বুকের ভেতর বহুদূরের পথ.........
আমরা সিভিলিয়ান বা সাধারণ জনতা বিক্ষুদ্ধ হলে বা দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কী করি?
- শিক্ষক সমাজ ক্লাস বর্জণ বা আমরন অনশন করি
- শ্রমিকরা ধর্মঘট করি, গাড়ি ভাংচুর করি, রাস্তা অবরোধ করি
- ছাত্ররা ধর্মঘট করি, গাড়ি ভাংচুর করি, রাস্তা অবরোধ করি, শিক্ষকদের অপমান করি অথবা প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলাই
- সরকারী চাকুরীজীবিগণ চায়ের কাপে ঝড় তুলি
- প্রাইভেট বা মাল্টিন্যাশনালের কেরাণীরা ফিসফিসিয়ে ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের কাছে মনের ক্ষোভ প্রকাশ করি
কিন্তু 'অস্ত্রধারী'গণ আমাদের থেকে একেবারেই আলাদা। তাদের কিছু বলেনা, কিছু করেনা, ভাব দেখায় 'অল কোয়ায়েট অন এভরি ফ্রন্ট'। কিন্তু হঠাৎ একদিন হাতে থাকা অস্ত্রের গরমে এমনই ফুঁসে ওঠে যে দেশের ভিত্তিমূল কেঁপে ওঠে, মানচিত্র নিয়ে খাবলা খাবলি শুরু হয়।
যখন অস্ত্রধারীরা বিক্ষুদ্ধ হয় বা দেয়ালে তাদের পিঠ ঠেকে যায় তখন -
- নির্বিচারে গুলি করে সাধারণ মানুষ হত্যা করা হয়
- নির্বিচারে নিজেদের নেতৃবৃন্দ এবং তাদের পরিবারের নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়
- দেশের রাজধানী এবং এর অধিবাসীদের দীর্ঘসময় জিম্মি থাকতে হয়
- দেশের প্রধাণমন্ত্রীকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে হয়
- মন্ত্রী এম পিদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাদা পতাকা হাতে আলোচনায় বসতে হয়
- পাহাড় সমান অপরাধ থাকার পরেও সরকারকে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দিতে হয়
- মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিতে হয়
- সর্বোপরি দেশের আপামর মানুষকে নানারকম গুজবের মাঝে এক অজানা আশাংকার মধ্যে সময় কাটাতে হয়
কাজেই যে 'অস্ত্রধারী'রা এত কিছু ঘটিয়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে (যেটা আমরা সাধারণ মানুষ ইচ্ছে করলেও পারিনা) তাদেরকে একটু তুষ্ট রাখা কি বুদ্ধিমানের কাজ নয়? যে অস্ত্র দিয়ে মাত্র ১ দিনে শতাধিক আর্মি অফিসারকে হত্যা করা যায় (মেজর জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার সহ) সে অস্ত্র যারা বহন করে তাদের পরিবার হয়ত অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটায়। ছেলেমেয়েরা সুযোগ পায়না ভাল পড়ালেখার।
আর চোখের সামনে চকচকে গাড়ি হাঁকিয়ে চলে যায় ব্লাডি সিভিলিয়ান!!! তাই তাদের মন হয়ত কখনো কখনো বিদ্রোহী হয়ে উঠতে চায়, ইচ্ছে করে হাতে যখন আছেই অস্ত্র দেই সব কিছু শেষ করে।
আবার মধুর ভাগ, তা যৎসামান্য হলেও পেলে 'অস্ত্রধারী'রা খুশী থাকে। জাতিসংঘের শান্তি মিশনে গেলে আর্মির একজন সাধারণ সৈনিক মোটামুটি ১০ লাখ টাকার মত পায়। এতে তারা মহাখুশী। কিন্তু হায়! এ সুযোগ সব 'অস্ত্রধারী'দের জন্য নয়।
এক দেশে দুই নিয়ম দেখে তারা ফুঁসতে থাকে।
তাই বলি 'অস্ত্রধারী'দের তুষ্ট রাখুন। তারা বেশী কিছু চায়না, চায় পরিবার নিয়ে খেয়ে পড়ে বাঁচতে আর চায় মধুর ভাগ পেতে (অল্প হলেও)। দেশের মানুষের যদি একটু কষ্ট হয় হোক, কিছু ব্রীজ কালভার্ট কম বানানো হোক, উন্নয়নের জোয়ার না হয় একটু কমই হলো তারপরও 'অস্ত্রধারী'রা সুখে থাকুক, দেশের শান্তি শৃংখলার স্বার্থে। নাহলে হাতে থাকা মারনাস্ত্রের গরমে আবার আসতে পারে আরেকটি রক্তাক্ত ২৫।
নোটঃ 'অস্ত্রধারী' বলতে সকল আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সাধারণ সৈনিকদের বুঝিয়েছি।
পাদটীকাঃ এখন ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র হলেও পুন্জিভূত ক্ষোভ না থাকলে এত বেশী লোককে এক সাথে ক্ষেপিয়ে তোলা সম্ভব নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।