আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এভাবে আর কত মানুষ প্রতারিত হবে?

বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d

নির্বাচন আর হ্যাপি নিউ ইয়ার নিয়ে সবার মধ্যে হইচই। কিন্তু এরই মাঝে একটি খবর আমাদের সবার চোখ ছাপিয়ে গেছে। কাউকে দেখলাম না এটা নিয়ে কোন কথা বলল (আমার চোখে পড়েনি)। খুবই বেদনা দায়ক একটা ব্যাপার।

খবরটি পড়েছি একটি জাতীয় দৈনিকে। সেখান থেকে ঘটনা তুলে ধরলাম। বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ তিন শতাধিক বাংলাদেশী। সন্ধানে চলছে। উপকুল রক্ষীবাহিনীর সঙ্গে উদ্ধারকাজ করছে ভারতের নৌবাহিনী।

তারা মাছধরা কোন জেলে নয়। তারা জীবিকার প্রয়োজনে দেশান্তরী হতে চেয়েছিল। কোন মানুষই দেশে সুখে থাকলে বিদেশ যেতে চায় না। প্রবাসজীবন আসলেই খুব কষ্টের। অন্ততঃ যারা থাকেন তারা আমাদের চাইতে অনেক বেশী বুঝবেন।

১০৫ জনকে উদ্ধার করা সক্ষম হয়েছে তারমধ্যে ১৭ জন দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা সাঁতরে কুলে ভিড়েছে আর ৮৮ জনকে উদ্ধারকারীরা উদ্ধার করেছে। তারা জানায়, অনেকে ক্ষত বিক্ষত লাশ হয়ে আটকে আছে আন্দামান দ্বীপে। ওহ! কি কষ্টের। ঘটনার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে আরো মর্মান্তিক ঘটনা। দুই মাস আগে চারশ জন বাংলাদেশী মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য দালালের হাতে টাকা তুলে দেয়।

দালালেরা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ছয়টি ইঞ্জিনবোটে তুলে দিয়ে সটকে পড়ে। তারপর তাদের নৌকা গুলো মাঝ সাগরে ভাসতে ভাসতে থাই সমুদ্রসীমানায় গিয়ে ভীড়ে। সেখানে তাদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় একটা নির্জন দ্বীপে। সেখানে প্রায় ১৫ দিন তাদের রাখার পর ২৫ মিটার লম্বা ইঞ্জিনবিহীন নৌকায় তুলে সেই নৌকাটি ১৮ ঘন্টা ধরে টেনে মাঝ সমুদ্রের মাঝে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর প্রায় ২ সপ্তাহ মাঝসাগরে উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে নৌকাটি ভেসে বেড়ায় ৪০০ জন বাংলাদেশী সহ।

একসময় সেটা ভাসতে ভাসতে ভারত সমূদ্রসীমার মধ্যে আন্দামানের কাছে চলে আসে। অনেকেই ওটাকে উপকুল ভেবে সাগরে লাফ দেয়। তাদের কেউ বেঁচেছে আবার কেউ নিখোঁজ। এরই মধ্যে কেউ হয়ত জীবন নিয়ে ফেরত আসবে আবার কেউ হয়তো সাঁতরাতে সাঁতরাতে একসময় ক্লান্ত হয়ে মাছের খাদ্যে পরিনত হবে। হায়রে নিয়তি!! ওরাও মানুষ।

ওদেরও পরিবার আছে, হয়ত আছে কোন প্রিয়মুখ। প্রিয়মুখগুলো হয়ত জানেনা, তার ভাই/বাবা/স্বামী/ছেলের কঠিন পরিনতির কথা। তারা তো কেউ ইচ্ছা করেই এই পথে পা বাড়ায়নি। জীবকার তাগিদে পরিবারকে একটু সচ্ছল করে তোলার জন্যই তারা এই অবৈধ পথ বেছে নিয়েছিল। তাদের হয়ত বৈধ ভাবে যাওয়ার কোন পথ ছিল না, হয়তবা অর্থ ছিল না অথবা যোগ্যতা ছিল না, কিন্তু সব কিছু পিছনে ছিল তার উপরে নির্ভর করা কতগুলো মানুষের মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোগাড় করার তাড়া।

একটা নিতান্ত সৎ চাহিদা। কিন্তু বেছে নিতে হয়েছে ছলচাতুরির পথ। একটি সত্যকে বাঁচাতে অসত্যের পথ মাড়ানো। একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও কর্মঠ কর্মীদের জন্য নেই এখানে যোগ্য উপার্যনের পথ। আর কত দিন এভাবে চলবে? আর কত দিন এভাবে প্রতারনা চলবে এই কর্মীদের সাথে চাকুরীর নামে?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.