আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্মৃতির সমুদ্রে কাপ্তান ও বাজপাখির চোখ



স্মৃতির সমুদ্রে মুক্তোশিকারী এক পালতোলা জাহাজ ভেসে পড়ে, দক্ষিণ সাগরে পোতা আছে কিছু টগবগে দুঃখ, এতদিনে ওদের কেউ কেউ গোলাপী মুক্তো বনে গেছে নির্ঘাত। জাহাজের কাপ্তান এক সৌমিনী যাযাবর, যার হৃদয়টা কাঠের, একবার এক অতলান্তিক অভিযানে তার কলমটা ঝড়ে ভেসে যায়, তখন তিনি তার বুকের পাঁজর খুলে খুলে, কলম বানিয়ে লিখেছিলেন বেঁচে থাকার লগবুক। সেই ফাঁকে খাঁচার দরজা খোলা পেয়ে , তার ভবঘুরে হৃদয়টা এক বাউন্ডুলে অ্যালবাট্রসের ডানায় চড়ে, নীল তিমিদের মহাসাগরীয় সঙ্গীত সম্মেলনে গান শুনতে গিয়ে,- আর ফিরে আসেনি। দারুচিনি দ্বীপে তিনি সাতখানি পূর্নিমা অপেক্ষায় থাকেন, তারপরে ভোজালী দিয়ে বনে গিয়ে চন্দন কাঠ চিরে, বেশ বানিয়ে নেন আনকোরা সুগন্ধী হৃদয়। যৌবনে এক ক্যারিবীয় জলদস্যুর সাথে ডুয়েল লড়ে, জিতেছিলেন অজান গুপ্তধনের হদিস, সাতখানি বসন্ত তিনি লোভী শূকরের মত ধাতব বাসনায়, এলোমেলো চষেছিলেন দ্বীপ থেকে দ্বীপান্তরের জলমগ্নতায়। এক বোতল রামের জন্য ইন্ডিজের এক পানশালায়, অনায়াসে বেঁচে দেন সেই রহস্যময় নিশানা চিরকূট। তিনি কোনো জলপরীর জন্য নূপুরের স্বপ্ন দেখেননি, বিগত জনমের প্রসারিত ডানার জন্য তার আর কান্নাও আসেনা। সেই হিস্পানী জাদুকরের সাথে দরদামে পোষালে, তিনি হয়ত এতদিনে মালিক বনে যাতে পারতেন আস্ত এক দ্বীপপুঞ্জের, শুধু যদি তিনি তার বাজপাখির চোখটা খুলে দিতে পারতেন। বাজপাখিটা তাকে উপহার দিয়েছিল ভগ্নহৃদয় এক মাতাল নাবিক, উন্মুক্ত নোনা দিগন্তে লাল চাকতিটা যখন ডুবসাঁতারের প্রস্তুতি নিত, তখন যদি একমনে তাকানো যেত সেই বাজের চোখে, যাদু, নীল চোখে, অটল অর্ণবযানে, তবে সে বলতে পারত,- অপলক নির্মোহ জলজ ভাষায়, শেষের সব থেকে শেষ প্রহর গুলোতেও, কেন মৃত্তিকার অবয়ব নিয়ে কিছু মন জলমগ্ন, অভিকর্ষ দাসত্বেও কিছু মন পাখি পাখি আকাশবন্দী, মিঠে জলের দাম্পত্যেও কিছু মন নোনতা সমুদ্র অভিসারী, ডুবোপাহাড়ের চোখ রাঙ্গানিতেও কিছু মন কেন ডাঙ্গা প্রত্যাশী!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।