খুব সাধারন একজন মানুষ। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। সবসময় আশায় থাকি। আলোকিত সকালের প্রত্যাশায় চলি নিরবধি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন-রাজনীতি (ডেভেলপমেন্ট পলিটিক্স) যে বেশ খানিকটা এগিয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
আগে একটা সময় ছিল, দেশের উন্নয়নের প্রকল্পগুলি শুরু হত এক সরকেরের আমলে আর শেষ হত পরবর্তি সরকারের সময়। এতে করে দেখা যেত, উন্নয়নের ফিরিস্তি দেয়ার সময় পুরো ক্রেডিট নিত যারা কাজটা শেষ করেছে সেই সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন কুড়িল ফ্লাইওভার উদ্বোধন করছিলেন তখন একটা কথা বিশেষ ভাবে মনে হচ্ছিল, এই প্রথম কোনও মেঘা প্রকল্প যে সরকার শুরু করল সাফল্যজনকভাবে সেই একই সরকার তা শেষ করতে পারল। বিগত সাড়ে চার বছর বাংলাদেশে কি ঘটেছে তা বিশ্লেষণ করে দেখতে আমাদের নিঃসন্দেহে নজর দিতে হবে তার আগের নির্বাচিত বিএনপি-জামায়াত সরকার ও তৎপরবর্তী সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কর্মকান্ডের দিকে। বাংলাদেশ নানা সমস্যায় জর্জরিত এবং এখনও এদেশের অবকাঠামো রাতারাতি উন্নয়ন ঘটানোর পক্ষে অনুকূল নয়।
কিন্তু ২০০১ থেকে ২০০৮, এই দীর্ঘকাল বাংলাদেশ যেন ডুবেছিল এক অন্ধকারে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ছিল না, হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে মানুষ পার করেছে এই ক্রান্তিকাল। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হয়েছে। গ্রেনেড হামলা, আহসানুল্লাহ মাস্টার-আইভি রহমান হত্যা,আলোচিত গোপালকৃষ্ণ মহুরি হত্যাকাণ্ড, সর্বোপরি বাংলা ভাই- শায়খ রহমানের জঙ্গি কার্যকলাপ কি ঘটেনি সেই দিনগুলোতে? যদিও জঙ্গিবাদ দমনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তাদের সরকারের সমাপ্তিলগ্নে এসে একটু মনোযোগ দিয়েছিল, যার সুফল আজ আমরা পাচ্ছি। বরাবর এই ক্রেডিট পাবে সেনা সমর্থিত তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
রাজনীতি মানুষের রুটি-রুজির উন্নতি করবে, এমন আশা মানুষ ছেড়ে দিয়েছে। নেতা-নেত্রীরা সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করেন, এই বিশ্বাসও তাঁদের নেই। তবে মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে। দেশে শিক্ষার হার বেড়েছে। ভোটের রাজনীতিতে এর প্রভাব পড়বে আশা করি।
আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মানুষ ভেবেছিল হয়তো পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু বিগত চার বছরের পরিসংখ্যান তাদের সাফল্যের চেয়ে ব্যার্থতার পাল্লাকেই ভারী করছে ক্রমাগত। ক্ষমতায় আসার পরপরই বিডিআর বিদ্রোহ তাদেরকে টালমাটাল করে দেয়। আওয়ামীলীগ সংবাদপত্র ও সাংবাদিক নির্যাতনে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রথম চ্যানেল ওয়ানকে বন্ধ করল।
পরবর্তীতে আমারদেশ একাধিক বার বন্ধ এবং মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার ও নির্যাতন। সরকার বিরোধী সংবাদ সংস্থা দিগন্ত টিভি ও ইসলামী টিভিকে কোন আইনগত কারণ ছাড়াই বন্ধ করল। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান কে গ্রেফতার করে সরকার প্রকারান্তরে মানবাধিকারের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিল। সরকারের পুলিশ বিভাগ সবচেয়ে বেশি দুর্নিতিতে নিমজ্জিত। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্যাতনে পুলিশকে যথেচ্ছভাবে ব্যাবহার এর আগে কোনও সরকারই করেনি।
কোনও রাজনৈতিক দল না হয়েও হেফাজতে ইসলামের উপর যে নিপীড়ন চালিয়েছে সরকার, তা কোনও সভ্য দেশে কল্পনাও করা যায়না। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ অভিযানকে গনহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। 'অধিকার' সুনির্দিষ্টভাবে নিহত ৬১ জনের একটি তালিকাও করেছে এবং বলেছে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। যদিও নিরাপত্তার অভাবে এ তালিকা তারা সরকারের কাছে হস্তান্তর করেনি। একটা দেশ কতটুকু জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত হলে জনগণকে তারই দেশের সরকার এরকম পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে?
দুর্নিতিতেও এ সরকারের কর্তা ব্যাক্তিরা পিছিয়ে নেই।
পদ্ধা সেতু, হলমার্ক,ডেসটিনি,শেয়ারবাজার এর ঘটনাগুলো শুধুই এ সরকার সম্পর্কে হতাশার ইঙ্গিত দেয়।
ভোটের রাজনীতিতে এসবের প্রভাব অবশ্যই পড়বে। কিন্তু কথা হচ্ছে গতানুগতিক রাজনৈতিক যে ধারা বাংলাদেশে চলছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে জনগণ যে অন্ধকারে সে অন্ধকারেই পড়ে থাকবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।