আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সকলেই কবি নয় কেউ কেউ কবি ৪ : কবি রহমান হেনরীর দুটি কবিতা

এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে

পূর্বকথা : সে এক সময় ছিল। শীতলক্ষ্যাপাড়ের শহর নারায়ণগঞ্জে প্রতি শুক্রবার সকালে 'ধাবমান'-এর সাহিত্য আড্ডা বসত; প্রায়ই যেতাম (এখনও বসে; যাওয়া হয় না)। আড্ডার মধ্যমণি ছিলেন রনজিত কুমার। আমাদের সবার প্রিয় 'রনজিতদা'। একসময় বামরাজনীতির সঙ্গে জড়িত এই মানুষটি আড্ডার প্রতিটি সদস্যকে ছায়ার মতো আগলে রাখতেন।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের চাকরিতে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি আর আগের মতো সময় দিতে পারেন না 'ধাবমান'এ। কর্মজীবনের ধাক্কায় আমরাও ছিটকে পড়েছি রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে। ছিটকে পড়লেও 'ধাবমান'এর আড্ডার কথা কোনওদিনই ভোলার নয়। সকালের আড্ডা 'শ্রুতি'র হারমোনিয়াম-তবলা ছুঁয়ে কোনও-কোনও দিন শীতলক্ষ্যায় গড়াত। নৌকা নিয়ে ওপারের পাটগুদাম মাঠেও গেছি দল বেঁধে।

সঙ্গে প্রিয় কোনও কবির কবিতার বই থাকলে তা থেকে পাঠ করেছি কেউ একজন। শুনেছি সবাই। অভ্যাসটি এখনও রয়ে গেছে। সঙ্গী পেলে তো ভালো, না-পেলেও নিজের সঙ্গে নিজেই আড্ডা দিতে কবিতার জুড়ি নেই। সবার নয়, কারও-কারও কবিতার সঙ্গে।

জীবনানন্দ দাশের সেই বিখ্যাত কথাটির মতো-- 'সকলেই কবি নয় কেউ কেউ কবি'। মূলত নিজের এবং 'সামহোয়ার ইন'এর কবিতাপ্রিয় পাঠকদের জন্য আমার সিরিজ পোস্ট : 'সকলেই কবি নয় কেউ কেউ কবি'। ধরা-বাঁধা নিয়মে নয়; যেদিন যে প্রিয় কবিকে মনে পড়ে, তাঁকেই সংরক্ষণ করি ব্লগে। কবিতায়। আজকের পর্বে কবি রহমান হেনরীর ছোট-বড় দুটি কবিতা।

প্রথমটি কবির 'বিষাদের চন্দ্রবন' এবং দ্বিতীয়িট 'খুনঝরা নদী' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া : নির্দেশ আমি বললেই যদি এখানে নদী বয়ে যায় তো, আমি পাথরকে নির্দেশ দিচ্ছি-- হে পাথর শেকড়ের গান গেয়ে ওঠো স্মৃতিসম্মেলন তোমাকে দেখতে যাবো সাধু যোশেফের সমাবেশে উনিশ শ' একাশি খ্রিস্টাব্দের সোনালি উৎসবে; তখন আমার দুঃখ মাধ্যমিক, আর তুমি নিম্নমাধ্যমিকে-- এ রকম উৎসব পুনরায় স্মৃতিতে সম্ভব। তোমাকে দেখতে যাবো অনুতপ্ত স্মৃতিসম্মেলনে। যে রকম প্রাথমিক গণিতের দিনে দেখতে গিয়েছি সেই জোয়াড়ির বিশীদের বাড়ি; বাড়িতে মানুষ নেই-- বাড়িটিও নেই-- তবু আমি ঘুরে ঘুরে কেন দেখি সারাটি দুপুর? তুমি নেই, কখনও ছিলে না-- অস্তিত্ব বিষয়ে এই চিরায়ত অনুজ্ঞাও অস্বীকার করছি বিনয়ে; আমার যে কোনও পণ সবিনয় জেদ। অতএব যাবো, তোমাকে দেখতে যাবো স্থাপনদিঘিতে রাণীভবানীর ছাদে যে রকম সারারাত তোমাতে দেখেছি-- শিশিরের ছলে শুধু রক্ত ঝরেছে সারারাত-- রাতভর নক্ষত্রের বীভৎস শরীর থেকে সহিংসার অগ্নি ঝরেছে... ঝলসে যাওয়া দেহে তবু পালিয়ে আসিনি; সাহসী ইচ্ছায় দৃঢ় ভষ্মে হতভম্ব দাঁড়িয়ে থেকেছি আর দেখেছি তোমার নৃত্য ভয়ঙ্কর অগ্নিদিঘিতে... তোমাকে দেখতে যাবো, চন্দ্রাবতী কবিতা আশ্রমে-- গীতিকা উৎসব যদি ব্যর্থ হয়-- অসম্ভব স্বপ্ন হয়ে যায়-- তবু যাবো; রোদ ভেঙে, শিশির মাড়িয়ে, বাসে-ট্রেনে, পায়ে হেঁটে ঘুমের ভেতরে... অবিকল্প যাবো! একবার, তোমাকে দেখতে যাবো, অ স ম্ভ বে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.