আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নুয়াখাইল্যা হেরেম (নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে)

আমার মৃত্যু যেন আমার সকল ইচ্ছা পূরণের পর হয়

লেখক ঘুমাতে গেলেন ভোর পাঁচটায়। সকাল নয়টায় চোখ খুলতেই চোখের সামনে একজন যুবককের দেখতে পেলেন। যুবকটি হাসি মুখে সালাম দিলেন। লেখক সালামের উত্তর দিলেন। যুবকের নাম কাশেম।

যুবক এ বাসায় কাজ করে এবং জামান সাহেবের বেশ প্রিয়। লেখক জানতে চাইলেন তার এখানে আসার কারন। যুবক হেসে হেসে বললেন > জামান ভাই কইছে আমনের লগে থাইকতো, আমনে বোলে হারাই যান। লেখক বিরক্ত হলেন। জামান সাহেব কোথায় প্রশ্ন করতে যুবক বলেন > ভাইয়া এক্কানা কামে গেছে, আমনেরে কইছে হাত মুক ধুই আঁর লগে হে মিয়ার হোর বাড়ীত যাইতেন।

লেখক হাত মুখ ধুয়ে নিলেন। তার পর কাশেমকে তাঁর গোসল করার ইচ্ছা জানালেন। কাশেম সাথে সাথে লেখককে পুকুরে গোসল করার নিমন্ত্রন দিলেন। লেখক সামান্য আশ্চর্য হয়ে বললেন বাথরুমে গোসল করা যায় না? যুবক বলে > হুইরে গোসল কইললে ভালা লাইগবো। হানি হেরেশ লেখক কাশেমের সাথে পুকুরে গেলেন।

আসলেই পুকুরের পানি একদম স্বচ্ছ। লেখক সাতার পারে না। তাই মগ দিয়ে গোসল শুরু করলেন। ওদিকে কাশেম হাসতে থাকে। > ভাইয়া আমনে বুজি হাঁতার হারেন না? আমগো ইয়ানে এদ্দুরি এদ্দুরি হোলাহাইন হাঁতার হারে।

লেখক সামান্য ইনসাল্ট হলো। হঠাৎ করে পাশের ঘাট থেকে মেয়েদের হাসির শব্দ পাওয়া গেলো। লেখক খালি শরীর আর লুঙ্গি পরিহিত থাকায় তাড়াতাড়ি পুকুরের নেমে গেল। কাদার মধ্য দাড়িয়ে এমন একটা ভাব করলো যে তিনি সাঁতারে পটু। ভাল করে চেয়ে দেখে লেখকের পছন্দের সেই যুবতী ও গোসল করতে এসেছে।

লেখক অনেক লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি পুকুর থেকে উঠে গাছের আড়ালে গিয়ে কোনো রকম গা মুছে সোজা বাড়ীর দিকে চলে এলেন। কাশেম ও সাথে সাথে আসলো। সকালের নাস্তা করা হয়নি। কাপড় পড়ে রেডি হতেই কাশেম বলে > ভাইয়া রিক্সা লই আইছি লেখক আর কাশেম রিক্সায় যাচ্ছে। লেখক সিগারেট ধরালেন।

কাশেম হেসে বলে > খালি হেঠে সিগারেট খাইলে সমইস্যা অয়। লেখক প্রশ্ন করে কাশেম তুমি কত দিন ধরে এখানে কাজ করো? > ছোঠ বেলাত তুন আছি। রিক্সা থামলো। একটা বাসার সামনে। ঢুকলাম।

জামান সাহেব বসে আছে। দেখতেই কাছে আসলেন। সরি বললেন যে লেখককে একাই ফেলে রেখে এসেছেন। লেখক হাসি দিয়ে এটা তেমন কোনো ব্যাপার না জানালেন। সকালের নাস্তা দেয়া হলো।

প্রথমে নানা রকম পিঠা নাম মনে নেই তবে আমার প্রিয় ডিম পিঠা ছিলো। পিঠা পর্ব শেষে নেহেরি আর রুটি দেয়া হলো। বেশ মজার। নাস্তা পর্ব শেষে পরিচয় পর্ব শুরু হলো। জামান সাহেবের শশুর শাশুড়ীর সাথে পরিচয় হলো।

উনারা বেশ ভালো 'বাবা' বলে সম্বধন করলেন। জামান সাহেব বাজারে যাবেন তাই আমাকেও সাথে নিলেন। আমরা রিক্সায় সাথে কাশেম ও আছে। কাশেম আর জামান সাহেবের মধ্য কথা হচ্ছে > হুরে জামান ভাই জানেন নি এই ভাইয়ে হাঁতার জানে না। খিক খিক খিক জামান সাহেব: > না জাইনলে কি হইছে।

