আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্তর আত্মার কথন

তোমার অস্তিত্বে সন্দিহান, তবু্ও সদাই তোমায় খুঁজি

আমার নিজের একটা ভূবন আছে। আমার নিজের একটা পৃথিবী আছে। তার স্রষ্টা আমি নিজেই, ঈশ্বর নন। সেখানে আমার সত্ত্বার আইন চলে, ইশ্বরের নয়। রাষ্ট্রীয় নিয়মের কোন শৃংখল কিংবা বিশেষ বাহিনীর প্রভাব অথবা ভ্রুকুটির কোন অস্তিত্ব নেই সেখানে।

কেবলমাত্র নিজের সত্ত্বার আদেশে এ পৃথিবী চলে, প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রের নামে বুকের উপর চেপে বসা কোন গণতান্ত্রিক সরকারের ইংগিতে নয়। আমার পৃথিবীতে আত্মার চাহিদারই সর্বময় কর্তৃত্ব, শিল্পের নয়। কতিপয় এলিট নামধারী যারা নিজেদেরকে সাধারনের চেয়ে আলাদা ভাবে তারাই শিল্প সৃষ্টি করেছে। শিল্প শুধুমাত্র তথাকথিত ঐ সকল মানুষের ড্রয়িংরুমের সৌখিনতার মাঝেই বিরাজমান। আত্মার উপস্থিতি সর্বত্র।

আত্মার সবার মাঝে সমানভাবে বিরাজমান। এমনকি যে মানুষ আত্মার চাহিদার চাইতে শিল্পকে বেশি গুরুত্ব দেয় সেও আত্মার আওতার বাইরে নয়। যদিও সে সব সময়ই তা চেপে রাখার চেষ্টা করে। আমার পৃথিবীর ভিত্তি মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধ-বান্ধবের বন্ধনে চির অটুট। দৈনন্দিন জীবনের ঝামেলা থেকে একেবারেই মুক্ত।

সেখানে আমাকে প্রতিদিন ছেড়া থলি হাতে বাজারে যেতে হয়না। বাজার থেকে ফিরে নিত্যদিন বউয়ের আক্রমণাত্বক ভাষার সম্মুখীন হতে হয়না। এই অল্প টাকায় কিভাবে মাসটা চালাব তা নিয়ে ভাবতে হয়না। মাস শেষে টানাটানি নেই, বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাড়িওয়ালার সাথে মনোমালিন্য নেই। আমার ভূবনের নদীগুলো অমর।

সদা বহমান, সদা যৌবনা। ছেলেবেলায় গোমতীকে যেমন দেখেছিলাম, কৈশোরে বুড়িগঙ্গাকে যেমন দেখেছিলাম, ঠিক তেমনই। নদীগুলোকে কেউ দখল করতে পারেনি, পারবেও না। আমার অন্তর আত্মার জমিন দিয়ে এরা চির বহমান। জন্মের সময় যে যেরূপে ছিল ঠিক তেমনই।

আমার পৃথিবী চলমান পৃথিবীর বাস্তবতাকে মেনে নিতে নারাজ। সেই কবে কৈশোরে একজনকে ভালবেসেছিলাম। পৃথিবীর চলমান ধারায় সে এখন অন্যের ঘরে। স্বামী, সন্তান, সংসার নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত এক রমণী। কিন্তু আমার পৃথিবীতে সে এখনও কৈশোরের চিরচঞ্চলা।

সে এখনও শুধু আমার, শুধুই আমার। আমার পৃথিবী অবিনশ্বর। রোগ, শোক, মৃত্যু তাকে স্পর্শ করতে পারেনা। সৃষ্টার পৃথিবী ধ্বঃস হয়ে গেলেও আমার পৃথিবী স্বমহিমায় টিকে থাকবে। এমনকি সৃষ্টার দেয়া আমার এ শরীর ধ্বঃস হয়ে গেলেও আমার ভূবন টিকে থাকবে।

কারণ দেহ নশ্বর, আত্মা অমর। আমার পৃথিবী আত্মার সুদৃঢ় বলয় দ্বারা সব সময়ই সুরক্ষিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।