আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নুয়াখাইল্যা হেরেম (অবশেষে ডাব পান)

আমার মৃত্যু যেন আমার সকল ইচ্ছা পূরণের পর হয়

সকাল ১০টা। লেখকের ঘুম ভাঙ্গার আগেই জামান সাহেব রেডি হয়ে বসে আছেন। জামান সাহেব > কি ভাই ঘুম ভাঙ্গলো? > জী... > রেডি হয়ে নিন এখনি গ্রামের বাড়ী যেতে হবে > এখনি?!! তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিলাম। আজ হোটেলে নাস্তা করলাম। বেশ মজার।

ডাল, সবজি, খাসীর মাংস আর রুটি। সিগারেট ধরিয়ে জামান সাহেব সহো রিক্সায় উঠলাম। বাসায় পৌছালাম। মোটামুটি সবাই গ্রামের বাড়ীর পথে রওয়ানা দিয়েছে। গোসল করতে ঢুকলাম।

জামান সাহেব বললেন আরে গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে করবো গোসল। বাধ্য হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে রওয়ানা দিলাম। বাসা থেকে বের হয়ে দেখি মটরসাইকেল দাড়ানো তাতে জামান সাহেব। > আসেন মটর সাইকেলে যাবো > ঠিক আছে। মটরসাইকেল চলতে লাগলো।

অনেকদিন পর মটরসাইকেলে উঠলাম। জামান সাহেব বেশ রাফ চালাচ্ছেন। আমি চোখ বন্ধ করে আছি। হঠাত একটা বাজারে থামলেন। ৫প্যাকেট সিগারেট কিনলেন।

ফিরে এসে আমাকে চালাতে বললেন। আর্শ্বয ব্যাপার প্রশ্নই করে নাই আমি চালাতে পারি কি না! যাই হোক প্রায় অনেক বছর পর মটরসাইকেল চালাতে যাচ্ছি। জামান সাহেব দিক বলে দিলেন, প্রায় ২৫ মিনিটের ভাঙ্গা রাস্তা পেরিয়ে আসলাম জামান সাহেবের গ্রামের বাড়ী। মটরসাইকেল বাড়ীর উঠানে রাখতেই লাবণ্যকে দেখতে পেলাম। আমাকে হোন্ডায় দেখে অনেকটা অবাক হলো।

তাকে আজ আরো সুন্দর দেখাচ্ছে। হাসতে হাসতে সখিদের সাথে ভিতরে চলে গেলো। জামান সাহেব বাড়ীর ভিতরে নিয়ে গেলেন, মোটামুটি ২০-২৫ জনের সাথে পরিচয় করালেন। বাইরে এসে সিগারেট ধরালাম। জামান সাহেবের এ গ্রামের বাড়ীতেই জন্ম হয়েছিল।

তাই তিনি এ বাড়ীকে উনার নিজের মতো সাজিয়েছে। তিনতলা বাড়ী, চারপাশে বাগান, বিশাল পুকুর, ২৪ ঘন্টা জেনারেটর, বিশাল ব্যপার। হঠাৎ এক লোক জামান সাহেব কে ডাকলেন > ইমুই আইয়েন > আইয়ের গিয়ে দেখি ওই লোক ডাব খাইতে ডাকতেছে। একটা ছোট্ট ছেলে সাঁই সাঁই করে এতো বড়ো গাছে উঠে গেলো। প্রায় ৪০টা ডাব পাড়লো মোট তিনটা গাছ থেকে।

কতদিন ডাব খাইনা। সেই জন্ডিসের পর থেকে আর ডাব খাই নাই। ওই মুরব্বী আবার ডাব কেটে দিচ্ছিলো। জামান সাহেব আমার আগেই পাচঁটা ডাব পান করে ফেললেন, সেখানে আমি একটা নিয়েই যুদ্ধ করছি। এবার গোসলের পালা।

জামান সাহেব পাশের মসজিদের ছাদ থেকে পুকুরে লাফ দিলেন। আমি ভয়ে ভয়ে সিড়িতে দাড়িয়ে গায়ে পানি দিচ্ছিলাম। ওদিকে হঠাৎ করে ফিরে দেখি লাবণ্য আর জামান সাহেবের কাজিন পুকুর পাড় দিয়ে হেটে যাচ্ছে। তাদের দেখে আমি এই গভীর পুকুরের পানিতে নেমে গেলাম, তারা আমাকে দেখে হাসি রাখতে পারছিলো না। সাতার না পারার কারনে ডুবে যেতে লাগলাম, পরে জামান সাহেব উদ্ধার করলেন।

