অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর অনেক জেলার অনেক মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হলো। এক সাথে ক্লাশ করি ১৩৫জন। অনেকের চেহারা চিনি নাম জানি না। আমাকেও কেউ চিনে না।
মিলন ভাইয়ের ক্যান্টিনের সামনে এক ছেলেকে দেখলাম খুব করুণ সুরে ওয়াজ করতেছে, সাথে বয়ান।
আমাদের সাথেই পড়ে। আগ বাড়িয়ে পরিচিত হলাম। নাম বাহার। বাহার আদতেই বাহারি ছেলে ছিলো।
প্রথম কয়েকদিন ল্যাবে যাওয়ার পরে হঠাৎ বাহার লাপাত্তা- অবশ্য অনেকেই লাপাত্তা হয়ে যায়।
কেউ নতুন করে বুয়েট, মেডিক্যাল ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করে। কেউ অন্য কোথাও সুযোগ পেয়ে চলে যায়।
মাসখানেক পর আবার বাহার উদয় হলো, মুখে চিকন হাসি। শরীরে চেকনাই, হাতে সোনালী ঘড়ি।
কি খবর বন্ধু? কই ছিলা এতদিন?
লাজুক বাহার আঙ্গুল মটকে বললো, আর বলো না বন্ধুরা, বাসায় গিয়েছিলাম, বাবা বিয়ে করিয়ে দিলো।
আমাদের সবার চোখ কপাল ছেড়ে শূন্যে ঘুরছে তখন। এদ্দুরা পোলা বিয়া কইরা ফেলাইছে? তোদের ভাবীতো আসতেই দিতে চায় না।
আমরা রোমান্টিক হয়ে উঠি সামান্য, নিজের বই ঠিকমতো জুটে না, লাইব্রেরীর বই তুলে পড়ি, সেইখানে ওর নিজের বৌ, সেই বৌ আবার আসতে দিতে চায় না। আহা আহা মরি মরি।
আমরা সেকেন্ড ইয়ারে যখন পরীক্ষা পিছাও জীবন বাঁচাও আন্দোলন করছি, তখন আবার বাহারকে দেখা গেলো একদিন।
দোকানের সামনে, সোনালী ঘড়ির রং চটে গেছে। তবে এখনও উৎফুল্ল।
কি রে কই গেছিলি?
নাহ আমার ছেলের মুখে ভাতের অনুষ্ঠান ছিলো।
আমরা আবার টাশকি। লুকু সিগারেট ধরাতে ধরাতে বললো, কি রে ব্যাটা তুই না হেইদিনকাই বিয়া করলি।
তোর পোলা হয়্যা গেলো, সেই পোলা ভাতও খাওয়া শুরু কইরা দিলো?
ব্যাটা ঠিক মতো ক তো তোর পোলা কি ভাতের থালা হাতে প্যাট থেইক্যা বাইরাইছে? বাইরাইয়াই কইছে ভাত দাও?
এই ঘটনার শেষ হলো- বাহার ইউনিভার্সিটি ছাড়বার আগেই ওর ছেলে প্রাইমারিতে ভর্তি হয়েছিলো। আর ব্যাচেলর সার্টিফিকেট পাওয়ার সময় ওর ছেলে মেয়ে ছিলো ২টা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় তার রেজাল্ট ভালো না হইলেও আসল পরীক্ষায় না কি সে নিয়মিত বৌয়ের কাছে ভালো মার্কস পাইতো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।