অ্যালার্জি হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য ও ওষুধের ভীষণ প্রতিক্রিয়া ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। হাঁচি হলো এবং নাক দিয়ে পানি পড়ল, এটা কোনো রোগ হলো? প্রথম প্রথম কেউই এ লক্ষণগুলোকে রোগ বলে মনে করেন না। সবাই স্বাভাবিক ঘটনা বলে মনে করেন এবং মনে করেন আপনা-আপনিই সেরে যাবে, এটা কিন্তু যখন-তখনই হচ্ছে। বিশেষত পুরনো জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে গেলে বা ফুলের গন্ধ নেওয়ার সময় বা ফুলের বাগানে পায়চারি করার সময় হাঁচি বা নাক বন্ধ হয়ে যায় তখন এ লক্ষণগুলোকে রোগ হিসেবে ভাবতে শুরু করেন।
এরপর নিজে নিজেই দু-একটি এন্টিহিস্টামিন খেতে শুরু করেন। এন্টিহিস্টামিন খেলে অবশ্য রোগের লক্ষণ কিছুটা উপশম হয়। কিন্তু যখন বার বার হয় তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তখন এন্টিহিস্টামিনের পাশাপাশি স্প্রে আকারে স্টেরয়েড নাকের নাসারন্ধ্রে ব্যবহার করতে বলেন। এতে অবশ্য রোগী আগের তুলনায় অনেক বেশি ভালো অনুভব করেন।
কিন্তু দুঃখ হলেও বাস্তব সত্য যে যতদিন নেসাল স্টেরয়েড ব্যবহার করেন তত দিনই ভালো থাকেন, যেই নাকের স্প্রে বন্ধ করেন তার সঙ্গে সঙ্গে না হলেও কিছু দিন পরই শুরু হয় তার সেই পূর্বাবস্থা। এগুলো হলে আপনি অ্যালার্জিজনিত রোগে বিশেষত অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগে ভুগছেন বলে ধরে নিতে হবে। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগটি হলো অ্যালার্জিজনিত নাকের প্রদাহ। উপসর্গগুলো হচ্ছে অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া। কারও কারও সারা বছর আবার কারও কারও ঋতুনির্ভর এ রোগের লক্ষণগুলো দেখা দেয়।
এই রোগের সঠিক চিকিৎসা না নিলে অ্যাজমাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এলারজেন পরিহার : যখন অ্যালার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ওষুধ প্রয়োগ : ওষুধ প্রয়োগ করে সাময়িকভাবে অ্যালার্জির উপশম অনেকটা পাওয়া যায়।
অ্যালার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি : অ্যালার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বিশেষত উন্নত দেশগুলোতে ও পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।
বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অবিহিত করেন। এটাই অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই সময়মতো অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস, সহযোগী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা। ফোন : ০১৭২১-৮৬৮৬০৬
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।