আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উৎসর্গ: আউলা

............................................

আউলা খুব ভালো সাইকেল চালাতো। কিন্তু সাইকেলের পিছনে কেউ উঠলে, সে তখন আর ঠিক থাকতে পারতো না, ধাপ্পুস করে পড়ে যেত। একবার মামারা, খালারা, আমরা সব ভাইবোনরা পিকনিক করছিলাম মামার ফ্যাক্টরিতে। আউলা তার সাইকেল নিয়ে রোডে নামলো পিকনিকের উদ্দেশ্যে। শামীম ভাই(কাজিন) ওর সাইকেলের পিছনে উঠতে চাইল, কিন্তু ও উঠতে দিলো না।

উনি উঠে পড়ছিলেন কিন্তু আউলা বুঝতে পারেনি। যখন বুঝতে পারলো তখন এ্যাঁ এ্যাঁ করতে করতে সাইকেল নিয়ে সোজা ড্রেনে। আউলা, বুবু আর টুসি আপু একবার আহসান ভাইয়ার(বসলোক) সাথে ডাঙ্গুলী খেলায় জিতে গেল। আউলার তো দেমাগ আর দেখে কে!! দাম বাড়ানো কথা বলতে লাগলো। ডাঙ্গুলী খেলার নিয়মানুযায়ী ওরা আহসান ভাইয়াকে খাটান দিবে।

কিন্তু আহসান ভাইয়া ক্যাচ ধরল তাই উল্টা আহসান ভাইয়া ওদেরকে সাড়ে সাত খাটান দিবে। ঐ অবস্থায় বুবু আর টুসি আপু পালালো। আর বেকুব আউলা হাবার মত করে আহসান ভাইয়ার খাটান খেতে লাগল। ১ ঘন্টা খাটান খাওয়ার পর সে কান্না শুরু করলো। তারপরে দয়াময় আহসান ভাইয়া ছেড়ে দিল।

আমরা ক্রিকেট খেলছিলাম। আমার নিজের ২ বোন আর মামাত ৩ বোনের শখ হলো আমাদের সাথে ক্রিকেট খেলবে তারা। অনেকজন প্লেয়ার, খেলা বেশ জমেছে। আম্মু, নানী, খালা, মামা, মামীরা দর্শক। আউলা দুর্দান্ত বল করছে।

সাথে চোট্টামি তো আছেই। প্রতিটা বলেই আউট আউট বলে চিল্লাচ্ছে। আর খালাতো ভাই বাবু(খুব ভালো খেলে) মনের মত ছয় পিটাচ্ছে। অনেক চোট্টামি করে তারা আমাদের সব উইকেট ফেলে দিল। আউলা ব্যাটিঙে উইক বলে আউলার ব্যাটিঙ ছিল শেষে।

যথাসময়ে আউলা ব্যাট করতে এল। প্রথম দুইটা বল কোনোভাবে গেল। তৃতীয় বলের সময় আউলা বল মারার সাথে সাথেই ব্যাট ফেলে দৌড়। কেন, কি হয়েছে? সে নাকি বল চোখে দেখে না, বলটা যদি নাকে লাগে তাই দৌড়। (ক্লোজআপহাসি)(ক্লোজআপহাসি) একবার ছোট নানাজিকে দেখতে আউলা আর টুসি আপু, পুষ্প মামা আর নানী কুষ্টিয়ায় যাচ্ছিল বাসে করে।

বাসে আবার মহারানী আউলা ঘুম দিয়েছিল। তারপর ঐখানে পৌছানোর পর সে দেখলো তার একটা জুতা নাই। তার নিজেকে বস্তির মেয়ে মনে হচ্ছিল। আরো মনে হচ্ছিল, কারও বাড়িতে খালিপায়ে যাওয়াটা খুবই লজ্জাজনক। তারপরে বাস থেকে নামার পর একটা গাছের নিচে দাড়ায়, সেখানে আবার একটা কাক মাথায় পায়খানা করে দেয়।

পুরো বিধ্বস্ত অবস্থায় সে নানাবাড়িতে যায়। এইটা নাকি তার ছোটবেলার বিব্রতকর অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্যে একটা। ঈদের আগের দিন আউলা মানুষকে ভূতের ভয় দেখাতো। ভূত সাজতো হাত উঁচু করে মুঠ করে একটা ছোট হাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে দিতো, তারপরে একটা ধবধবে সাদা শাড়ি দিয়ে পুরো শরীর পেচানো হতো। দেখতে অন্ধকারে কেমন লম্বা লাশ দাড়িয়ে আছে মনে হতো।

(কিন্তু এইভাবে ভুত সাজানো হলে ভূত চোখেও দেখে না, আর নড়তেও পারেনা) শাড়িটাও চুরি করতো, নানীর শাড়ি। প্রথম দিকে বুবু আর টুসি আপুও থাকতো। বুবু আর টুসি একটু বুঝতে শিখলে ঐ আকামের মধ্যে আর থাকতো না। আর এই আকাম কুকামে সারা দুনিয়ার পিচ্চিরা এসে হাজির হতো(আমিও থাকতাম)। বুবুকে ভূত সাজনো হতো কারণ বুবু বেশ লম্বা ছিল।

বুবু যখন আকাম ছেড়ে দিল, তখন আউলা্ উপায় না দেখে নিজেই ভূত সাজলো একবার। তখন শীতকাল। ভূত সাজাই দিল আউলার চেয়ে সামান্য ছোট আমাদের একটা কাজের ছেলে পিঙ্গুলী। নানীবাড়ির কাজের মেয়েকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে পুকুরের পাড়ে দাড়িয়ে রইল। নানীবাড়ির ঐ কাজের মেয়ে ভূত দেখে প্রথমে চিল্লাই উঠল, ওরে খোদাতালা, এইটা কি? তারপরে ঝড়ের বেগে এসে আউলাকে ধাক্কা মারলো সোজা পুকুরে।

(এই ভূত সাজা নিয়ে আউলা বেচারীর একটা করুণ কাহিণী আছে, তা আপনারা তার কাছে শুনেন) তিন নং আর ৪ নং ঘটনাটা বাদে বাকী তিনটা ঘটনাই একটু আগে আমি আউলার কাছে শুনে লিখেছি। বেকুব আউলা সরল মনে এসব ঘটনা বলল। ও এখন ঘুমাচ্ছে। ও ঘুম থেকে উঠেই হতবাক হয়ে যাবে। গালে হাত দিয়ে বসে ভাববে আমি কিভাবে পারলাম।

অথচ ওকে বলেছি, আমি ওকে নিয়ে লিখব না। ওয়াক হ্যাক হ্যাক ওয়াক ভ্যাক ভ্যাক

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।