আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বুধবার স্পষ্টভাবে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ মন্দার কবলে বা দ্বারপ্রান্তে উপনীত হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতিই এখন বড় ধরনের দীর্ঘমেয়দী অর্থনৈতিক সংকোচনের মুখোমুখি। ওদিকে বিশ্বব্যাংক প্রধান রবার্ট জেলিক বলেছেন, খাদ্য ও জ্বালানির উচ্চমূল্যের পাশাপাশি চলমান আর্থিক সংকটের কারণে পশ্চিমা বিশ্বের সাহায্য সংকুচিত হতে থাকায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদা মেটাতে অদূর ভবিষ্যতে ওইসব দেশের সরকার হিমশিম খাবে। (আরও তথ্যসহ)
আইএমএফ তাদের প্রকাশনা 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক' এর অক্টোবর-২০০৮ সংখ্যায় বলেছে, 'গ্রেট ডিপ্রেশন' নামে পরিচিত আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় আর্থিক মন্দার পর বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে আছে অথর্নীতি। আর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে না আসায় এবং ঋণ সংকট না কাটায় আগামী দিনে চরম অর্থনৈতিক মূল্য দিতে হতে পারে।
প্রকাশনায় আইএমএফ বলেছে, "১৯৩০ এর দশকের পর বড় অর্থবাজারগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকায় বিশ্ব অর্থনীতি এখন বড় ধরনের দীর্ঘমেয়দী মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
"
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক এবং ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, কানাডা ও সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সমন্বিতভাবে সুদের হার আধা শতাংশ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই আইএমএফ তাদের এ প্রকাশনা তৈরি করে।
আইএমএফ সাধারণত বছরে দুইবার 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক' প্রকাশ করে। অক্টোবরের এ সংখ্যায় আইএমএফ ২০০৯ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ হতে পারে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী বছরের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে আইএমএফ এর এ ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হলে তা গত সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির রেকর্ড গড়বে।
বুধবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জেলিক বলেন, আর্থিক সংকট ছড়িয়ে পড়তে থাকায় উন্নয়নশীল দেশগুলো আগামীতে কঠিন সময়ের মধ্যে পড়তে পারে।
আগামী ১১ থেকে ১৩ অক্টোবর ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বের অর্থমন্ত্রীদের বার্ষিক বৈঠকের প্রাক্কালে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে জেলিক আরও বলেন, খাদ্য ও জ্বালানির উচ্চমূল্যের পাশাপাশি চলমান আর্থিক সংকটের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদা মেটাতে অদূর ভবিষ্যতে সরকার হিমশিম খাবে।
ওই বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য তৈরি বিশ্বব্যাংকের এক নতুন প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, খাদ্য ও জ্বালানির উচ্চমূল্যর জন্য ২০০৮ সালে বিশ্বে অপুষ্টিতে ভোগা লোকের সংখ্যা ৪৪ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৯৬০ মিলিয়নেরও বেশি হতে পারে।
সাক্ষাৎকারে জেলিক বলেন, বিশ্বব্যাংক এমন প্রায় ২৮টি দেশকে সনাক্ত করেছে যারা আর্থিক সংকটে পড়তে পারে। এ সম্পর্কে ওয়াশিংটনের বৈঠকের আগে বৃহস্পতিবার রাতে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও সাক্ষাৎকারে জানান বিশ্বব্যাংক প্রধান জেলিক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।