আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হারবাল চিকিৎসা ও আমরা

Service holder

ন্যশনাল জিওগ্রাফিতে একটা বিজ্ঞাপন দেখে আজ ভীষন অবাক হলাম। বড় বড় বিজ্ঞাপন প্রচার করে, বিভিন্ন ভাবে প্রচারনা চালিয়ে বিভিন্ন হারবাল কোম্পানীগুলো যে মানুষকে প্রতারিত করছে বিজ্ঞাপনটা তা থেকে মানুষকে সতর্ক থাকার জন্য প্রচারিত। আমাদের এই জনবহুল শহরে আনাচে কানাচে বড় বড় হারবাল কোম্পানী তাদের প্রতারনার ফাদ পেতে বসে আছে এবং সহজ সরল ও অসহায় মানুষকে তাদের প্রতারানা শিকার বানাচ্ছে। আমাদের দেশে এ নিয়ে কি হচ্ছে? বেশ কিছু দিন আগে পত্রিকায় দেখেছিলাম র‌্যাব এই সব প্রতারক দমনে মাঠে নামবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

আমার মনে হয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাঠে নামা জরূরী। ঢাকা শহরের বেশির ভাগ ট্রাফিক সিগনালে এক ধরনের বিজ্ঞাপন বিলি করতে দেখা যায় আর তা এই হারবাল চিকিৎসার। বোরকা পড়া মেয়ে বা ছোট ছোট ছেলেরা এই ধরনের বিজ্ঞাপন বিলির কাজে নিয়োজিত। কোন সিগনালে গাড়ি থামলেই এরা গাড়ির জানালা দিয়ে বিভিন্ন রকমের চটকদার বিজ্ঞাপন গাড়ির ভিতরে দিতে থাকে। এদের বিজ্ঞাপনে যৌন দুর্বলতা, গ্যাষ্ট্রিক, হাপানী ডায়াবেটিক গ্যারান্টি সহকারে ৭ দিনে ভাল করার লোভ দেখানো হয়।

সহজ সরল মানুষগুলো এই সব চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে প্রতারনার শিকার হয়। একবার আমি পত্রিকায় এদের প্রতারণা সম্পর্কে বিস্তারিত পড়েছিলাম। অবাক হয়ে ভেবেছিলাম কত সহজে মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এরা নিজেদের এই অসৎ ব্যবসা পরিচালনা করছে। পরবর্তীতে আমার এক ঘনিষ্ট কলিগ যখন তার দুর্দশার কথা বর্ননা করলেন তখন আমাদের দেশের আরও একটা অসার দিকের কথা মনে হল। এ রকম বিজ্ঞাপন দেখে তিনি গিয়েছিলেন ফার্মগেটের ”দেশ হারবাল” নামক একটা প্রতিষ্ঠানে।

ঢুকতেই ভদ্র বেশী দুই যুবক জিজ্ঞেস করেছিলেন কোথা থেকে কিভাবে আমার ঐ বন্ধুটি তাদের কথা জানলেন। যাহোক ঘটনাটা এরকম: ভদ্রবেশী একজন লোক যিনি নিজেকে ডাক্তার বলে পরিচয় দিলেন এবং সবিস্তারে ঘটনা শুনলেন তারপর উনার ”স্যার” দেখবেন বলে যাকে একটু নাটক করে হাজির করলেন তিনি কোনমতে বাংলা লিখতে পারেন বলে তার তিন দিন পর প্রমানিত হল। যাইহোক ঐ ডাক্তার ভদ্রলোক যিনি নিজেকে মিরপুর ইউনানী কলেজের লেকচারার হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি আমার কলিগ এর কাছ থেকে ১৫,৬০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রথম দিন ডেস্কের উপর একটা রশিদ বই ছিল যাতে বিভিন্ন জনের নাম এবং ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকার ওষুধ নেয়া হয়েছে এই মর্মে রশিদ লিখা ছিল যা দিয়ে ঐ প্রতারক আমার কলিগকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়েছিল যে, তাদের ওষুধ অত্যন্ত কার্যকরী এবং বেশীর ভাগ মানুষ তাদের কাছ থেকে সেবা গ্রহন করে উপকার পাচ্ছেন। বেচারা সুদুর ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে এসে তিন দিন ঢাকা থেকে যা পেলেন তা দেখে তাদের প্রতারণা বুঝতে পারলেও কিছু করতে পারেননি কারনটা আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারবেন।

এরকম প্রতারণা ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত হচ্ছে শুধু লোক লজ্জার ভয়ে মানুষ তা নিয়ে কোন রকম অভিযোগ করছেনা। আসলে এটা আমারদের অজ্ঞতা মাত্র। এটা অতি সাধারণ ব্যপার হওয়া উচিত, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় তা অর্ন্তভুক্ত হওয়া উচিত। এ ব্যপারে আমাদের সামাজিক ভাবে একটা বাধা আছে যা আসলে থাকা উচিতনা। সব চাইতে বড় কথা আমাদের এই সব প্রতারকের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অভিযোগ করে তাদের সাহায্য চাইতে হবে।

আমরা যদি লোক লজ্জার ভয়ে থানায় অভিযোগ না করি তাহলে আজ আমি কাল আপনি বা আমার আপনার ঘনিষ্ট কেউ হয়তো প্রতারিত হবে। এই সব প্রতারক আসলে আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাদের জিম্মি করে টাকা আদায় করে। এদের ব্যপারে আমাদের সচেতন হতে হবে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.