হাইকোর্টের নির্দেশে গুঁড়া দুধের মেলামাইনের উপস্থিতি ও পরিমাণ নির্নয়ের সকল পরীক্ষার ফলাফল আদালতে উপস্থাপিত হয়েছিলো। সেটার তালিকা দেখলাম গতকালের ডেইলি স্টারের পাতায়। দেখে আশ্চর্য হলাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের পরীক্ষায় প্রায় সকল নুমনায় অত্যাধিক মেলামাইনের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। তবে মেলামাইনের উপস্থিতির প্রমাণের তুলনায় আশ্চর্য হলো একটি পরীক্ষাগারের প্রতিবেদন অন্য কোনো পরীক্ষাগারের প্রতিবেদনের সাথে খাপ খায় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত মেলামাইনের পরিমাণের সাথে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের প্রাপ্ত মেলামাইনের পরিমাণের মিল নেই। এমন কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন বলছে রেডকাউ গুঁড়ো দুধে মেলামাইন আছে তখন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের ফলাফল বলছে সেখানে কোনো মেলামাইন নেই।
বাংলাদেশের অন্যান্য পরীক্ষাগারের ফলাফলে বলা হয়েছে পরীক্ষায় নির্ণয়যোগ্য সর্বনিম্ন পরিমাণের তুলনায় নগন্য মেলামাইনের উপস্থিতি হয়তো সম্ভব, থাইল্যান্ডের গবেষণাগারের ফলাফলেও এমনটা বলা হয়েছে।
যদিও চীনের একটি মাত্র গুঁড়ো দুধে ক্ষতিকারক বিবেচিত হতে পারে এমন মাত্রায় মেলামাইনের উপস্থিতি থাকলেও সরকার কেনো অন্য দুটো ব্রান্ড নিষিদ্ধ করলো এটাও পরীক্ষার ফলাফলে স্পষ্ট হলো না।
আদালত পুনঃপরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে, ফলাফল এখনও নিশ্চিত নয়।
রসায়ন বিভাগ এখনও নিজের অবস্থানে অনড়, তাদের বক্তব্য সরকারের অন্য গবেষণাগারে যারা গবেষণা করছে তারাও মূলত প্রধান গবেষক নীলুফার নাহারের তত্ত্বাবধানেই গবেষণা করেছিলো, তাদের ফলাফলকে গ্রহনযোগ্য বিবেচনা করে খোদ শিক্ষিকার ফলাফলকে উপেক্ষা করবার কারণ কি?
যদিও নিলুফার নাহারের এই কথার অর্থ বুঝতে পারি নি আমি, তবে আমরা ভয়ংকর একটা সময় অতিক্রম করছি।
খাদ্যে ভেজালের পরিমাণ বাড়ছে সাংঘাতিক পরিমাণে, মানুষের জীবনযাপনে ভেজাল নিত্যসঙ্গী, তবে আমদানিকৃত শিশুপণ্যে বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি নির্ধারণ করা হলেও দেশজ শিশুপণ্যগুলোর রাসায়নিক বিষাক্ততার কোনো পরীক্ষা করা হয় না। এমন কি যখন নমুনা পাঠানো হয় বিএসটিআই তে তখন যে নুমনা অনুমতি পায় সেটার সাথে পরবর্তী যেকোনো দিনের উৎপাদিত পণ্যের কোনো মিল আছে কি না এটা নির্ধারণ করার উপায়ও নেই বর্তমানে।
ঢালাও আমদানি করছে মানুষ, ব্যবসায়িরা দেশের মানুষকে বৈদেশিক সামগ্রী গেলানোর ষড়যন্ত্র করছেন, তাই প্রতি বছর যে পরিমাণ নমুনা উপস্থাপিত হয় বিএসটিআইয়ের দপ্তরে সেগুলোকে নিরপাদ প্রমাণ করবার প্রচেষ্টায় ব্যস্ত বিএসটিআইয়ের নিজস্ব গবেষণাগার।
এই অবসরে আড়ং, প্রাণ , এমো মিল্ক মূলত বিষ কিনে তরল দুধ হিসেবে বাজারজাত করছে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পরের দিনও একই কাজের জন্য গ্রেফতার হয়েছে আরও কয়েকজন মানুষ। আইনকে অগ্রাহ্য করবার এই প্রবনতা কিংবা গতকাল পুলিশের তদন্ত হয়েছে আজ আর হবে না তাই নিশ্চিতে বিষ মেশানো যায় দুধে এই মনোভাবসম্পন্ন ব্যবসায়ীদের মৃত্যুদন্ড দেওয়া উচিত।
মাত্র ৫০ হাজার টাকার জরিমানা আদতে কম হয়ে যায়, এইসব তরল দুধের ভোক্তা সকল মানুষের জীবনের প্রতি হুমকি এবং প্রতিটা ভোক্তার সাম্ভাব্য হত্যাকারী বিবেচনা করেই এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে এবং এই প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট মানুষগুলোকে আদালতে সোপর্দ করা প্রয়োজন।
এমো মিল্কের সহকার প্রতিষ্ঠান হলো ইগলু আইসক্রীম, যদি এমোমিল্কে বিষ থাকে তবে নিশ্চিত ভাবেই ইগলু আইসক্রীমও বিষাক্ত।
যদি প্রাণ দুধে কোনো ভেজাল থাকে তবে প্রাণের সকল দুধজাত সামগ্রীই বিষাক্ত, আড়ংয়ের দুধ, দই, পাটিসাপটা সবই বিষাক্ত হতে পারে , এমন সম্ভবনা আছে।
এরপরও মানুষ উপায়ান্তর না দেখেই সুনামের উপর ভরসা করেই এইসব পণ্য ক্রয় করছে। এইসব প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের অবশ্যই জাতিসংখ্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন পুরস্কারের পুরস্কৃত করা উচিত। তারা ব্যপক হারে জনসংখ্যা কমানোর একটি পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন করতে সফল হবেন একদিন। বাংলাদেশের অথর্ব এবং জনবিমুখ খাদ্য প্রশাসন কোনো উপকারী উদ্যোগ নিতে পারে নি এখনও।
ফজলে হাসান আবেদকে পরবর্তী জাতিসংঘ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন পুরস্কারের জন্য বিবচনা করতে অনুরোধ জানাই উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।