উন্মাদ খুলির পৃষ্ঠাগুলি
সুপাচ ভগৎ
যে আজ এসেছিল তাঁর পায়ের নূপুর শুনেছিলাম কালকে, কাঠখোদায়ের মধ্যে বাহুর নগ্নতা বেয়ে আমি সিঁড়িঘর পর্যন্ত সঙ্গ দিয়েছিলাম।
দরোজা খুলে সে টিপ খুলতে খুলতে আয়নার ভেতর চলে গেলো।
ফিরে এসে দেখি আমার দেয়ালগুলা কাজল চাহনি। বিছানার উপর গতকালের চাঁদ। আলো ধুয়ে মুছে জানালা।
তাকে দৃষ্টিতে পালতুলে দেখি, আমার গভীর রাত ডুবে যাচ্ছে
চেয়ারের হাতলে, কফি মগে।
চেনা জগতে সুপাচ ভগৎ আমি, আমার ডমরুধ্বনি নগরের ইটের খোপে খোপে বৃষ্টি ফোটা, খুব শাদা। কালো চোখের প্রেতনিগুলি চুলখুলে দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখে দিন রাত। আমি পাহাড়ের ঢালে ঢালে সবুজ বৃক্ষগুলোর ছালে চিন্তার বৈঠালগ্ন স্বপ্ন গেঁথে রাখি।
জনমানসের ভেতর পুকুরগুলো শুকিয়ে গেছে, নদীঘাটে এখন ব্রিজ।
এই সময়ে লুট হয়ে যাওয়া সজীবতা ফ্লাটগুলির খুপরিতে খুপরিতে সোফাকাম বেড।
আমি বেডরুমের রাহুগ্রাস। পুজোর সন্ধ্যায় আমার হৃদপিন্ড মাটিতে পুঁতে রাখি। ওকে লুকিয়ে রাখি মাটির ঘ্রাণে। ও বুদ হয়ে গেলে আমি নিমগ্ন নীলের টেবিলে চোখদুটো খুলে জানানায় দাঁড়ায়, অনুভব করি না দেখা তাঁর পাঁজর ধ্বনিহীন জলের স্বভাব।
জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দের ভেতর কামিনী ফুলের গন্ধ হয়ে সে হাসে। তাকে আমি টের পাই নিস্তব্ধতায়, মন গভীর একলাতে তাঁর অবয়ব ফুটে ওঠে বাথরুমে, রান্নাঘরে, বইয়ের শেলফে তাঁর চুলের গন্ধ লেপটিয়ে থাকে।
সুপাচ ভগৎ অচেনা জগতে সাপ দেখে, চেনা জগতের স্বভাব বিবর্জিত তাঁর ফণা।
সে ফণার ভেতর ছোবলের শিল্পকলায় রঙ ঢেলে দেয়, কালো দেয়ালে শাদা পাখি আঁকে, ডানা আঁকে। সব শেষে মাটির হৃদপিন্ড ঢুকিয়ে দেয় পাখিতে।
পাখি উড়ে যায় আকাশে।
শিহরিত তারকাটা
যেখানে নদীর ঘাট ধুয়ে গেছে, শেভ ক্রিম থেকে কোন গন্ধ
ওড়ে না ওখানে, বালিশ কুচকানো মুখের
দিকে তাকিয়ে রয় সকালের ধুয়া উঠা কফি মগ, গোসল খানা
দুপুর গড়িয়ে আলগা হয়ে যায় প্রিয় সন্ধ্যার গলি
নিরুপমা সেই ধুলোর শহরে কামাক্ষী পায়েলে দেখো নিঝুম আঁধার,
বধুবরণের চোখ থেকে ঝরছে মধুবাণ,
শিরার ভেতর দুলছে শালবন, শিহরিত তারকাটা
পাতার ফাঁকে মুখ সারি সারি সবুজ ঘাস ছুঁয়ে আছে আলতা
পা, সোনার বরণ দেহে মেঘ উরুবন
গা ছমছম নিস্তব্ধতা চুইয়ে পড়ছে পাখি শিকার, ধনুকের
নিখাদ চুম্বন থেকে দেয়াল
চিত্রে ঢুকে যাচ্ছে ঝুমঝুম বৃষ্টিপাত
আজ আমি ডুবন্ত ঘ্রাণের ভেতর ছড়িয়ে দেবো সুগন্ধ ফসলের মাঠ
লাঙলের ফলা থেকে উড়িয়ে দেবো বহুগামী ঠোটের আহার
প্রাণ সখার তিল সৌন্দর্য
যেখানে নৌকার মায়াবী গলুই ছুঁয়ে থাকে
সেখানে বাহুর সীমাহীন মগ্নতার পেরেক বিদ্ধ ঘাটে দেখবো
কলসের সুনির্মিত গলা, দেখবো না উড়ছে হেমন্ত
সুযোনীর কোমল ঢালে ফুটে উঠুক সুষমার রিক্ত সোহাগ,
আমি বেহালার তারে তারে
সুনীড় বাসনার কুয়াশা মন্থন রাত্রির অর্ন্তবাসে ঝুলে রবো
মৃদু হাওয়ায়, কুমারী পাতার সবুজ ঠোট থেকে -
খুলে দেবো ডানা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।