এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে
যৎসামান্য পূর্বকথা : নিজের সঙ্গে নিজেই আড্ডা দিতে কবিতার জুড়ি নেই। সবার নয়; কারও-কারও কবিতার সঙ্গে। জীবনানন্দ দাশের সেই বিখ্যাত উক্তি 'সকলেই কবি নয় কেউ কেউ কবি'র 'কেউ কেউ'এর সঙ্গে যাঁদের মিল খুঁজে পাই। মূলত নিজের জন্য এই সিরিজ পোস্ট। প্রিয় কবির প্রিয় কবিতা ফিরে পড়া।
সেই সঙ্গে ব্লগেও সংরক্ষণ করা। ধরা-বাঁধা নিয়মে নয়; যখন যাঁকে মনে পড়ে। এই পর্বে কবি আবু কায়সারের দুটি কবিতা- 'বিষুবে যাও' ও 'সারিন্দার সুরে'। কবিতা দুটি কবির 'নির্বাচিত কবিতা' থেকে নেওয়া।
বিষুবে যাও
বুকের পাশে কে যেন হাত রাখে
বুকের ভিতর বিকেল নেমে আসে
পাহাড়ে মেঘ পাঁজর খুলেছিলো--
ফেলেছে ফুল বিষন্ন জলপাই;
তোমরা কারা তোমরা কেন এসে
যোজন জোড়া অবিশ্বাসের ঘরে
দোর-ঘণ্টির বোতাম খুলে ফ্যালো
তোমরা কারা তোমরা কেন আসো?
মুখের রেখা বাষ্পে ভরে যায়
রাঙা রেশম নষ্ট নুয়ে পড়ে
বুকের ভাঁজে ঘুরছে শুয়োপোকা
তোমরা পোড়া বাগান কিনেছিলে।
বিষুবে যাও বিষুবে পাবে তার
বুকের থেকে হারিয়ে যাওয়া হাড়--
তোমরা কারা, তোমরা কেন আসো!
সারিন্দার সুরে
শালুক তোলার পালা শেষ
নরম মাটির নিচে আছে
আকাঙ্ক্ষিত পাটের শিকড়
চলো এই বেলা খুঁটে আনি।
বিকেলের আদিগন্ত চকে
ধোঁয়া ওঠে করুণ সুন্দর
কাদামাখা নাড়ার আগুনে
তোমার বাসনাগুলো জ্বলে।
তরল আলতা পরা পায়ে
সকৌতুকে সুড়সুড়ি দেবে
রোদে ভাজা কালো শ্যাওলার
ক্ষণজীবী হাওয়ার মিঠাই!
স্বপ্নসাধ গিলেছে শামুক
তারপরে বাঁওড়ের ঘাসে
ঘুমিয়েছে ঘন হেলেঞ্চায়
বন্ধ রেখে মুখের কপাট।
দক্ষিণের ক্ষেতে গলাপানি
উড়ে গেলো কলার আবাদ ;
অথচ এ দিগরে ধনিচা--
ডালে দোলে সুঁইচোরা পাখি।
অনেক কেঁদেছো গতরাতে
জীপসি মেয়ের মতো হাসো
ছানি পড়া চোখের সম্মুখে
সারিন্দার সুর তুলে নাচো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।