এক জুনিয়র থেকে শুনলাম -আজ(০৫/০১/২০০৯) নাকি বুয়েটে মিছিল হয়েছে এবং আপাত দৃশ্টিতে তা শিক্ষকদের কোটা প্রথা'র বিরুদ্ধে আন্দোলন হলেও সেটা নাকি মূলত পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন। হাঁ ঈশ্বর!!কিছু ব্যাপার কোন দিন ই বুঝি বদলাবার নয়!!
স্বীকার কছ্ছি ব্যাপার খানা খতিয়ে দেখবার সুযোগ মেলেনি। বুয়েট থেকে পাস করবার পর যোগাযোগ বড় ক্ষীণ -জুনিয়র ছেলে পিলে যা শোনায় তাতেই হা-হুতাশ করি - সত্য ঘেঁটে বের করবার সুযোগ কই?
তবে ব্যাপারটা সত্যি হলে চিন্তার বিষয়। বুয়েটে গোটা পাঁচেক বছর যে সময় কাটিয়েছি-তার experience বলে মিছিল হলে পরীক্ষা না হওয়া ঠেকাবার কোন উপায় নেই-সে মাঠে পুলিশ মিলিটারি যাই থাকুক না কেন!পরীক্ষা তবে পিছাছ্ছেই!!!
অস্বীকার কছ্ছি না-ছাত্রাবস্থায় পরীক্ষা পেছানো বড় আনন্দময় এক ব্যাপার ছিল। আমি বিশেষ সুবিধের গোছের ছাত্র ছিলাম না- PL এ নাকমুখ গুজে পড়ে কোন মতে পাশ করে গেছি(আহা - এক রাত্তিরে তখন যতটা পড়ার চাপ নিতে হত ভাবলেও এখন শিউরে উঠি!)।
পরীক্ষার সময় তাই মিছিল দেখলেই(তা গোটা দশেক জন এর হলেও!)-বই পত্তর গুটিয়ে ব্রিজ খেলতে বসে যেতাম-আর যাই হোক পরীক্ষা আর হছ্ছে না!
এভাবে বিমলানন্দে সময় কাটানোর ঠেলাটা টের পেলাম পাশ করবার পর। ইন্টারভিউ দিতে যাই বিভিন্ন খানে - পরীক্ষার্থী যথারীতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের। খানিক আলাপ শেষ এ যখন ই জানতে চাই -"ভাই,আপনি কোন ব্যাচ এর যেন?"। প্রতিবার অবধারিত উত্তর-"আমি ওমুক ব্যাচ এর"(অর্থাৎ যা কিনা আমার থেকে ১ বা ২ ব্যাচ জুনিয়র!)। এবং একসময় খুব অবাক হয়ে আবিস্কার করি-বাংলাদেশ প্রকৌশল শিক্ষা পড়ানো হ্য় এমন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে বুয়েটের ব্যাচটিই সব চাইতে দেরিতে পাশ করে বেড়িয়েছে!অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর পরের এক-দু ব্যাচও এরি মধ্যে পাশ করে আমাদের সাথে চাকুরি'র লড়াইয়ে সামিল!পরীক্ষা দিতে আমাদের এতই অনীহা!!!
আমার মনে আছে -একবার এমন মিছিল যখোন হছ্ছিল-এক জুনিয়র খুব দুঃক্ষ করে আমায় বলেছিল-ভাইয়া,এবারও পরীক্ষা সময় মতন হলোনা।
বাড়িতে বাবা'র রিটায়ারমেন্ট হয়ে গেছে-সবাই তাকিয়ে আছে কখন আমি পাশ করবো-একটা চাকরি নেব-পরিবারের সবার দায়িত্ব নেব। আর এভাবে প্রত্যেকটা টার্ম ৬ মাস এর জায়গায় ৮-৯ মাস এ শেষ হয়। আর কদ্দিন এভাবে দিন গুনতে হবে-বলতে বলতে ছেলেটা সে দিন কেঁদেই ফেলেছিল। আমি কিছুই বলতে পারিনি তাকে সেদিন।
সেই সব ছেলেদের আজকেও কি আমার কিছু বলবার থাকতো?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।