বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d
নির্বাচনে জয়লাভ করায় আওয়ামীলীগকে প্রথমেই জানাই শুভেচ্ছা। স্বীকার করতেই হবে যে, এ নির্বাচনের ফলাফল দেখে দেশের মানুষ চমকে উঠেছে। আওয়ামলীগ যে সয়ং বিস্মিত হয়নি তা নয়। তারাও যারপর নাই বিস্মিত।
যাই হোক, নিরঙ্কুশ সংখ্যগরিষ্ঠতা নিয়ে তারা সংসদে গিয়েছে। শপথ নিয়েছে। আমরা দেশবাসী খুশি। এখন দেখার পালা। এখন জনগনের পাবার পালা।
নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা কিন্তু যেমন ভালো ঠিক তেমনি খারাপ। এটা এক ধরনের ফাঁদ। ভুল করার সম্ভবনা বেশী। সঠিক মাত্রায় গণতান্ত্রিক চর্চাটা অনেক সময় হয়ে উঠে না। একপেশে হয়ে যেতে পারে সব।
সুতরাং আওয়ামীলীগকে সেদিকে খেয়াল করে পথ চলা উচিত। তবে অবশ্য বহুদলীয় গনতন্ত্র থাকলেই যে গনতান্ত্রিক পথ উম্মোচিত হবে তাও নয়। এটা ইচ্ছা শক্তির ব্যাপার। রাজনৈতিক সদিচ্ছার ব্যাপার।
নির্বাচনের আগে অনেক আশা, আকাংখা, প্রতিশ্রুতি আমরা শুনেছি এই দলটির কাছ থেকে।
যেগুলো বিএনপি বা অন্য রাজনৈতিক দল গুলো কাছ থেকে পাওয়া কথা গুলোর চাইতে অনেক অনেক বেশী। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রধান হলো দ্রব্যমূল্যহ্রাস, দূর্নীতি দুরীকরণ, যুদ্ধপরাধীর বিচার, দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মন্দা দূরীকরণ, আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রতিশ্রুতি দিতে যেয়ে তারা জনসমুক্ষে এমন কিছু উক্তি করেছেন যেগুলো বাস্তবায়ন করা শুধু কঠিন না বেশ কঠিন। যে আর্ন্তজাতিক মন্দা চলছে তা থেকে তো বাংলাদেশ বাহিরে নয়। তাই তার ধাক্কাটা বাংলাদেশকেও সহ্য করতে হবে।
সেখানে ভর্তুকি দিয়ে হলেও দ্রব্যমূল্যে হ্রাস সম্ভব নয় সহসাই। আর হঠাৎ করে আবার দ্রব্যমূল্যের হ্রাস হলে কৃষক তার ন্যায্য দাম পাবেনা। ফলে অর্থনীতি হেলে পড়বে একদিকে।
এবার আসুক অবকাঠামোগত উন্নয়ন। শুধু ভৌত উন্নয়নের কথাই যদি চিন্তা করা হয় সেই হিসেবে যে প্রতিশ্রুতি গুলো আছে তার পিছনে যাবে অনেক সময় আর তার সাথে অর্থ।
সেই অর্থ জোগাড়েও রয়েছে সমস্যা।
যুদ্ধপরাধীর বিচার। এবারের নির্বাচনে তাদের প্রধান প্রতিশ্রুতি গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। মিডিয়াতে পেয়েছে ব্যাপক প্রচার। যার জন্য তরুন ভোটার, যারা প্রথমবারের মত ভোট দিয়েছে তাদের সবচেয়ে বড় অংশ আওয়ামীলীগের পক্ষে রায় দিয়েছে।
শুভ লক্ষণ। কিন্তু এই ইস্যুটি যেন এইবারই শেষ হয়ে যায়। এ বিষয়ে আওয়ামীলীগের কোন ভাবেই বঙ্গবন্ধুর বিচার কার্যের মত প্রলম্বিত করার অবকাশ নেই। আর তারা যদি এই ইস্যুটি তেমন আমলে না নেয় তবে সামনে তাদের জন্য কঠিন সময় আসছে সেকথা বোঝা যায়। প্রহসন মূলক লোক দেখানো বিচার লোকজন মেনে নিবে না।
আমরা জনগন আর পিছনে ফিরে দেখতে চাই না। বিএনপি এবং আওয়ামীলীগ বৃহৎ দুটি দলই তাদের নিজ নিজ শাসন আমলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, কালোটাকার প্রভাব, দলীয়করণ ইত্যাদি কাজের সাথে যুক্ত ছিল। কোন সন্দেহ নেই। আওয়ামীলীগ এবার নির্বাচনে জিতেছে তাই বলে তাদের দলীয় ইমেজ যে আগের চেয়ে ভালো হয়েছে তা নয় বরং গত সরকারের উপরে মানুষ বিরক্ত হয়ে ভোট দিয়ে তাদের। আর দুইবছরের অসাংবিধানিক তত্তাবধায়ক সরকারের কাছ থেকে আনুকুল্য পেয়েছে।
দুবছরে জারি হওয়া ১১৩ টা অধ্যাদেশ, যেগুলোকে এই নতুন সরকার বৈধতা দিবে। যা আগেই আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
যাই হোক, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা সংসদে থাকতে চায়। আর আওয়ামীলীগ বলেছে, বিরোধীদলকে নিয়ে কার্যকর সংসদ গঠন করতে চাই। দুটি উক্তিই এদেশের মানুষকে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।
সেই আলো যেন কখনই নিভে না যায়। একটা ভালো গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরী হোক। অপরাধী যেই হোক না কেন সে শাস্তি পাক। কারো প্রতি পক্ষপাত নয়।
দাঁত মুখ খিঁচিয়ে রাজনীতি করা আর বাংলাদেশের জনগন দেখতে চায় না।
সকল দলের সহ অবস্থানে কার্যকর হোক সংসদ আর উন্নয়নের সুবাতাস বইতে থাক এদেশের মানুষের ললাটে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।