(উৎসগঃ যাঁরা দেশকে ভালোবেসে বুকভরা আশা নিয়ে দেশ কে দুশমনদের হাত থেকে উদ্ধার করতে মুক্তিযুদ্ধের মত এক পবিত্র লড়াইয়ে জড়িয়ে ছিলেন কিন্তু স্বাধীনতার ৩৭ বছর পরো তারা স্বাধীনতাটাকে এখনো খুজে বেড়াচ্ছেন। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে......)
বাতাসে তখন বারুদের গন্ধ।
সময়টা ছিল যুদ্ধের,আমরা ক'জন
স্ট্যানগান কাঁধে নিয়ে
নিপুন আজগরের মত শিকার ধরতে
ফাঁদ পেতে বসে ছিলাম
তোমাদের বাড়ির পেছনে
আম বাগানের ঝোপে।
তুমি জানতে সেই রাতে
আমি আসবো ঠিকই তবে প্রেমিকের মালা নিয়ে নয়
চোখে জিঘাংসার রক্ত ফুটিয়ে
আস্ত্র হাতে কঠিন এক যুবকের বেশে।
তোমার ভালোবাসা তখন থোরাই কেয়ার করি,
সমস্ত ভালোবাসা তখন আমার চকচকে
সেই কালো আস্ত্রটার প্রতি, তুমি জানতে।
সময়টাই ছিল এমন,বড়শি পেতে মাছ ধরার বছর।
রুই,কাতল,বোয়াল,চুনোপুটি, আর কত কি..
টুপটাপ টুপটাপ মাছ ধর আর মাছ ধর।
আমার চোখের কোটর থেকে নিত্য উদগিরিত হয়
উত্তপ্ত বারুদ আর সেই বারুদের সাথে আগুনের স্পর্শে
তারপরো তুমি এলে চুপি চুপি ভালোবাসার দাবী নিয়ে
হিম শীতল সেই শীতে, কুসুম গ্রামের মোল্লা বাড়ির ভিটার পেছনে।
তোমার হারিকেনের আলোয় আমার আস্ত্রটা নেচে উঠে,
কালো বোরকার নেকাবের ভেতর
উত্তাল এক নদী আমি দেখতে পাই,
আমি যেন দেখতে পাই আমার সেই হারিয়ে যাোয়া স্বপ্নকে।
কিন্তু আমিতো তোমাকে চিনি না?
আমার কাছে তুমি মৃত এক বিধস্থ নগরী,
যেখানে একদিন সুখ ছিল,নদী ছিল, সবুজের রং ছিল,
তুমি এখন বৈশাখের তান্ডবে ঝড়া মুকুল
পিশাচের নখের আঁচড়ে ক্ষত-বিক্ষত লাশ।
...............................................
মনে পরে-
তোমার চোখের পাপঁড়িতে
ভালোবাসার সব রংগুলের ঢেলে দিয়েছিলাম।
তোমার সবুজ আঁচলে
হেমন্তের ঘ্রানে মাতাল হয়েছিলাম।
তোমাকে কথা দিয়েছিলাম
ফিরে আসব আবার নতুন সকালটাকে নিয়ে।
মনে পরে.......
যুদ্ধ শেষের ক্লান্তি তখন আমাদের চোখে।
মনে পড়ল তোমার কথা
এত প্রাণ,এত ক্ষয়, এত যুদ্ধ,
কিন্তু আমি যে তোমায় চিনি না..
চেনা পথটা হয়ে যায় বড়ই আচেনা
তুমি হারিয়ে গেলে কোথায়
কোন সে আজানা বাঁকে, কে জানে?
আমি এখনো তোমায় খুজি
একাত্তরের বারুদের জ্বালা নিয়ে,
আমি এখনো তোমাকে খুজি
এক নীড় হারা পাখির মতন।
" এখন কেন জানি বারবার
সেই কুচকুচে কালো আস্ত্রটা
শুধুই থেকে থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকে..."
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।