আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাবাশ সোনার ছেলেরা



ক্ষমতার পালা বদল হলেই শুরু হয় সাইনবোর্ড বদলের পালা। বিশেষ করে ছাত্র রাজনীতি কেন্দ্রীক মাস্তানী, টেন্ডারবাজি, দখলবাজির ঘঠনা একটি স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়। যতবার যে দল ক্ষমতায় এসেছে ততবার একই ঘঠনা ঘঠেছে । সর্বশেষ জোট সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় এই চিত্রটি মারাত্বক আকার ধারণ করেছিল। দেশে আবার সেই পুরানো চিত্র ভেসে উঠেছে।

সরকারের বয়স এখনো মাত্র ১ মাস। তাতেই সরকারী দলের ছাত্র সংগঠনের অপকর্মে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। সম্প্রতি অস্ত্রধারী সোনার ছেলেদের মহড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সংবাদে “গুলি কর, গুলি কর” শব্দের মিছিলে দর্শকদের মুগ্ধও করেছে আবার ২৮ অক্টোবর ২০০৬ এর পল্টনের জামাতি চেহারার “বৃষ্টির মতো গুলি কর” চিত্রটি স্মৃতিতে আনতে পেরেছে । সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে যখন মিডিয়াগুলি সরকারকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছে তখন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তির মুখে এমন বাণী শোভা পেয়েছে তাতে মনে হয় সোনার ছেলেরা বলিহারি কাজই করেছে। বরং মিডিয়াগুলি ভুল করেছে।

তাহলে চলতে থাকুক দেখি আমাদের সোনার ছেলেরা কত বাহারি খেল দেখাতে পারে। একটা দিক অবশ্য ভালো যে এসব ঘঠনার জন্য বিরোধী শিবিরের অভ্যন্তরীন কোন্দল বলার চেষ্টা চালানো হয়নি। ইতিপূর্বে আমরা সোনার ছেলেদের ধর্ষণের সেঞ্চুরির খবর শুনেও অভ্যস্থ ছিলাম। সরকার গঠনের ১ দিন পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি নিজের নির্বাচনী এলাকা সফরের সময়ে করা মন্তব্যে মানুষ বিস্মিত হয়েছিল। দুপুর ২টায় এটিএন বাংলার সংবাদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রির যে চেহারা দেখানো হয়েছিল পরে তা সেন্সর হয়েছিল বোধকরি।

তারপরে বেশকিছু দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রিকে আর মিডিয়ার সামনে কথা বলতে দেখা যায়নি। যথাসম্ভব উপর থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। বর্তমানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রি বাবরীয় কায়দায় (মাথা ঝাঁকিয়ে, জেল লাগানো চুল, ইংরেজী বাংলা মিলিয়ে কথা বলা) মাথা হেট করে যেভাবে কথা বলে চলেছেন তাতে আবার পুরানো কাসুন্দি ঘাটার সময় চলে এসেছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রি তানজিম আহমেদের বাবা তাজউদ্দিন আহমেদ ও চাচা আফসার উদ্দিন আহমেদের মন্ত্রিত্বের দশায় পতিত হয় কি না এমন আশংকা থেকেই যায়। তুলনামূলক অন্যান্য অরো অনেক মন্ত্রির মতোই তিনিও কিছুটা নাবালক।

সম্প্রতি সোনার ছেলেরা ছাত্র ইউনিয়নের মত ছোট সংগঠনের উপর চড়াও হয়েছে। এখানে কোন হল দখলের বিষয় অছে বলে শুনি নাই। কেবল অছে মাস্তানী জাহির করা, আমরা (সোনার ছেলেরা) ছাড়া আর কেউ রাজনীতি করতে পারবে না এমন বাকশালী আচরনের নমুনা । জেএমবি নামক জঙ্গি ধরা পরার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রি নাগরিক কমিটি করার ঘোষণা দিয়েছেন, প্রস্তাবটি নিশ্চয়ই ভালো। কিন্তু আইন শৃংখলা বাহিনীর ভুমিকা তাতে কেমন থাকবে? এইসব কমিটিতে আওয়ামীলীগের বাইরে কেউ জাযগা পাবে এমন আশা করার সম্ভাবনা থাকবে কী? কৃতিত্ব দেখানোর চেষ্টায় আওয়ামীলীগ বাকশাল হতে বাধ্য হবে।

বড় কথা হচ্ছে যেখানে নাগরিক কমিটি সক্রিয় থাকবে সেখানে বোমাবাজি, চাঁদাবাজি হলে নাগরিক কমিটির কোন জবাব দিহিতা থাকবে কি না, কিংবা কার কাছে। আইন শৃংখলা বাহিনীর সেখানে কিছুটা দায়িত্ব কমে যাবে কি না। এমন অনেক প্রশ্ন দেখা দিবে নিশ্চয়ই। তবে নানান কায়দায় সোনার ছেলেরা তাদের মওকা হাসিল করবে আর মন্ত্রিরা বলিহারি দৃশ্য উপভোগ করবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।