আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কল্কি অবতার কে ? মহানবী (সাঃ) ? - ৩

"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.

সর্বশেষ প্রত্যাশিত অবতার শেষ নবী (সাঃ) আর্বিভূত হয়েছেন । তিনি-ই পুরাণ শাস্ত্রে উল্লেখিত কল্কি অবতার । কবীর বলেছেন- 'তাকে খোজ কর তবেই মুক্তি মিলবে নতুবা পথভোলা পথিকের মত ঘুরপাক খেতে থাকবে, আর এ ধরনের বেচে থাকা ছেড়ে দাও । ' (শ্রী-সান্ত গাঁথা) #..৪. শ্রীমদ্ভাগবতের ১২/২; ১৯ এবং ২০ নং শ্লোকের অর্থ হলোঃ- কল্কি অতি দ্রুত গমনশীল অশ্বপৃষ্ঠে আরোহণপূর্বক বিচরণকারী । তার দৈহিক গঠন অত্যন্ত কান্তিময় এবং তিনি অসি বা তরবারী ধারণপূর্বক দুষ্টের দমন করবেন ।

বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানা যায়, হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কাবার চত্বর থেকে রাত্রিযোগে আল্লাহপাকের দিদার উদ্দেশ্যে 'বোরাক' নামীয় অতি দ্রুতশীল অশ্ব বাহনে সপ্তাকাশ পরিভ্রমণ করেন । পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেন- "পবিত্র ও মহীমাময় তিনি, যিনি তার বান্দাকে (মুহাম্মদ সাঃ) রাত্রিযোগে ভ্রমণ করিয়েছিলেন । আল-মসজিদুল হারাম (কাবা) থেকে আল-মসজিদুল আকসা (বাইতুল মোকাদ্দাস) পর্যন্ত । যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখাবার জন্য । তিনি-ই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা " [১৭/১] ফলে ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) মিরাজের রাত্রে স্বর্গীয় বাহন 'বোরাকে' আরোহণ পূর্বক আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে সপ্তাকাশ পরিভ্রমণ করেছিলেন, এ কথা সর্বজন বিদিত ।

'বোরাক' আরবী শব্দ । এর মূল ধাতু 'বারকুন' শব্দের অর্থ 'তড়িৎ' বা বিদ্যুৎ । বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন, বিদ্যুৎ বা আলোকের গতি প্রতি সেকেন্ডে এক লাখ ছিয়াশি হাজার মাইল । ফলে সম্পূর্ণ বিদ্যুতের তৈরী বা সৃষ্ট বোরক কত দ্রুতগামী অশ্ব ছিল, তা সহজেই বোধগম্য । উপরোল্লিখিত শ্লোকে কল্কি অবতার তরবারী ধারণ পূর্বক দুষ্টদের দমন করবেন ।

একথাও বর্ণিত আছে । মহানবী (সাঃ) অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে অনেক যুদ্ধে নিজে স্বয়ং অংশগ্রহণ করেছেন । তিনি তরবারী , তীর ধনুক দ্বারা যুদ্ধ করেছেন । এছাড়াও তার দৈহিক গঠন অত্যন্ত কান্তিময় । শামায়েল-তিরমিযীর বর্ণনায় আমরা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সুন্দর যে ছুরতে যে বর্ণনা পাই তা হল- অতীব লাবণ্যময়, নূরানী, পূর্ণিমার চাদের মত শুভ্র দুধে ও আলতা মিশ্রণে যে রং হয় প্রিয়নবী (সাঃ) রং ছিল তেমনি ।

হযরত আলী (রাঃ) মহানবী (সাঃ) এর আকৃতি সম্পর্কে বলেন যে, খুব লম্বাও নয়, খুব বেটেও নয়, মধ্যম আকৃতির ছিলেন তিনি । তার আগে বা পরে কখনো তার মত সুপুরুষ দুনিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন নি । উনার মাথার চুল ছিল কানের লতি পর্যন্ত । কখনো কখনো কোঁকড়ানো ঢেউ খেলানো বাবরী চুল ঘাড় পর্যন্ত থাকতো । মাথা মোবারক আকারে বড় ছিল ।

তার ললাট ছিল প্রশস্ত । চক্ষুযুগলের মণি খুব কালো ছিল । তার উচ্চ নাসিকা অতীব সুন্দর দেখাতো । উনার দাতগুলো ছিল অতীব সুন্দর রজত-শুভ্র যা ছিল সামান্য ফাঁক এবং হাসির সময় মুক্তার মত চমকাত । দীর্ঘ মনোরম সুঠাম কাধের হাড় অল্প পরিমাণ ছিল ।

স্কন্ধদ্বয়ের মাঝে ডিম সাদৃশ মোহরে নবুয়ত নামে একটা উচ্চ মাংস ছিল, যেখানে কালিমা তায়্যিবাহ (লা ইলাহ ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাছূলুল্লাহ) খচিত ছিল । মোহরের উপর তিল ও পশম ছিল এবং ঈষৎ লাল ছিল । তার লম্বা ঘন দাড়ি প্রায় বুক পর্যন্ত প্রসারিত ছিল । নবীজীর বক্ষ ছিল বীর বাহাদুরের মত প্রশস্ত ও কিছুটা উচু । বক্ষস্হল হতে নাভি পর্যন্ত চুলের সরু রেখা ছিল ।

এছাড়া সর্বশরীর পশমে ভরা ছিল । মহানবীর শরীরের চামড়া রেশম থেকেও অধিক মসৃণ ও নরম ছিল । শরীরের ঘামের কণাগুলো মোতির মত থাকত যা ছিল অত্যন্ত সুগন্ধিযুক্ত । মহানবীর শরীর অত্যন্ত স্হূল ও ছিলোনা আবার অতিরিক্ত ক্ষীণও ছিল না । তার পবিত্র দেহে নবুয়তের যাবতীয় লক্ষণ-ই বিদ্যমান ছিল ।

তাছাড়াও উক্ত শ্লোকে বলা হয়েছে, তিনি ক্ষৌণাং অর্থাৎ খতনাকৃত বা লিঙ্গাগ্র ত্বকচ্ছেদ বিশিষ্ট অবস্হায় থাকবেন । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) খাতনাকৃত অবস্হায় জন্মগ্রহণ করেন । তার ফুফু হযরত সুফিয়া (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, "তিনি ভূমিষ্ঠ সময় খাতনাকৃত অবস্হায় ছিলেন । " খোদ মহানবী ইরশাদ করেছেন যে, "আমার পরওয়ার দিগার আমাকে এক বিশেষ সম্মান এ দিয়েছেন যে, আমি খতনাকৃত অবস্হায় ভূমিষ্ঠ হয়েছি । " ........অতএব, এসব লক্ষণগুলির মিল থেকে-ও এটা প্রমাণ হয় যে মোহাম্মদ (সাঃ) -ই কল্কি অবতার বা প্রতিশ্রুত শেষ নবী ।

......চলবে ..... সূত্র-সমূহঃ ১. জগৎগুর মুহাম্মদ (সাঃ) [১ম খন্ড] রেনেসাঁ পাবলিকেশন্স ২. বেদ - পুরাণে আল্লাহ ও হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) - ধর্মাচার্য অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায়, ইসলামী সাহিত্য প্রকাশনালয়, ৪৫, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০. ৩. আল-কুরআন । ৪. মাসিক মদীনা, সীরাতুন্নবী সংখ্যা,মার্চ-২০০৯

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।