আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেলেবেলার স্মৃতিকথা–০৯

সুশীলের ভেকধারী এক মহা ভন্ড!
এক লাইনের সাথে আরেক লাইনের মিল নাই কোনো! আমি তখন ক্লাস ফোরে। একজনের কাছে বাসায় পড়তাম, তো সে আমাকে একটা বই কিনে দিলো। ড্রাকুলা সিরিজের। আমিই বলছিলাম তাকে কিনে দিতে। তো পড়ার পরে তো আমার হালুয়া টাইট! এমন ভয় পাইছিলাম যে বেশ কিছুদিন টয়লেটে গেলেও আল্লাহর নাম নিতাম।

বাসায় কেউ না থাকলে কাঁথা মুড়ি দিয়ে পড়ে থাকতাম তাও টয়লেটে যাইতাম না। বেশি দরকার পড়লে আল্লাহর নাম আর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়তে পড়তে যাইতাম। আম্মু এই অবস্থা দেইখা ভালো ঝাড়ি দিছিলো একবার। ফোরে না থ্রিতে তিন গোয়েন্দার বই প্রথম পড়ি। নাম ছিলো খুব সম্ভবত সাগরসৈকত।

সিউর না যদিও এইটা প্রথম বই নাকি। তবে বইটার প্রচ্ছদ দেখে খুব পছন্দ হইছিলো। রবিনসন ক্রুসো যখন পড়ি তখন খুব ইচ্ছে করত দ্বীপে চলে যাইতে। সেইম অনুভুতি হইতো সুইস ফ্যামিলি রবিনসন পড়েও। আবার চিল্ড্রেন অফ দ্য নিউ ফরেস্ট পড়ে ইচ্ছে করতো বনে যেয়ে থাকি।

সিক্সে বা সেভেনে থাকতে সাগরসৈকত বইটা প্রথম কিনি। কালেকশন করার ইচ্ছে ছিলো। প্রচ্ছদ দেখে আমার এক বন্ধু স্কুলে রটাইয়া দিলো আমি উলটাপালটা বই কিনি! অতিশয় ভালো পোলার নামে এ কি ধরনের মিথ্যা কথা!! ছি ছি! আবার ফাইভে যখন ছিলাম তখন মাসুদ রানা প্রথম পড়ি। নাম ভুলে গেছি, তুরস্ক নিয়ে কাহিনী, সেইরকম বই ছিল। পরে ভলিউম যখন কিনলাম দেখি যে অনেক কিছুই বাদ দিয়ে দিছে।

ঐ বইটা তখন পড়ে বেশ আমোদ পাইছিলাম। টিনটিন পড়া শুরু করে অনেক লেটে। এইটে বা নাইনে থাকতে। টিনটিন, অ্যাস্টেরিক্স এইগুলা একসাথে শুরু হয় পড়া। নন্টে ফন্টে, হাদা ভোদা, বাটুল ক্লাস ফোর বা থ্রির এক্সাম শেষে পাই।

বাপ আগেই কিনে রেখেছিলো, কিন্তু দেয় নাই। ফাইনাল এক্সাম শেষ হলে তারপর হাতে পাই। ফেলুদা আর শঙ্কু অবশ্য আরো আগে পড়ছিলাম। ভালোই লাগতো। হুমায়ুন আহদেদ এর প্রায় সব বই পড়ছি, তবে কিনি নাই তেমন, মাক্সিমাম দুই চাইরটা কিনেছিলাম।

তার প্রথম মনে হয় অমানুষ পড়ছিলাম। আরো ছোট থাকতে ওয়ান বা আরো আগে হয়তো রূপকথার বইও বেশ পড়েছিলাম। আরো একটা বইয়ের নাম মনে পড়েঃ চোর এসে বই পড়েছিলো। এই বইয়ে প্রথম টিনটিনের নাম শুনি। এইটা মনে হয় টু থ্রির দিকে পড়েছিলাম।

নাম দেশ ফুল ফল খেলার সময় চ তে সব সময়ে এই বইটার নাম লেখতাম। কিন্তু আমার কাজিনরা কোনদিন এইটা অ্যাক্সেপ্ট করে নাই! বলে আমি নাকি নাম বানাইছি জাপানি রুই এর মত! স্কুলে থাকতে কত কষ্ট করে টাকা জমাইতাম বই কেনার জন্য। টিফিনের টাকা, ঈদের সালামির টাকা ইত্যাদি যাই পাইতাম সব বই কেনার জন্য রেখে দিতাম। আর এখন বই কেনার তেমন কোন তাগিদ নিজের মধ্যে মনে পড়ে না। পাইলে পড়ি, নাইলে নাই!
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।