আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিচার চাই সকল অপরাধীর

কিছুতেই খাপ খাওয়াতে না পারা একজন মানুষ, খাপ খাওয়াতে সদা ব্যস্ত, ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ, কিন্তু হাল ছাড়ছি না। কত মৃত্যু, কত আহাজারি, দুনিয়ার আদি থেকে আজ অব্দি, প্রাণের সৃষ্টি থেকে বিনাশ অব্দি, জন্ম থেকে মরণ অব্দি, কত ইতিহাস। কত চোখে জল শুকিয়ে গেছে, শোকের মাতম থেমেছে কত মায়ের, স্ত্রীর, ঝিয়ের, ভগ্নির। কত পিতা বিচার ভিক্ষা করতে করতে প্রাণ ত্যাগ করেছে। কত ভাই স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছে ভাতৃ বিয়োগের যাতনা।

পারেনি ওরা। পারেনি সময়। পারেনি এই সৃষ্টি জগত। চেষ্টা করলেও কি পারত? ওঁরা ভুলে যান। আমরা ভুলি না।

একাত্তরে ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে কিনতে হয়েছে লাল-সবুজ। একানব্বইয়ে নুর হোসেন, মিলনদের রক্তে ফিরেছে গণতন্ত্র। আর প্রতিদিন দেশ রক্ষায় কত প্রাণ অবিরাম সহ্য করে চলেছেন মরণ যন্ত্রণা। বাড়িতে থেকে লাশ হচ্ছেন। গাড়ীতে চড়ে লাশ হচ্ছেন।

ধান ক্ষেতের আলের ভেতর গুমরে উঠছে কিশোরী-শিশুর কোমল প্রাণ অকল্পনীয় বেদনায়, পশুদের অশুভ স্বার্থ চরিতার্থের নেশায়। জীবন বদলানোর আশায় মজুরী খাটতে এসে কলাপসিবল গেটের ভেতর পুড়ে গেল শত শত স্বপ্ন। কাগজ খুললেই পাওয়া যায় চলন্ত পথে রক্তাক্ত হয়ে সকল সাধের সমাধি হয়ে যাওয়া মানব-মানবি-শিশুর খবর। মায়ের জানের টুকরো পরাগকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল দিনে দুপুরে। মার প্রাণ যায় যায়।

বাবার মুক্তিপণের অর্থে মায়ের বুকে ফেরে আদরের ধন। ঘরে ক্ষুধার্ত মুখে অন্ন জোগানোর তাগিদে বের হওয়া কর্তা ফেরেন কক্টেলের আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে। ডেস্টিনি, ইউনিপে, যুবক ইত্যাদি ভুইফোঁড় সংগঠন তহবিল সংগ্রহ করার নামে সাধারণ মানুষের অতি কষ্টে জমানো অর্থের শ্রাদ্ধ করে। রফিকুল আমিনরা মাস শেষে ৮ ডিজিটের ইন্টারেস্ট গোনেন। সাধারণ মানুষ কী পায়? স্কুল, কলেজে ভর্তি হতে চ্যানেল লাগে।

চাকুরির কথা বলাই বাহুল্য। হরতাল, অবরোধে ব্যবসা-বাণিজ্যে আকাল লাগে। সরকার বদল হয়, কিন্তু, আমাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না। প্রতিশ্রুতি বানের জলের মত হলেও, পূরণ হয় ফারাক্কার পানি বন্টন চুক্তির মত। আমাদের কথা শুনবার কেউ থাকে না।

আমরা অসহায়। এইসব বলার উদ্দেশ্য একটাই, সকল অপরাধের শাস্তি হতে হবে, সেটা যদি যুদ্ধাপরাধীদের দিয়ে শুরু হয়ে থাকে, খুব ভালো। আজকে শাহবাগ চত্বরে যাঁরা অপরাধির শাস্তির জন্য একাত্ম হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন, সকলকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু, মনে রাখবেন, দায়িত্ব যখন কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তখন, শুধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েই ক্ষান্ত দেবেন না। এই দেশের সকল দূর্নীতিবাজ, অসৎ রাজনীতিক, কালো বাজারি, অর্থ লুটপাটকারি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, হল দখলকারি, ধর্ষক, খুনি, ফতোয়াবাজ, অসৎ মাতব্বর, ভেজাল কারবারি, ঘুষখোর, জমি দখলকারী, মুখোশধারী প্রমুখের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতেও শিগগির সারা দেশে গণ আন্দোলন করবেন।

যুদ্ধাপরাধীরা সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ দেখতে চায়নি। আর আজ উল্লিখিত ধান্ধাবাজরা স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দিতে চায় না। এদের কাউকেই এদেশের বুকে ঠাঁই দেয়া চলবে না। সেই আন্দোলনে সবার যদি আজকের মত স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহন না থাকে তবে সেটা হবে জাতির জন্য লজ্জাজনক। সকলের শুভ কামনায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.