আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপি আবার ঝামেলায়ঃ সমস্যা ১-তারেক, সমস্যা ২-আরেক?

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।
২০০১-২০০৬ সালের চিত্রটি ছিলঃ ১) একসাথে ৬৩ টি জেলায় বোমা হামলা। . ২) দুর্নীতিতে একাধারে ৪ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। . ৩) রেকর্ড সংখ্যক বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদদের হত্যা (আ স ম কিবরিয়া, আহসানুল্লা মাস্টার, আইভি রহমান, মমতাজ উদ্দিন প্রমুখ)। . ৪) রেকর্ড সংখ্যক (১০ ট্রাক) অস্ত্র উদ্ধার।

. ৫) রেকর্ড পরিমান সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন। . ৬) রেকর্ড সংখ্যক সহিংসতা (২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ব্রিটিশ হাই কমিশনারের উপর গ্রেনেড হামলা, বিচারক হত্যা, সাংবাদিক হত্যা, হুমায়ন আজাদ হত্যা চেষ্টা ইত্যাদি)। . ৭) রেকর্ড পরিমান মুদ্রা প্রাচার (৫০ সুটকেস)। . ৮) রেকর্ড সংখ্যক বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই খাম্বা পুতা। . ৯) রেকর্ড পরিমান দেশের সম্পদ লুট (এতিম খানার ৩ কোটি টাকা ও বাদ যায় নাই) ১০) বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের জন্ম ১১) বাবার কোলে থাকা শিশুর মাথায় সন্ত্রাসীদের গুলি ১২) গভীর রাতে ঢাকা ভার্সিটির ছাত্রী হোস্টেলে পুলিশের হামলা ১৩) সরকারী কর্মচারীর বিছানা এবং গদি থেকে কোটি টাকার রহস্য শুরু করলে শেষ হয় না এমন অবস্থা, কিন্তু আমরা জাতে বাঙালি সবকিছু পাঁচ বছরে ভুইলা হজম কইরা ফালাই...... তবে বিএনপি আবার ঝামেলায়।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে এবং দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে সংকটে পড়েছে দলটি। দেশে ফেরার পর তাঁর হাতে বিএনপির নেতৃত্ব তুলে দিতে চান খালেদা জিয়া। এ নিয়ে দলকে নানা বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক বলেছেন, দলে এখন দুটি বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এক. যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়া।

এ জন্য আদর্শিকসহ সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করা। কারণ, ক্ষমতায় যেতে না পারলে দলের ভাঙন ঠেকানো কঠিন হতে পারে। দুই. তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে দলের দায়িত্ব দেওয়া। এই নীতিনির্ধারকেরা জানান, খালেদা জিয়া তারেককে এনে দলের দায়িত্ব দিতে চান। এর জন্যও দলকে ক্ষমতায় যেতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা।

কারণ, ক্ষমতায় না গেলে তারেককে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। কিন্তু দলের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, তারেক রহমানকে দলে প্রতিষ্ঠিত করার এই প্রচেষ্টার কারণে ইতিমধ্যে দলে নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। কারণ, জ্যেষ্ঠ নেতাদের বেশির ভাগই তারেককে পছন্দ করেন না। কয়েকজনের তারেকের সঙ্গে রাজনীতি করতেও আপত্তি আছে। কারণ, তারেকের বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদেরও প্রশ্ন আছে।

তাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গিদের মদদ দেওয়া ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তারেকের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন এই নেতারা। এর বাইরে দলের একটা অংশের মধ্যে ‘হাওয়া ভবন’ আতঙ্কও আছে। গত মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সময় এই হাওয়া ভবনকেন্দ্রিক একটি পক্ষ মূলত তারেকের সঙ্গে থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দল। নিগৃহীত হয়েছেন নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা।

এখন নির্বাচন ঘনিয়ে আসা এবং দলে তারেকের প্রভাবের কারণে হাওয়া ভবনকেন্দ্রিক পক্ষটি আবার সক্রিয় হয়েছে। দল ক্ষমতায় এলে এরা আবার আগের রূপ নেবে বলে মনে করেন সাধারণ নেতা-কর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, খালেদা জিয়া মনে করেন, তাঁর অনুপস্থিতিতে তারেক দলের হাল না ধরলে বিএনপি টিকবে না। আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনাও সম্ভব হবে না বলে খালেদা জিয়া মনে করেন। এ জন্য আদর্শিক অবস্থান বাদ দিয়ে বিভিন্ন আদর্শের অনুসারীদের নিয়ে জোট গঠন, ন্যূনতম আদর্শিক মিল না থাকার পরেও কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামকে পাশে রাখার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

