Good
দেখতে দেখতে কেটে গেল অমর একুশে বইমেলা ২০০৯। নতুন ভবন নির্মাণের কারণে মেলাচত্বর প্রায় এক তৃতীয়াংশ ছোট হয়ে গেছে এবার। তারপরও প্রায় ৫০ হাজার দর্শনার্থী এবার এসেছিল মেলায়। আড়াই হাজার নতুন বই নিয়ে লেখক পাঠক মেতেছিল সারামাস।
আমার তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছে এবার।
সেজন্য ব্যক্তিগতভাভে আমিও আনন্দিত। মুক্তদেশ পাবলিকেসন্স থেকে কবিতার বই মনুষত্বের ল্যাম্পপোস্ট, সিদ্দিকীয়া থেকে ছড়ার বই দুর্দিনের ছড়া, কো-অপারেটিভ থেকে মেঘের খোপায় পালক ভরে । দিগন্ত টেলিভিশন, বাংলা ভিশন, চ্যানেল আই, দি এডিটর লাইভ সাক্ষাৎকার নিয়েছে একাধিকবার। বিভিন্ন দৈনিকে বইগুলোর কভার ছাপা হয়েছে। কবিতার বই ছড়ার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন কবি আল মাহমুদ কবি রবীন্দ্র গোপ।
সারাটা মাস কবি, লেখক, প্রকাশক, পাঠক ও শুভার্থীদের সাথে আড্ডা দিয়ে কেটেছে। এমন মধুময় সময় পাবার জন্য হয়তো আরও একটি বছর অপেক্ষা করতে হবে।
অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে এবার। কিন্তু মানসম্পন্ন বই কতগুলো প্রকাশিত হয়েছে - সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। অনেক নামি দামি প্রকাশক মোটা অংকের বিনিময়ে বই ছেপেছেন আবার ফলাও করে প্রচার করছেন - তারা নতুনদের উৎসাহিত করছেন।
নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে আবার লঙ্ঘনও কম হয়নি। প্রতিদিন ধুলোবালির ভিতর দিয়ে পাঠকদের পথ চলতে হয়েছে। হকারদের উৎপাতও কম হয়নি।
অনেক আশার দিকও রয়েছে এই মেলায়। জনপ্রিয় লেখকদের পাশাপাশি নতুন লেখকদের কিংবা কম জনপ্রিয় লেখকদের ভালো বইগুলো এবার পাঠক কিনেছেন আগ্রহ সহকারে।
একটা পরিবর্তন বলা যেতে পারে এটাকে। প্রকাশনার মান রক্ষার ব্যাপারে লেখক প্রকাশক অনেক বেশি যত্মবান ছিলেন এবার। মিডিয়ার প্রচারণা ও ছিল চোখে পড়ার মতো। শেষদিকে পিলখানা ট্রাজেডি আমাদের গোটা মাসের আনন্দে বিষাদের সুর বাজিয়ে দিয়েছে। আর সেই শোককে বুকে ধরে শেষ হয়েছে এবারের বইমেলা।
প্রবাসী লেখকদের উপস্থিতি এবারের মেলায় ছিল উল্লেখ করার মতো। শুধুমাত্র বইমেলাকে কেন্দ্র করে দেশে ফেরা , ভাষার জন্য এমন মমত্ববোধ আর কোথাও আছে বলে জানা নেই।
আগামী বইমেলা যেন আরো বড় করে অনুষ্ঠিত হয় -এটাই আমার প্রত্যাশা। আমি মনে করি, বাংলাদেশে একটি বই বাজার থাকা দরকার। যেখানে সারা বছর পাঠক ঘুরে ঘুরে বই কিনতে পারে।
পরিবারের সবাইকে নিয়ে বই নেড়েচেড়ে দেখতে পারে। নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে স্টল বরাদ্ধ না দিয়ে সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে স্টল বরাদ্ধ দেয়া দরকার। বইমেলার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা করা যেতে পারে । এতে মেলার উপর চাপ কম পড়বে। সাধারণ পাঠকদের জন্য পাঠককুঞ্জ করা যেতে পারে।
অনেক সময় নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা একটু বিশ্রামের জন্য হন্যে হয়ে ঘোরে। কিন্তু কোন বসার জায়গা পান না। পাঠককুঞ্জ করা হলে তারা বিশ্রাম নিয়ে আবার বই কিনতে বের হতে পারবেন। বাংলা সাহিত্য আরো বেশি করে বিদেশী ভাষায় বিশেষ করে ইংরেজিতে অনুবাদ হওয়া দরকার। তাহলে হয়তো আমাদের কবি সাহিত্যিকের গলায় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার শোভা পাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।