প্রেম-০২ (কিছু অংশ যোগ করা হল)
গত পর্ব-প্রেম-০১
Click This Link
বেড়াতে যাওয়া বা কোথায় নতুন কোন কিছুর সন্ধানে আকাশের দুর্বলতা রয়েছে। আসলে প্রকৃতির প্রতি ও অন্য রকম টান আছে। এদিকে নদীর মা আকাশের ঠিকানয় একটি চিঠি দিয়েছে তাতে লিখছে। বাবা আকাশ তোমার আচার আচরণ আমাকে মুগ্ধ করছে। তোমাকে আমার আপন ছেলের মত মনে হয়েছে।
তুমি তোমার এই চাচীমাকে একবার এসে দেখে যেও। তুমি অবশ্যই তোমার মাকে নিয়ে বেড়াতে আসবে। সাতে নদীও একটি চিঠি দিয়েছে এরকম,
ভাইয়া,
আমি আপনাকে দেখিনি কিন্ত। মার মুখে আপনার অনেক প্রসংশা শুনেছি। তাই আপনাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করেছে।
মা তো সারক্ষন আপনার কথা বলে। অপনি এটা করেছে ওটা করেছেন এরকম কত কথা। আপনি চাচীআম্মাকে নিয়ে বেড়াতে আসবেন।
ইতি,
আপনার বোন নদী।
আকাশ চিঠি পড়ে আর ভাবে চাচী আমাকে এত পছন্দ করছে।
ওদিকে আবার নদী কথাও ভাবে। সে আমাকে দেখলোই না। সে আবার আমার প্রতি এতটা ভাল লাগার অর্থ কি?। কোন কিছুই হিসাব মিলাতে পারছে না আকাশ। নতুন একটা সম্পর্ক সেখানে অন্য কিছু ভাবা ঠিক নয়।
যাক চিঠির আর উত্তর দেওয়া হল না। বাসায় এসে দুলা ভাইর কাছে শোনে নদীদের বাড়ী যাওয়া হবে আগামী মাসের ০৫ তারিখে। কারণ দুলাভাইরে জরুরী কাজ থাকায় এর আগে যাওয়া সম্ভব নয়। দুলাভাই মিটমিট করে হাসে আকাশকে দেখে। আকাশ জিজ্ঞাসা করলে বলে না এমনি হাসছি।
দুলা ভাই আর আকাশের মাঝে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক। দুলাভাই কথার ফাঁকে বলে আকাশ তোর জন্য আমি একটা মেয়ে ঠিক করে রেখেছি আমাদের এলাকায়। এবার গ্রীম্ষ আমাদের বাড়ী গেলে তোকে দেখাবো। তোর পছন্দ হলেই বিয়ের কথা বলবো আমার শ্বশুরীকে। আকাশ বলে দুলাভাই তোমার মাথা খারাপ হয়েছে।
তুমি যেনে শুনে আমাকে এই কঠিন বিপদে ফেলতে চাইছো। দুলাভাই বলে কেন? কেন? বিপদে ফেলতে চাইবো কেন। আমি কি তোর বোন কে বিয়ে করে বিপদে আছি। আকাশ থমকে বলে ঠিক তাই নয়। তবে কি? মানেটা হল।
আমি এখনও বেকার পরীক্ষার রেজাল্টও হয়নি এই মুহুর্তে বিয়ে নিয়ে ভাবছি না। ভাবছি রেজাল্ট বের হলে এম.এ ভর্তি হব। পড়ালেখা শেষ করে ভাল চাকুরী নিয়ে তবেই বিয়ে। এর আগে নয়। দুইজনে তর্কে বির্তকে অনেক সময় অতিবাহিত হল।
আছরের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে আকাশে বাসা থেকে বের হয়। পরে কম্পিউটার সেন্টারে যায় সেখানে গিয়ে আবার নতুন এক সমস্যার সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি এরকম ... কম্পিউটার সেন্টারের সামনে অংশে ফোন,ফটোষ্ট্যাট আর পিছনে কম্টিউটার সেন্টার। আকাশে সামনের অংশে বসে আছে এমন সময় একটি মেয়ে হঠাৎ কম্পিউটার সেন্টারে এসে বলে ভাইয়া আমাকে একটি ফোন করতে দিবেন। আকাশ বলে কোথায় ফোন করবেন।
মেয়েটি একটি নম্বর দিয়ে বলে এটায় ডায়েল করেন। পেলে আমাকে দিবেন। মেয়েটির চেহারার মধ্যে ভয় ভয় ভাব লক্ষ্য করা যায়। আকাশ নাম্বর ডায়ের করছে এমন সময় মেয়েটি বলে ভাইয়া আমার কাছে টাকা নেই। তখন ল্যান্ড ফোনে অনেক টাকা কলচার্জ ছিল।
আকাশ কি করবে বুঝে উঠতে পারতেছে না। ফোন ধরিয়ে দিলে যদি কথা বলে পুরো বিল আকাশের দিতে হবে। আকাশ মেয়েটি বলে বসুন। আমাকে খুলে বলুন আপনার সমস্যাটি। মেয়েটি বলে কলেজে যাওয়ার পথে কিছু দুষ্ট ছেলে তাড়া করেছে তাদের ভয়ে আমি বাসে উঠে এই শহরে এসেছি।
