সর্প বিষয়ে আমাদের মধ্যে হাজার রকমের ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। এর মূলে কাজ করে সর্প ভীতি। গ্রামাঞ্চলে এর প্রভাব আরো বেশী। এসব ভ্রান্ত ধারনার উপর বিশ্বাস স্হাপন করে আমরা প্রতিনিয়তই ক্ষতিগ্রস্হ হই। অনেক সময় অনাহুত মৃত্যুও ডেকে আনি।
অথচ সর্প সম্পর্কে সাধারন প্রাথমিক ধারনাগুলো জানা থাকলে আমরা অনেক অনাবশ্যক বিপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারতাম।
সর্প বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি বছর আমাদের দেশে যত লোক সাপের কামড়ে মারা যায় তার শতকরা আশি ভাগই নির্বিষ সাপের কামড়ে ভয়ে হার্টফেল করে। এখানে ভীতিটাই সবচেয়ে বেশী কাজ কর। সাপে কামড়ালেই আমরা ভাবি বিষধর সাপে কামড়েছে। সেজন্য আমাদের প্রথম কাজ হলো আক্রান্ত ব্যাক্তির মনোবল চাঙ্গা রাখা।
ডঃ আলী রেজা খান এর "চেক লিষ্ট: ওয়াইল্ড লাইফ অব বাংলাদেশ" বই থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে মোট ৭৯ প্রজাতির সাপ রয়েছে, তার মধ্যে মাত্র ২৭ প্রজাতির সাপ বিষধর। এই ২৭ প্রজাতির মধ্যে আবার ১২ প্রজাতির সাপই থাকে সমুদ্রে। যার মানুসের সংস্পর্শে আসার তেমন কোন সম্ভাবনাই নাই। বাকি ১৫ প্রজাতির সাপের মধ্যেও আবার বিষের তিব্রতা সমান নয়। যেসকল সাপে কামড়ালে মানুষ মারা যেতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে পাঁচ প্রজাতির কেউটে, গোখরা, রাজ গোখরা বা শংখচুর ও চন্দ্রবোরা প্রধান।
তাও যদি ভাল ভাবে কামড়ায় এবং পর্যাপ্ত বিষ ঢেলে দেয়।
অনেকে মনে করেন সাপ প্রতিহিংসাপরায়ণ। কেউ সাপকে আঘাত করলে সাপ রাতে আঘাতকারীকে চিনে কামড়ে দেয়। এই কথার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কারন সাপের স্বরনশক্তি নেই।
গ্রামাঞ্চলে এরকম কথাও প্রচলিত আছে যে, গুই সাপে কাউকে থুথু ছিটালে বা দাড়াশ সাপ লেজ দিয়ে আঘাত করলে সেই জায়গায় পচন ধরে যায়। আসলে এগুলো সত্য নয়।
মনে রাখা প্রয়োজন, সাপ সহজে কাউকে কামড়াতে উদ্যোগী হয় না। প্রথমে আত্নরক্ষার চেষ্টা করে পরে বাধ্য হলে কামড় দেয়। তবে ডিম দেয়ার সময় ভুলেও সাপের কাছে যাওয়া ঠিক নয়।
কারন এ সময় সাপ খুব হিংস্র থাকে।
মূল কথা হচ্ছে, সাপে কামড়ালে আতংকিত না হয়ে, যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।