আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"বাথরুম সাহিত্য"

সুন্দর স্বপ্ন ।

ইচ্ছে ছিল না এমন একটি পোস্ট দেবার । তবুও দিলাম । অনেক সময় ইচ্ছের বিরুদ্ধেও অনেক কাজ করতে হয় । এটা সেরকমই একটি কাজ (অকাজ) ।

আমার এক প্রিয় বন্ধুর অনুরোধে এ কাজটি করলাম । অনুরোধে ঢেঁকি গেলার মত ব্যপার (ঢেঁকির চেয়েও বড় বড় কিছু মাঝে মাঝে এ বন্ধুর জন্য আমাকে গিলতে হয়) । আমার এ বন্ধুটির ধারণা ব্লগে হালকা/চটুল লেখার কদর নাকি বেশী । সিরিয়াস তথা উঁচু মানের লেখার কদর নাকি এখানে একটু কম । এটা তার নিজস্ব স্বাধীন মতামত ।

তাই মন্তব্য নিস্প্রয়োজন । স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার সবারই আছে । (অবশ্য ব্লগে পুরোপুরি নেই, কারণ এখানে শর্ত জুড়ে দেয়া আছে । ইচ্ছে হলেই কর্তৃপক্ষ লেখা হাপিস করে দিতে পারেন কিংবা আপনাকে ব্লক করে দিতে পারেন । তাই সাবধান থাকতে হয় মত প্রকাশে)।

এবার আসল কথায় আসি । মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় বিভিন্ন বিষয়ের সাথে সাথে একটা নতুন বিষয় লক্ষ্য করলাম । বিষয়টা হচ্ছেঃ "বাথরুম সাহিত্য" । "বাথরুম সিংগার" প্রচুর দেখেছি কিন্তু বাথরুম সাহিত্যিক এই প্রথম দেখলাম । দেখলাম বললে ভুল হবে কারণ তাদের সাথে সরাসরি পরিচয় কখনো হয়নি ।

কিন্তু তাদের প্রতিভার সাথে পরিচিত হয়েছি । (এরা জংগী সংগঠনের মত নিরবে নিভৃতে কাজ করে যায় । তবে এরা কিন্তু পুরোপুরিই নিরীহ, জংগী নয়) । তাদের গ্রহনযোগ্যতা যদিও প্রশ্নবিদ্ধ তবুও তাদের প্রতিভা আমাকে মাঝে মধ্যেই মুগ্ধতার পরশ বুলিয়েছে । তাদের এ সাহিত্য কর্ম কাগজে নয়ঃ বাথরুমের দরজা/দেয়ালে লেখা থাকতো ।

লেখার মাধ্যম চক , কাঠ কয়লা, ইটের ভগ্নাংশ কিংবা ধারালো কিছু (হয়তো বাংলাদেশের নাজুক অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে কাগজ/কালি বাঁচানোর তাগিদে তারা এমন পন্থা অবলম্বন করতো । ব্যাপারটা গবেষণার দাবি রাখে । হ'তে পারে কারো না কারো "পিএইচডির" থিসিসের বিষয়) । সাহিত্যের নতুন ধারায় এগুলো কতটুকু গ্রহণীয় কিংবা মানসম্পন্ন হবে তার বিচারের দায়ভার আপনাদের কাছে রইল (একদিন হয়তো সাধুবাদ পাবে)। গদ্য, পদ্য, কবিতায় কিংবা কার্টুন/ছবিতে তারা তাদের ভাব প্রকাশ করতো ।

দূর্গন্ধ আর বাথরুম নোংরা থাকাটা ছিল সেসময়ের নিত্যাকার ঘটনা । এটা তাদের সাহিত্য কর্মকে হয়তো আরও বেশী বেশী উসকে দিত । তাদের অজস্র সৃস্টি থেকে নিম্নে গুটিকতক নমুনা দেয়া হ'ল মাত্র । পাঠক ! সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করুন । (১) দরজা লিখন / দেয়াল লিখনঃ "স্মৃতি ফেলিয়া যাবেন না আপনার স্মৃতি বড়ই বেদনা দায়ক (দুগন্ধময়)।

। " উপদেশঃ বেশী করে পানি ঢালুন । (২) "অ মিয়া ভাই হাগিয়া গুঁ যাবেন না রাখিয়া । । " উপদেশঃ দয়া করে পানি ঢালুন ।

(৩) "যাবার বেলা এই কথাটি বলিয়া আমি যাই কাল সকালে তোমার স্মৃতি দেখিতে নাহি চাই । । " উপদেশঃ পানি ঢালুন, চেন টানুন । (এটা মনে হয় নকল; মৌলিক সাহিত্য নয়) (৪) "আজকে তুমি ছাড়ছো যাহা কাল আমি ছাড়িব তাহা, গন্ধে তুমি বুঝিবে আহা ! ভুল করেছি, করিছি যাহা । ।

" উপদেশঃ সাবধান ! পানি ঢেলে যা, না হলে গন্ধ খা । (৫) "কাশ গুল্লি ফেলিয়া ক্যান যাস ভুলিয়া তুই একটা *হুলিয়া । । " *হুলিয়া =হুলো বেড়াল সম্ভবত । (৬) এটা দরজা, ৩ দিকের দেয়াল ও ছাদে লিখা ছিলঃ একদিন সকাল বেলা প্রাতঃকম করতে বসে দরজা বন্দ করতেই চোখে পড়লো দরজার লেখাটা ।

"ডানে তাকান" -- সুবোধ বালকের মত ডানে তাকালাম । সেখানে লেখা -- "বামে তাকান" । যথারীতি বামে তাকালাম । সেখানে লেখা --"পিছনে তাকান" । এবার ঘাড় ঘুড়িয়ে কস্টে পিছনে তাকালাম ।

সেখানে দেখলাম লেখা -- "উপরে তাকান" । অগত্যা তাই করলাম । উপরে তাকিয়ে যা লেখা দেখলাম তা হচ্ছেঃ "এই ব্যাটা আহাম্মক, এত এদিক ওদিক তাকালে আসল কর্ম 'হাগু' করবি কখন ? পাঠক, অনুধাবন করুন, কত বড় বোকা আমি ! পুনশ্চঃ পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, মেডিকেল কলেজ, কলেজ ও স্কুলগুলোর বাথরুমে এমন অনেক সাহিত্য কর্মের নজির রয়েছে বলে জানতে পেরেছি । ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.