ইমরোজ
লেখাটা লিখার আগে একটা কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করি। সেটা হলো আমি আওয়ামী পন্থী একজন মানুষ। ব্লগে আমাকে আওয়ামীলীগের পক্ষ হয়ে কথা বলতে অনেকেই দেখেছেন। আমি আওয়ামীলীগার ছিলাম এখনও আছি। কেন আওয়ামীলীগকে আমার বিশেষ পছন্দ সেটা আর এই লেখায় না বলাই শ্রেয়।
যে উদ্দেশ্য নিয়ে লিখতে বসেছি, তা আওয়ামীলীগের পক্ষে কোন মতেই যেতে পারে না। দিন বদলের সনদ বলে আমাদের নেত্রী যে কথা দিয়েছেন, তার বাস্তবায়ন আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। এবং এটাও বুঝে গেছি, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে স্বয়ং বারাক ওবামা এসেও দিন বদল করতে পারবে না।
দুঃখজনক হলেও সত্য, ছাত্রলীগ এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
মারামারির অনেক ঘটনাই মিডিয়াতে আসে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আন্ত কোন্দল, ছাত্রদলের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। মজার ব্যাপার হলো, আমার এক ছাত্রলীগের বন্ধুকে দুইদিন আগেও দেখেছি, রাজনীতির ধারে পাশ দিয়েও যেত না। আর এখন মরিয়ে হয়ে উঠছে। কীভাবে মারামারি লাগানো যায় তার একটা পায়তারা একটা ষড়যন্ত্র সর্বক্ষণই ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা নেতা কর্মীর মনে পাক খাচ্ছে।
তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেন এসব করিস?
আমাকে উত্তরে শুনতে হলো, ছাত্রদল নাকি আরও বেশি করছে। তারা তো কিছুই করা শুরু করে নাই। কিছু শুরু না করতেই এই অবস্থা। শুরু করলে না জানি কী হয়!
বিসিএস হলো এর প্রধান কারণ। ছাত্র রাজনীতি করলে নাকি বিসি এস এ অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সত্য কথা বলতে আপনার গত পাঁচ বছর বোঝার বয়স আমার ছিল না। তবে এই পাঁচ বছর যে আপনি কী ধরণের সমস্যার মধ্যে পরবেন তা আর বললাম না। শুনেছিলাম মানুষ নাকি একবার ঠেকেই শিখে। আর আপনি বার বার ঠেকছেন, শিখছেন না কিছুই। কিসের দিনবদল করবেন? লজ্জা লাগে না, আপনার ছেলেরা যখন হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে নিরীহ মানুষকে আহত করছে?
শিবিরের এক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।
কথা হলো, সে শিবির করুক, আর যাই করুক, তাকে মেরে ফেলতে হবে কেন? মেরে ফেলা হলো এইজন্যই যে, এখন দল ক্ষমতায়। যারা মারলো তাদের কোন বিচার হবে না। বিগত সরকারের আমলেও কী আমরা ঠিক একই চিত্র দেখি নাই? এই তাহলে দিন বদল? এই লজ্জার ভাগিদার আওয়ামীলীগকে নিতেই হবে।
বিডিআরের ঘটনায় আমরা দেখলাম প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছেন। বিডিআরের হত্যাযজ্ঞকে শান্ত করেছেন।
বিদ্রোহ দমন করতে সক্ষম হয়েছেন। সেনাবাহিনী বিচার কাজও শুরু করেছে। অথচ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কোন ভয়ে আপনি একবারও সেনা অফিসারদের কাছে জানতে চাইলেন না, কেন বিডিআরে এরকম ঘটনা ঘটল? চাল ডাল তেল নূন নিয়ে আসলেও কোন ষড়যন্ত্র হয়েছে কী না তা একবারও আপনি জানতে চাইলেন না। আসলেই বিডিআর ভুক্তভোগী কিনা সেটা আপনার চোখ এড়িয়ে গেল।
যেতেই হবে, এই দেশেই আপনার বাবা সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
আর আপনার তো আপনার বাবার পায়ের নখের সমানও সাহস নাই। দেশের জনগণ এই ব্যাপারটায় একেবারেই অন্ধকারে পরে রইল।
শেখ হাসিনা, দেশকে সেনাবাহিনীর হাতে বিকিয়ে দেওয়া খুবই সহজ। সহজেই আপনি গদি ধরে রাখতে পারবেন। তবে মনে রেখেন, এর খেসারত আপনাকেই দিতে হবে।
সহজ স্বাভাবিক ও যথেষ্ট সাধারণ ভাবে চিন্তা করে, আমার মনে হয় বিডিআরের ঘটনা একটা বিস্ফোরণ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচন্ড ক্ষোভের। এই ব্যাপারটি ধামাচাপা পড়ে গেল ভারতীয় ষড়যন্ত্র আর জেএমবি ষড়যন্ত্রের আড়ালে, আর ওঠানো হবে না।
সেনা অফিসারদের এইরকম বর্বরচিত হামলার শিকার হতে হয়েছে। অথচ, আমরা কী জানি? বিডিআর, যারা নাকি সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী তাদের কত রকমের অসুবিধার মধ্যে থাকতে হয়। তাদের নাকের ডগা দিয়ে যখন সেনা কর্মকর্তারা কোটি টাকার গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তখন কী কারও মাথা ঠিক থাকতে পারে?
যাইহোক, সব কথার শেষ কথা, আমি প্রচন্ড ভাবে দুঃখিত, হতাশ, ব্যাথিত, এবং চাই, এই দেশ থেকে ছাত্ররাজনীতি বিতাড়িত করা হোক, সেনাবাহিনীকে জবাবদিহিতামূলক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করা হোক।
সেনা অফিসারদের কু-কীর্তি সম্পর্কে অন্ধকারে কেন থাকবে জনগণ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।