উপমহাদেশের বিখ্যাত মরমী সাধক হাসন রাজা। তাঁর সৃষ্ঠি মরমী গান আজো দেশের সংগীত পাগল মানুষকে আলোড়িত করে। হাসন রাজার গান গেয়ে অনেকে হয়েছেন বিখ্যাতও। বাংলা গানের মরমী অধ্যায় জুড়ে এ অমর গুণী ব্যাক্তিটির অবস্থান থাকলেও রাষ্ঠ্রীয়ভাবে তাঁকে কোনো স্বীকৃতি দেয়া হয়নি আজো। বছর আসে বছর যায় কিন্তু তাঁর জন্ম ও মৃত্যু খবর রাখেনা কেউই।
মরমী কবি হাছনরাজার জন্ম সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া গ্রামে ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বরে। তাঁর পিতার নাম দেওয়ান আলীরাজা চৌধুরী এবং মাতার নাম মোসাম্মত হুরমত বিবি। জমিদার পরিবারে জন্ম হওয়ায় পিতার মৃত্যুর পর মাত্র ১৫ বছর বয়সে হাছনরাজা ১৮৬৯ সালে জমিদারিত্ব গ্রহন করেন। প্রায় ৫ লাখ ২৭ হাজার বিঘা জমির অধিকারী ছিলেন তিনি। তাই প্রথম জীবনে হাছনরাজা ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে উঠেন।
গানের আসর জমানো, গায়কী দল নিয়ে নৌকা ভ্রমন, নৌকাবাইচ, ঘোরদৌড়, পাখি শিকার ছিল তাঁর অন্যতম শখ। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ৪০ দিনের ব্যবধানে তিনি পিতা ও বড় ভাইকে হারান এবং সেসময় আসাম ও সিলেট জুড়ে ভুমিকম্পে ব্যাপক য়তি হয়। আর এসব কারনে হাছনরাজা ভোগ বিলাস ছেড়ে আধ্যাতিœক জগতে প্রবেশ করেন। শুরু হয় মরমী সাধনা। তাঁর রচিত গান জনপ্রিয়তা পায় চারদিক দিয়ে।
ব্যক্তিগত জীবনে হাছনরাজা ৫টি বিয়ে করেন। তিনি ৪ পুত্র ও ৪ কন্যার জনক ছিলেন। মরমী এ সাধক ১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
বর্তমানে হাছনরাজার বাড়িতে তাঁর সময়কালের তেমন কোনো স্থাপত্য নিদর্শন না থাকলেও আছে তাঁর ব্যবহার্য্য কিছু আসবাবপত্র। গেল বছর হাছনরাজার প্রপৌত্র দেওয়ান সামারিন এ বাড়ির দুটি কে ‘হাছনরাজা মিউজিয়াম’ প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কিছু দর্শনার্থী আসেন এ বাড়িতে। আর হাছনরাজা মিউজিয়ামে রাখা হাছনরাজার ব্যবহৃত জিনিসপত্র দেখে অভিভুত হন পর্যটকরা। পাশাপাশি এখনো পর্যন্ত রাষ্ঠ্রীয় কোনো উদ্যোগ চোখে না দেখে েক্ষাভও প্রকাশ করেন তারা।
বছরের পর বছর ধরে হাছনরাজার বাড়িতে পর্যটকরা আসলেও কোনো কিছু না দেখে বিফল মন নিয়ে ফিরতে হচ্ছে তাদের। সরকার স¤প্রতি হাছনরাজার বাড়িতে একটি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে।
আর এটি প্রতিষ্ঠা হলে দর্শনার্থীরা সামান্য সময়ের জন্য হলেও ডুব দিতে পারবেন মরমী এ কবির স্মৃতি গাঁথায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।