আঁই ও জানি না। বাজারে চলে এসেছি। বেশ ভীড়। জামান সাহেব চোখের সামনে যা দেখছে তাই কিনতেছে। কিন্তু উনার দামাদামি করা দেখে বেশ অবাক হলাম, ২২০০ টাকার রুই মাছ উনি ৯৫০ টাকায় কিনেছেন।

কাশেম সাথে সাথেই আছে। বাজার প্রায় শেষ। কাশেমের কাছে সব বাজার দিয়ে আমরা জামান সাহেবের এক পরিচিতের বাসায় দেখা করতে গেলাম। দুপুর ২টার দিকে বাসায় ফিরলাম। বাসায় ফিরে দেখি রান্না ঘরে বেশ ভীড়।

ওদিকে জামান সাহেব শরবত নিয়ে আসলেন। শরবত খাওয়া শেষে জামান সাহেব তাঁর শালীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবেন বলে আশ্বস্ত করলেন। শালীর আগমন। জামান সাহেব বললেন এ হলো আমার একমাত্র শালী লাবণ্য। নামটা বেশ সুন্দর।

লাবণ্য সালাম দিলো। > আপনি নাকি সাঁতার জানেন না? শুনে অবাক আমি আরে এ মেয়েতো দেখি শুদ্ধ বাংলাও পারে। লাবণ্যর সাথে নানা কথা হলো। পড়ালেখায় ইন্টার পর্যন্ত করেছে। পরে আর পড়েনি।

জামান সাহেব বললেন বেশি সুন্দরী দেখে সবার নজরে পড়ে গেছে তাই আর বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া হয়নি। আসলেই মেয়েটা সুন্দর। দুপুরের খাওয়া দাওয়া হলো। বিশ্রামের জন্য একটা রুমে গেলাম। ঘুমিয়ে গেলাম।

উঠে দেখি ৬টা বাজে। চোখ খুলতেই কাশেম। নাস্তা নিয়ে হাজির আর হাতে একটা গামছা। > ভাইয়া কইছে আন্নেরে হাত মুক ধুই নাস্তা করি রেডি হইতেন, হে মিয়া আঁই আম্নেরে লই যাইবো। মুখ ধুয়ে নাস্তা করলাম।

কাশেমকে বললাম 'কাশেম এখানে সিগারেট খাইলে কোনো সমস্যা আছে?' > আরে ধুর কি হইবো! আম্নে খান, ইয়ানে কেউ আইয়েনা জামান সাহেবের আগমন। উনার সাথে রিক্সায় চেপে গেলাম এক বাড়ীতে। সেখানে হলুদ সন্ধ্যা চলছে। আমি একটু ইতস্ত বোধ করলাম। জামান সাহেব বললেন আমার কাজিন সমস্যা নেই।

ভিতরে যেতেই অন্য পরিবেশ। শুধু মেয়ের দল আর মুরব্বীরাও আছে। একটা মেয়ে স্টেজে বসে আছে, তাকে ঠিক মত দেখলাম না, তার পুরো মুখটাতেই হলুদ দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে। কিছুক্ষন পর খাওয়া দিলো। জামান সাহেবের মুখের দিকে চাইতেই তিনি বললেন 'আরে খান, একটু খেলে কিছু হবে না!'।

খাবার পর্ব শেষ। পরে উনার কাজিনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। কাজিনের বাবা ও ছিলেন, উনি আমাকে বলেই বসলেন 'বাবাজী কি বিয়ে করেছেন?' আমি উত্তর দেবার আগেই জামান সাহেব বলেন 'আরে না, বেচারার বয়স ই হয়নি!' এতো অতিথি পরায়নতা দেখে আমি আমার মিশনের কথা ভুলেই গেলাম। জামানের সাহেবের সুন্দরী শালী! কিন্তু জামান সাহেবের এমন সুন্দর আচরন দেখে আর উনাদের পরিবারের এমন আদর পেয়ে সাহস পেলাম না আমার মিশন চালাতে। তাই ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।

জামান সাহেবকে বললাম > জামান সাহেব আমি বরং এবার যাই। কালকের সকালের বাসে ঢাকা যেতে হবে। > আরে না এত তাড়া কিসের! এক সপ্তাহ থেকে যাবেন! > না না আমার বাসায় সবাই অপেক্ষা করবে! জামান সাহেবের মুখটা শুকিয়ে গেল। বিয়েতে এটেন্ড করে যাবার অনুরোধ করলেন। না করতে পারলাম না।

জামান সাহেবকে বলে একটু বাইরে যাবার ইচ্ছা পোষন করলেন। এবার তিনি ঠিক আমার মোবাইল নাম্বার নিয়ে নিলেন। বাইরে এসে একটা সিগারেট ধরালাম। পাশে তাকিয়ে দেখি কাশেম। > তুমি এখানে কি করো? > আন্নের লগে আঁই আছি, আমনে যে মুই যাইবেন, আঁই হেই মুই যামু কোনো কথা না বাড়িয়ে হাটতে থাকলাম....


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।