বিকেলের সূর্যটা পড়িয়া আসিয়াছে। কেউ কেউ ঘরে ফিরিয়া যাইতেছে, আর কেউ ঘর থেকে বাহির হইয়া আসিয়াছে। রাস্তার ওধারটায় যেখানে একটু মোটা হইয়া উঠিয়াছে, সেখানে পোলাপানগুলি নানান ধরনের খেলা খেলিতেছে। কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হইয়া তারা খেলিতেছে। দশ বারো বছরের বেশি ছেলে মেয়ে এখানে নাই।
মুক্ত বিহঙ্গের মত বাঁধন হারা খেলা। কি হিন্দু কি মুসলমান সবাই সবার হাত ধরিয়া খেলিতেছে। ভ্রাতৃসম মায়া ও টান।
অন্ধকার ক্রমশ টান মারিয়া সকলকে গৃহে লইয়া আসিল। খেলার বন্ধন ছুটিয়া গেল।
যে যাহার স্ব অবস্থানে আসিয়া পৌঁছাইল। রাত্রি গাঢ় হইয়া আসিল। ঘুমের ঘরে কে যেন কড়া নাড়িল।
প্রত্যুষে সকলেই জাগিয়া উঠিয়াছে। মানুষের সাথে সাথে সমস্ত প্রাণি জগতের চেতনার আবির্ভাব হইল।
মোরগগুলি ক্রমশ ডাকিয়া চলিতেছে। মুয়াজ্জিনের আযানের ধ্বনি এমন কে আছে যার কানে যায় নাই? পোলাপানগুলি দল বেঁধে ঘর থেকে বাহির হইয়া আসিতেছে। মেয়েগুলি গলায় মাথায় ওড়না চাপিয়া লইয়াছে আর ছেলেগুলি হাফপ্যান্টের সহিত মাথায় একটি টুপি দিয়া রোজকার মত মক্তবে যাইতেছে আরবী পড়িতে। কেবলমাত্র একটি মেয়ে তাকাইয়া আছে বারান্দা দিয়া। সেও মুয়াজ্জিনের আযান শুনিয়াছে।
আর সবার মত সেও প্রত্যুষে ঘুম ভাঙ্গিয়া উঠিয়াছে। কেবল তফাৎ তাহাদের সহিত সে যাইতে পারিল না। প্রতিদিনের বিকালের খেলার সাথীগুলি কেবলমাত্র সকালে তাহাকে একা ফেলিয়া যায়, ইহা তাহার ভাল লাগে না। একদিন প্রত্যুষে সেও তাহার মায়ের একটি ওড়না পেঁচাইয়া মাথা মুড়ি দিয়া তাহাদের দলে ভিড়িল। সকলে অবাক হইয়া তাহার দিকে তাকাইয়া বলিল, “তুই কোথায় যাইবি?”
“কেন? তোমাদের সাথে !!”
“তুই তো হিন্দু !!!”
মেয়েটি মাথা নাড়িয়া বলিল, “আমি এতসব বুঝিনা, তোমরা যেখানে যাইবে আমি সেখানেই যাইব।
”
সকলেই তাহাকে তাহাদের দলে টানিয়া লইল ও মক্তবে নিয়া গেল_________।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।