এলেমেলো কথাবার্তা tutul@amrabondhu.com
১
ডিসেম্বর ০৩
একে এক চারিদিক থেকে বিজয়ের খবর ছড়িয়ে পরছে ... যৌথ বাহিনীর উপর্যুপরি আক্রমণে দিশেহারা দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী রণাঙ্গন ছেড়ে ঢাকার দিকে পালাতে থাকে।
এইদিনে মুক্ত হয় চুয়াডাঙ্গার দত্তনগর, বরগুনা, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, ঠাকুরগাঁও, শেরপুরের ঝিনাইগাতি এলাকা। পাক হানাদার বাহিনী পঞ্চগড় হাতছাড়া হওয়ার পর ঘাটি স্থাপন করে ঠাকুরগায়েঁ।
পাকহানাদার বাহিনী চুয়াডাঙ্গায় পরাজিত হলে পলায়নের আগেই রাজাকারদের সহায়তায় প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা আব্দুর রাজ্জাক অপহৃত হয়ে নিখোজ হন।
লে: ফজলে বদিউজ্জামান (বীরপ্রতীক) ... সেনবাহিনীর একজন তরুণ অফিসার .... এইদিনে আখাউড়ার আজমপুরে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন।
এই দিনই প্রথম মিত্র বাহিনীর বিমান হামলা শুরু হয়... চিটাগাং... ঢাকা এবং নারায়াণগঞ্জে মিত্র বাহিনী বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করে।
প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে যুদ্ধ পরিচালনায় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। মিত্র বাহিনী যৌথ কমান্ড গঠনের মাধ্যমে পরদিনই শুরু হয় যৌথবাহিনীর সম্মুখযুদ্ধ।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় এবং ভারতের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়।
এদিকে আন্তার্জাতিক কুটনিতীতেও মুজিবনগর সরকারের বড় সাফল্যটা আসে... সোভিয়েত ইউনিয়ন নিরাপত্তা পরিষদে যেকোন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো প্রয়োগ করবে এমন নিশ্চয়তা পাওয়াতে।
৩রা ডিসেম্বর ভারত পূর্বাঞ্চলে সৈন্য সমাবেশ শুরু করে ... তার আগেরদিনই পাকিস্তান ভারতের পশ্চিমাঞ্চল আক্রমন করে। তৎকালীন ঠাকুরগাঁও মহাকুমারের তেঁতুলিয়া থানাকে কেন্দ্র করে তখন গড়ে উঠেছিল আড়াইশ বর্গমাইলের একটি মুক্তাঞ্চল। যেখানে পাকহানাদার বাহিনী কখনই ঢুকতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরত্বে। এ অঞ্চলে গড়ে উঠে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বেসামরিক প্রশাসকি ব্যবস্থা।
২
প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি :: ফিরে দেখা একাত্তর থেকে
৩
রেহানার জামা
এটি চার মাসের শিশু রেহানার গায়ের জামা। খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার সেনহাটি গ্রামের আবদুস সালাম খানের ফুটফুটে মেয়ে রেহানা পাকবাহিনীর নির্মমতার শিকার। এই শিশুর একমাত্র অপরাধ, তার পিতা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল ৩০ এপ্রিল পাকবাহিনী তাদের বাড়ী ঘেরাও করে। মুক্তিযোদ্ধা পিতাকে ঘরে না পেয়ে তারা শিশু রেহানাকে উঠানে ফেলে পায়ের নিচে পিষে হত্যা করে। তখন রেহানার পরনে ছিল এই জামা।
পরে রক্তে ভেজা কাপড় পরি¯কার করে এমনিভাবে কাচের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রেখেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা পিতা আবদুস সালাম খান। রেহানার কোন ছবি নেই, আর কোন স্মৃতিচিহ্ন নেই, এই জামা কেবল নীরব সাক্ষী হয়ে আছে ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা অভিযানের একটি মৃত্যুর।
প্রথম ছবির জন্য আসাদের কাছে কৃতজ্ঞতা...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।