আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“ফাইবার টু দি হোম” (FTTH)--- প্রেক্ষিত বাংলাদেশ। ( শেষ পর্ব)



এইত কয়েকদিন আগের কথা, ২০০৫ সালের শুরুতেও ইউটিউবের যাত্রা শুরু হয়নি। আর আজ ইন্টানেটের একটা বিশাল ব্যান্ডউইডথ ব্যায় হচ্ছে এই ইউটিউবের পেছনে। বাংলাদেশে যারা আছেন তাদের অনেকেই হয়ত ইউটিউবের আসল মজাটা টের পাননা। খুব কম ভিডিওই আছে যা ইউটউবে পাওয়া যায়না। একটা ভাল ইন্টারনেটের কানেকশন থাকলে ডাউনলোড করে ভিডিও দেখার কষ্টটাই চলেযায়।

যখন যা মনে চায় ইচ্ছামত দেখে নেয়া যায়। এধরনের আরো অনেক আপ্লিকেশন আছে যার পুর্ণসুবিধা থেকে আমারা বঞ্চিত শুধুমাত্র হাই স্পীড ইন্টারনেট কানেকশন নেই বলে। এই সমস্যার সমাধানের একটা সম্ভব্য প্রযুক্তির (FTTH) কথা লিখেছিলাম গতপর্বে। আজ আরো দুএকটি কথা বলে শেষ করতে চাই। PON টেকনোলজি নিয়ে কিছু কথা না বললে লেখাটা এগুচ্ছেনা।

PON মানে Passive Optical Network। সাধারণত যেসব ডিভাইসে পাওয়ার লাগেনা তাদেরকে প্যাসিভ ডিভাইস বলে। তার মানে এমন একটা অপট্যিকাল নেটওয়ার্ক যাতে পাওয়ার লাগে না। তবে PON ট্যেকনোলজির কোন ডিভাইসেই পাওয়ার লাগে এমননা। একধরনের স্পিলিটার, যা এই নেটওয়ার্কের প্রাণ যার পাওয়ার লাগেনা ফলে রাস্তাঘাটে বা বিদ্যুতের খুটির সাথে স্থাপন করা যায়।

এটা অনেক গুরুত্ত্বপুর্ণ ব্যাপার কেননা এতে নেটোয়ার্কের খারচ অনেক কমে যায়। যদি পাওয়ার লাগত তবে তার জন্য একটা ঘর লাগত বা নুন্যতম একটা শেল্টার লাগতো আবার শহর জুড়ে পাওয়ারের ব্যবস্থা করাও একটা ঝক্কির ব্যাপার। এবার আসুন সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করি PON প্রযুক্তি ব্যাবহার করে কিভাবে একটা FTTH নেটওয়ার্ক তৈরী করা যায়। OLT (Optical Line Terminal) যেটা নেটওয়ার্কের মুল ডিভাইস সেটা স্থাপন করাহয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের নিজেস্ব অফিসে। সেখানেই এই ডিভাইসের সাথে যুক্ত করা হয় ইন্টারনেট, টিভি, ভয়েসের সিগলান।

সেখান থেকে একটামাত্র ক্যেবলই বের হয়ে চলেযায় গাহকদের উদ্দ্যেশে। এই ক্যেবলের সাথেই বিভিন্ন স্থানে স্পিলিটার বসিয়ে শাখা প্রশাখা বের করা হয়। পরে সুবিধামত যেকোন একটা ক্যাবল আপানার বাসার সংযুক্ত করলেই আপনি সবধরনের সেবাই পেতে পারেন যা OLT যুক্ত করা হয়েছিল। আপনার বাসায় থাকবে একটা ONU (Optical Network Unit) যাতে ভিন্ন ভিন্ন সার্ভিসের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পোর্ট থাকবে। ব্যাস সব কাহিনী খতম।

এবার আসাযাক খরচের কথায়। খরচের ব্যাপারটা অনেক বেশি আপেক্ষিক হলেও কিছু ধারনা করা যায়। যেমন বর্তমানে একটা ONU ১০০ ডলারের নিচে পাওয়া যায়। আশা করাযায় ভবিষ্যতে তা আরো কমে যাবে। আবার OLT একটা নেটওয়ার্কের কেন্দ্রীয় ডিভাইস হিসাবে অনেক সস্তা।

আর বাকীগুলো সব প্যাসিভ ডিভাইস এবং ফাইবার অপটিক ক্যেবল যার দাম বেশিনা। একই সাথে ভিডিও, ডাটা এর কানেকশন হিসেবে আমার মনে হ্য় FTTH অনেক সাশ্রয়ী হবে। বোনাস হিসেবে অনেক বেশিগতি সম্পন্ন ডাটা কানেকশন পাওয়া যাবে। অনেক ধরনের নতুন নতুন সেবা প্রদানের সম্বভনাও সৃষ্টিও হবে যেমন ভিডিও অন ডিমান্ড, অন লাইন গেমিং, ই-ডক্টর, দূর শিক্ষন সহ আর অনেক কিছু। আমাদের দেশে রোগ ব্যাধির যে প্রকোপ এবং ডাক্তারের যে আকাল তাতে ই-ডক্টর ধারনাটা আসলেই কাজের।

চাইলে আপনি ঘরে বসে, যেকোন সময়ে ভিডিও কনফারেন্সও সেরে নিতে পারেন দেশি বা বিদেশি কোন ডাক্তারের সাথে। কোথায় শুরূ করা যেতে পারে? আজকাল আমাদের দেশে বড় বড় হাউজিং প্রকল্প আছে। সেখানে আজথেকেই খুবসহজে শুরু করে দেয়া যেতে পারে। পরে আস্তে আস্তে সারা শহরে এবং গ্রামে ছড়িয়ে দেয়াযায়। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও শুরু হয়ে গেছে FTTH এর সফল পথচলা।

তাহলে আমরা কিসের জন্য বসে আছি? সরকারের করনীয়ঃ আমাদের দেশের সরকারের কাছথেকে খুববেশি কিছু আশাকরাটা বোকামি তবে তাদেরকে যেটা করতে হবে সেটাহোল বৈত্যুতিক খুটিগুলো ব্যাবহারের একটা নীতিমালা প্রনয়ন করা। কারন এখন এগুলোর যথেচ্ছা ব্যাবহার হচ্ছে। আপাতত এর বেশিকিছু তাদের না করলেও চলে। আবশ্যই কোনধরনের ছুতো দেখিয়ে বাঁধাদেয়া চলবেনা। আমার বিশ্বাস খুব দ্রুত শুরু হবে আমাদের দেশে FTTH এর পথচলা।

আমি স্বপ্নদেখি সেই সোনালী ভবিষ্যতের যেখানে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রচারনার বুলি নয় একবারেই সত্যি হয়ে উঠবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.