আবার ধর্মীয় ব্যাখ্যা নিয়ে কওমি ধারার বিপরীত চিন্তার দল জামায়াতকে খুশি করতে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে প্রহসন বলেছেন খালেদা জিয়া এবং অভিযুক্তদের মুক্তিও চেয়েছেন তিনি। অবশ্য এই নেতারা এ-ও বলেছেন, বিএনপিকে যদিও ওই অর্থে আদর্শিক রাজনৈতিক দল বলা চলে না, তার পরও কিছু নীতি বজায় রেখে রাজনীতি করছে দলটি। কিন্তু যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়ার মানসিকতার কারণে এখন দলের আদর্শিক কোনো অবস্থান নেই। বিএনপির এখন নীতি হলো, ‘আওয়ামী লীগের শত্রু, বিএনপির বন্ধু’। তারেকের দেশে ফেরা: তারেক রহমানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন, এমন একাধিক অরাজনৈতিক ব্যক্তি প্রথম আলোকে জানান, বিএনপি ক্ষমতায় না গেলে তারেক দেশে ফিরবেন না।

কারণ, এখন দেশে ফিরলে তারেকের গ্রেপ্তারের আশঙ্কা আছে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল হলে তারেক নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে দেশে ফিরবেন বলে আশা করছেন তাঁরা। তারেক প্রায় পাঁচ বছর ধরে সপরিবারে লন্ডনে অবস্থান করছেন। দলীয় সূত্রগুলো জানায়, বিএনপির নেতাদের অনেকে লন্ডনে গিয়ে তারেকের সাক্ষাৎ পাননি। তবে একটি সেমিনারে অংশ নিতে গিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারেকের সাক্ষাৎ পান।

তারেক জ্যেষ্ঠ নেতাদের বরাবরই এড়িয়ে চলেন। তার পরও ভেতরে যতই ক্ষোভ থাকুক, নেতারা সবাই প্রকাশ্য সভা-সমাবেশে বক্তৃতায় তারেকের গুণগান করেন। কারণ, খালেদা জিয়া যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তারেক রহমানের পরামর্শ নেন। জনপ্রিয়, আবার অজনপ্রিয়ও: বিএনপির একটি অংশের কাছে তারেক রহমান জনপ্রিয় নেতা। কিন্তু দলটির নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ এবং কেন্দ্রীয় ও মাঠপর্যায়ের কিছু জ্যেষ্ঠ নেতা তাঁকে পছন্দ করেন না।

এই নেতারা মনে করেন, তাঁদের সঙ্গে তারেক রহমান রাজনীতি করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না। সে ক্ষেত্রে হয় তাঁদের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াতে হবে, নয়তো আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে কোনোমতে দলে টিকে থাকতে হবে। নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে দলের জ্যেষ্ঠ এই নেতাদের কেউ কেউ অবসরে যাওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। বিএনপির ১৯ সদস্যবিশিষ্ট স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যের তারেকের অধীনে রাজনীতি করা নিয়ে অস্বস্তি আছে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর ও কেন্দ্রীয় কিছু নেতাও বিভিন্ন সময়ে এমন অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

তারেক নিজেও এই নেতাদের এড়িয়ে চলেন। জেলা পর্যায়ের কিছু প্রবীণ নেতাকে ইতিমধ্যে জেলা কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কমিটির উপদেষ্টা করা হয়েছে। তারেককে অপছন্দ করার কারণ হিসেবে কয়েকজন নেতা বলেছেন, তারেকের বন্ধুমহলটা ভালো নয়। কিন্তু তারেক এঁদের প্রতি খুবই আকৃষ্ট।

তারেকের এই বন্ধুমহল বলতে তৎকালীন ‘হাওয়া ভবনের লোকদের’ প্রতিই ইঙ্গিত করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি ছোট ছোট ইসলামি সংগঠনকে পাশে রাখার ব্যাপারটিও এই নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে। এই অবস্থায় বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয় প্রধান ও সরকারপ্রধান ভিন্ন ব্যক্তিকে করার কথা ভাবছে। নেতারা মনে করছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে জিতলে খালেদা জিয়া হবেন প্রধানমন্ত্রী আর তারেক হবেন দলীয় প্রধান। আর তারেককে যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের বেশির ভাগই অপেক্ষাকৃত তরুণ।

আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হওয়া এবং সর্বোপরি জ্যেষ্ঠ নেতাদের হটিয়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায় বলে এ অংশটি তারেককে পছন্দ করে বলে প্রবীণ নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন। অবশ্য দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকেই তারেককে অপছন্দ করেন, এ কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, কাউন্সিলরদের ভোটে তারেক রহমান দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তারেকের মধ্যে সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছেন বলেই তাঁকে নেতৃত্বে এনেছেন কাউন্সিলররা। জামায়াতকে নিয়ে অস্বস্তি, বন্ধু বাড়াতে সবকিছু বিসর্জন: জোটের শরিক জামায়াতকে পক্ষে রাখতে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি।

অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট হলো রাজনৈতিক। আর মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে বিএনপি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার চায়। ১৩টি দাবি নিয়ে আসা হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনকে সমর্থন দেওয়া নিয়েও বিএনপিকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। কেবল সরকারবিরোধী অবস্থান থাকায় হেফাজতের পক্ষ নেয় দলটি। দলের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, হেফাজতের বেশির ভাগ দাবির সঙ্গে বিএনপি একমত নয়।

তার পরও হেফাজতের পক্ষ নিয়ে বিএনপি যে ভুল করেনি, তা পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। এখন মূলত ভোটের রাজনীতি প্রাধান্য পাচ্ছে। সুত্র
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.