যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
আমার জন্ম হয়েছে নারী-পুরুষের জৈবিক ক্রিয়াকর্মের ফলসরূপ। বিষয়টা আমার কাছে ধর্মীয় মনে হয় নাই। তবে ভ্রুণ যখন উসখুস করে জরায়ুতে আছড়ে পড়লো সেই ঘনীভূত কামাদ্রেক ক্ষণে "ওহ মাই গড" বোধহয় উচ্চারিত হয়েছিল সংগমরত যুগলের। বিষয়টাতে ইশ্বরের স্মরিত ও প্রতিভাষিত উদ্ধৃতি উচ্চারণের স্ফুর্তি সহায়ক বলেই মনে হয়েছে।
জন্ম রহস্যে আমি অদৃশ্য ছিলাম কার্যত কোন রোল প্লে থেকে তবে ইশ্বরের ভূমিকাকে শৈশবের নিদৃষ্ট একটা গন্ডী পর্যন্ত অপ্রবিষ্ট দেখেছি - কারণ তখনও আমাকে ইশ্বর বোঝানো যায় না।
সেহেতু আমার জন্ম হয়েছে একজন ইশ্বরের পরিচয়বিহিন মানব হিসাবে এবং সেসূত্রে প্রতিটা মানুষকে জন্মগতভাবে নাস্তিক বলে মনে করি।
ইশ্বর যখন আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় তখন আমি বৃক্ষ, পশু, ঝড়, সূর্যের সাথেও পরিচিত হয়ে উঠি। অদৃশ্য বাতাস, সুখ, দুঃখের মত ইশ্বরের অস্তিত্বকেও উপস্থাপন করা হয়। এই সকল কাঠামোগত পাঠদান প্রক্রিয়ায় ইশ্বর একটা অর্জিত জ্ঞান এবং নিরবিচ্ছিন্ন চর্চার বিষয় হিসাবে ধারণা প্রদান করা হয়।
সংগত কারণে ইশ্বর আমার কাছে পাঠের একটা বিষয়, যেমন আরো অনেক ব্যক্তি, সৃষ্টি ও রহস্যাবৃত ঐতিহাসিক ঘটনাও।
প্রত্নকদের মত ক্রমাগত চিহ্ন খুঁজে বেড়ানো এবং জোড়াতালি দিয়ে খন্ডিত ও আপাতত সিদ্ধান্তে উপনীত হবার সাময়িক অবস্থান।
ক্রমবিকাশমান ও পরিবর্তিত অধ্রুব ঘটনাচক্র ও অভিজ্ঞতার সঞ্চালনে ইশ্বরের সঠিক অবস্থান ও ধারণা আমার ভেতরে প্রস্তুত হয়নি। পৌরানিক গল্প ও গাঁথার মত কল্পনায় রঙ চড়ানোর অপার স্বাধীণতা ইশ্বরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে।
বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ইশ্বর সম্পর্কিত জ্ঞান যখন আমার জানা হলো, সম্ভবত এইট/নাইনে, ইশ্বরকে আমি খারিজ করে দিলাম। যখন ক্রিষ্টানের ইশ্বর এখন মুসলমানদের হয়েছে দাবী উচ্চারণের গল্প শুনলাম - তখন বিষয়টা আমার কাছে স্রেফ খেলো, অশালীন ও কুৎসিত মনে হলো।
ইশ্বর ছিনতাইয়ের এই ঘটনাটা প্রথম মুসলমানরা করেছে তা নয়। এর আগে খ্রিস্টানরা ছিনতাই করেছে ইহুদীদের ইশ্বর।
একজন কল্পিত ইশ্বরের প্রয়োগ ঐতিহাসিক আমল থেকেই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিলো - এই উপলব্ধি হয় আমার আরো পরে। এবং এই ইশ্বরের ধারণাটা ব্যক্তির দুর্দান্ত ক্ষমতার অধিকারী হবার লিপ্সা ও কারো কারো তেমন শীর্ষে উত্তরণের মাধ্যমে বিকশিত হয়। কারণ ইশ্বরের ধারণা কোন শিশুকে যদি কমিউনিকেট করা না হয় তার ভেতরে সৃষ্টি ও এর কারণ সম্পর্কে নিজস্ব চিন্তাভাবনা উৎপন্ন হবে এবং তেমন করেই আজকের ইশ্বরের আবিষ্কার সম্পন্ন হয়েছিল অতীতকালে।
মূলত তখন থেকেই একজন ইশ্বরকে আমি খুঁজে পেয়েছি। সে পুরোটাই আমার মত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।