কিন্ত আমার কাছে যাওয়ার মত কোন টাকা নেই। আকাশ বলে ও মাই গড। তারপর কি হলো বলুন..। ছেলে গুলো অনেদিন পর্যন্ত আমাকে ফলো করত। আমি কলেজে যাওয়ার পথে ওরা আমাকে ডিস্টাব করতো।
বিভিন্ন রকম বাজে মন্তব্য করত। আমার সাথে আমার বান্ধবীরা থাকায় ওরা কিছু করার সাহস পেতো না। কিন্ত আজ আমি একা কলেজে যাওয়ার পথে ওরা আমার পিছু নেয়। আমি দৌড়ে বাসে উঠি। ওরাও আমার পিছু পিছু আসে কিন্ত অল্পের জন্য ওরা বাস মিস করে।
তার পর এই দোকানে আসি। আকাশ বলে আপনার ভাগ্য অনেক ভাল। রাস্তার ওপারে গেলে খবর ছিল। কারণ ওপারে একটা আবাসিক হোটেল আছে। সারাক্ষন বাজে লোকের আনাগোনা আর যদি তাদের কারও সাথে সাক্ষাত হলেই বিপদ আরো বেড়ে যেত।
আপনি এখন অনেক নিরাপদ। আকাশ নাম্বরটিতে কল দিল। কিন্ত বার বার ভুল নম্বর বলতেছে। মেয়েটিকে বললো আকাশ বলুন এখন আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি। এই শহরে আপনার কোন আত্মীয় স্বজন আছে কিনা বা তাদের ফোন নম্বর মেয়েটি বলে আমার এক ফুফু তাকে এই শহরে কিন্ত তার ঠিকানা জানিনা।
আর কারও কোন নম্বর নেই।
এই বার আকাশ পুরো ঠিকানা জিজ্ঞাসা করছে। মেয়েটির নাম হাসি। বাবা ফরেস্ট অফিসে চাকুরী করে ইত্যাদি। আকাশ ভাবছে মেয়েটিকে নিয়ে কি করা যায়।
কিভাবে ওকে ওদের বাড়ীতে পৌছে দেওয়া যায়। আর মেয়েটি দেখতে একে বারে খারপ নয়। ভালই । একা ছেরে দিলে আবার বিপদ হতে পারে। হঠাৎ আকাশ যেন আশার আলো দেখতে পায়।
বলে আপনার বাড়ী যাওয়ার ব্যবস্থা করছি। কারন ফরেস্ট অফিসের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সাথে আকাশে ব্যবসায়িক ভাল সম্পর্ক। তাই দোকানের ছেলেটিকে সাথে আকাশ একটি চিঠি লিখে দিল। এই বলে যে, এই মেয়ে আপনাদের এক স্টাফের মেয়ে । মেয়েটি বিপদে পড়ে এখানে এসেছে।
দেখুন ওকে কোন সাহায্য করা যায় কিনা। মেয়েটিকে আকাশ তার ব্যক্তিগত ঠিকানা আর ফোন নম্বর দিয়ে দিল। বাড়ী পৌছে আমাকে বিস্তারিত জানিয়েন। মেয়েটিকে সাথে নিয়ে দোকানের ছোট ছেলেটি রিকসায় ফরেস্ট অফিসে নিয়ে গেল। তারা মেয়েটির বাবার পরিচয় পেয়ে বলে।
আরে উনি তো আমাদের এখানে চাকুরী করত। যেহেতু ওনার মেয়ে তুমি। তুমি কোন চিন্তা কর না। আমরা তোমার বাবাকে এখনি ম্যাসেজ পাঠাচ্ছি। ফরেস্ট অফিসে নিজস্ব ওয়্যারলেস রয়েছে।
তারা সাথে সাথে ম্যাসেজ পাঠিয়ে দিল। এবং মেয়েটির বাবার সাথে কথা বললো। মেয়েটির বাবা সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে রওনা করলো। এদিকে দোকানের ছেলেটি ফিরে বিস্তারিত বললো। আকাশ বলে হায়রে একটু ভুল হয়ে গেল।
মেয়েটিকে কিছুই খেতে দেওয়া হল না। দুপুর বেলা কিছু খাওয়ানো উচিত ছিল। আসলে আকাশে কিছুটা হলেও ভাল লাগছে মেয়েটিকে। কিন্ত বিপদের পড়ে এভাবে আসবে তা ও কল্পনাও করেনি। আকাশ দুপুরের খাবর খেতে বাসায় গিয়ে ওর মাকে সব খুলে বললো।
ওর মা বলে তুই মেয়েটিকে বাসায় নিয়ে আসতি। আকাশ বলে কোথা কার করা মেয়ে হুট করে বাসায় নিয়ে আসা যায়। পড়ে আবার কোন বিপদে পরি। বাদ তো মা। আমার খিতে পেয়ে খেতে দাও।
আকাশ খেতে খেতে ভাবে। কি ভুলটাই না করলাম। আমি সাথে করে নিয়ে গেলেই তো পারতাম। কারণ আকাশের বাসা আর ফরেস্ট অফিস কাছাকাছি। ভাত খাওয়া শেষ হলে ওর মা বলে যা ফরেস্ট অফিসে গিয়ে দেখে আয় মেয়েটির বাবা এসেছে কিনা.................
চলবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।