গোসল পর্ব শেষে খাবার খেতে গেলাম। খাবারে ছিলো মুরগী, গরু, খাসী, সবজি, শুটকি ভর্তা। পেট পুরে খেলাম। সিগারেট ধরিয়ে একটা রুমে রেস্ট করতে গেলাম। রুমে গিয়ে দেখি একটা গিটার ঝুলানো, গিটারের গায়ে জামান লিখা. বুঝলাম জামান সাহেবের।

ঘুমিয়ে সন্ধ্যার সময় উঠলাম। কাল অনুষ্টান সবাই ব্যস্ত। কেউ বাবুর্চির সাথে কথা বলছে আবার কেউ মানুষ দাওয়াত দিচ্ছে। কিছুক্ষন পর দেখলাম ছেলেদের বাড়ী থেকে মেয়ের জন্য কিছু গিফট এসেছে। জামান সাহেবের কাজিন দেখতে ভালো, একদম দুধে আলতা গায়ের রং।

জামান সাহেবের দেখা নাই। হঠাৎ ভাবীর আগমন। সালাম দিলাম। কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা প্রশ্ন করলেন। না বলে আশ্বস্ত করলাম।

ভাবী আমাকে একটা প্যাকেট দিলো। খুলে দেখি পায়জামা পান্জাবী। লাগবে না বলে ঢং করলাম। কিন্তু ভাবী মানলো না। ধন্যবাদ জানালাম।

হঠাৎ জামান সাহেবের ফোন। তিনি বরকে সাথে করে নিয়ে এসেছেন। আমাকে নিচে ডাকলেন। সবাই বরকে দেখে বেশ আপ্যায়ন করতে লাগলো। জামান সাহেব একটু পাগলা স্বভাবের।

তিনি বরের সাথে সবার পরিচয় করাতে উঠানে সবাইকে ডাকলেন। প্রায় ৩০-৩৫ জন হবে নারী পুরুষ আর বাচ্চা মিলে। পরিচয় পর্বের সাথে নাস্তা ও চললো। এভাবে আড্ডা চলতে থাকলো। বর আর কনে কে পাশাপাশি দেয়া হয়েছে।

লাবণ্য বরের সাথে বসে আছে, বর কে নানা কথা দিয়ে জর্জরিত করছে। বর বেচারা লজ্জায় লাল হয়ে গেলেন। এদিকে হঠাৎ লাবণ্য বরকে গান গাইবার জন্য বললেন, বর বেচারা এবার লজ্জায় প্রায় মারা যাবার উপক্রম। জামান সাহেব তার গিটার টা নিয়ে আসলেন। কিছুক্ষন গিটার বাজিয়ে সবাইকে শান্ত করতে চাইলেন, কিন্তু নারীকুল মানতে রাজি নয় তারা পুরুষ কুলের কাছ থেকে গান শুনতে চায়।

ওদিকে আমি নিজেকে আড়াল করতে লাগলাম। নারীকুল বিভিন্ন কথা বলে পুরুষকুলকে লজ্জা দিচ্ছে। হঠাৎ জামান সাহেব বললেন > ভাই আমনে কিছু একটা করেন! > না মানে আমি তো গান পারি না। > আরে কিছু একটা গান প্লিজ, আমি পারলে আমি ঠিকই গাইতাম, প্লিজ > না আমি তো ভাই... মানে আমি তো পারি না। ওদিকে লাবণ্য নাক উচিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য ছুড়ে মারছিলো।

তাই নিজেকে আর বেধে রাখতে পারলাম না। জীবনে একটাই গান যা গিটারে শিখেছিলাম তাই নারীকুলের প্রতি ছুড়ে মারলাম কারা যেনো ভালবেসে আলো জ্বেলেছিলো সূর্যের আলো তাই নিভে গিয়েছিলো ................................................. ................................................. আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা আর কতকাল আমি রবো দিশেহারা.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।