বাইরে ফুটপাতে পা দিয়েছি, হাত তুলে ডাকলাম বার দুয়েক, এই খালি, খালি...সে একবার আমার দিকে তাকায়, একবার সামনে তাকায়। শেষমেশ ধীর গতিতে সামনে রওনা হয়। আমি ত থ। কিছুটা বিরক্ত, ব্যাটা হ্যা-না কিছু না বলেই চলে যাবে? আবার ডাকি, ওই খালি..এবার সে অবিচল দৃষ্টিতে জোরে জোরে প্যাডেল মারতে থাকে।

আমি বেশ খানিকটা বিরক্ত হয়ে তার কাছাকছি হবার চেষ্টা করি, পাশ কাটানোর সময় মৃদূ ভর্ৎসনা দিই...যাবা-না-যাবানা সেটা কৈতারো না মিয়া? এই বলে ওপাশের ফুটপাদত গিয়ে দাড়াই। আর শ্যেন দৃষ্টি দিয়ে লক্ষ্য করি, ব্যটার মতিগতি আসলে কি?এরাম রহস্যজনক আচরন কর্তেছে কেন? মাইরি, দেখি ওপাশের ফুটপাতে ক্যামেরাম্যান পজিশনে। এতোক্ষণে মাথায় ঢোকে, এখানে রিকশা দেখা পাওয়ার কারন! আরো খুটিয়ে লক্ষ্য করি, ওই ব্যাটা আসলে রিকশা ওয়ালা না, মেকাপ লৈছে মনে মনে ভাবতাছি, নাটক শ্যূটিং করতে আয়া বিনি পয়সার নাটক দেখে ফাললো নাকি ব্যাকতে? ঘটনাচক্র ২. এই ঘটনার দুই ঘন্টা পড়ের কথা। বাড়ির কাছটায় ঠিক দুইটা বাজলে বাজ পড়ে। এক নাগারে সব দোকান বন্ধ।

একটা কাক-পক্ষীও পাওয়া যায়না। বিড়ি যোগারের জন্য ৬টাকার রিকশা ভাড়া খরচা আরকি! দেখি গলির শেষ মাথার দোকানটা খোলা। কিন্তু সেটা হা করে আছে! মানে, খালি। মাল সামাল তুলে নাইক্যা। মূদির দোকান দেখে হতাশ হলাম।

এখানে সিগারেট পাওয়ার আশা অরণ্যে রোদন হয়ে যায় বুঝি। দোকানদার আংকেল আবার হুযুর গোছের, ইয়া লম্বা দাড়ি। এধরনের লোক সাধারনত: দোকানে সিগারেট রাখেনা। যাই হোক, সামনে দেখি সিগারেটের এন্তেজাম আছে! সাহস নিয়া জিগাই, আংকেল বেনসন আছে? উনি দ্বিগুন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে পাশে তাকায়, যেন উনি জানেননা আছে-কি-নেই, এখানে নতুন। পরমুহুর্তে আবিষ্কার করি, তার হাতে একটা বেনসনের নয়া প্যাকেট।

এখনো লেমিনেশন খোলা হয়নি। উনি পাশের লোকের সাথে কথা বলতে বলতে খুলতে লাগলেন। আমি ত হাফ ছেড়ে... কিন্তু সাথে সাথেই কর্পূরের মতো উড়ে গেলো সস্তি, তার জায়গায় দখল করলো বিস্ময় আর কৌতুহল! সিগারেটের প্যাকেটে মোড়র উন্মোচন করে দেখা গেলো চারপাঁচটা বিড়ি আর একটা পত্রিকার কাগজ গোঁজা। উপস্থিত সবাই যেন সাপের পাচ পা দেখছে!!! ঘটনা কি?আমার মুখ দিয়ে বেরিয়েই গেলো আপসুসটা। পুরা আশি টাকাই গচ্ছা! দোকানদার বেচারার মনের অবস্থা বোঝা যাচ্ছে।

কিন্তু তার, এমনকি সবার আগ্রহের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলো অত্যন্ত যত্ন করে মোড়া পত্রিকার কাগজের ভাঁজে কি গুপ্তধন আছে?ওটা আস্তে আস্তে খুলতে লাগলেন আংকেল। যাদু দেখানোর ভঙ্গি। শেষ বাজটা আলগা করতেই বেড়িয়ে এলো...........না, ..তেমন কিছুনা,,...একটা ছেড়া ঠুঙ্গা... বাসায় ফিরতাছি আর ভাবতাছি, দেশটা এরাম আওলাইয়া যাইতাছে ক্যান...কি গোলমালের কথা!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.