বাংলাদেশকে নিয়ে শংকিত
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সৌন্দর্য কৃত্রিম নয়, এ সৌন্দর্য নিষ্পাপ। এখানকার অনন্য সম্পদ ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকাভুক্ত পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এবং পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন ও নদীমাতৃক বাংলাদেশের গর্ব পদ্মা বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপকে সৌন্দর্যের রানী হিসেবে অবহিত করা যায়। আছে সাগর কন্যা কুয়াকাটা।
এটি বিশ্বের এমন এক বিরল জায়গা যেখানে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশিতে একই স্থানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। এই বৈশিষ্ট্য কুয়াকাটাকে বিশ্বের অন্যতম বিরল সৈকতে পরিণত করেছে। এখানে আছে দীর্ঘ বালুময় সৈকত ও ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের অংশ ফাতবার চর, আছে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বৌদ্ধমূর্তি। ফয়েজ মিয়ার নারিকেলের বাগান। বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির লেক পাহাড় প্রকৃতির সৌন্দর্য সত্যিকার অর্থেই হৃদয় স্পর্শ করার মতো।
নেত্রকোনার গারো পাহাড়ের পাদদেশের হাওড় অঞ্চলগুলোর মনকাড়া সৌন্দর্যের অধিকারী। দুটি পাতার একটি কুড়ি অঞ্চল সিলেটের মাধবকু-, জাফলং পাহাড়ি ঝরনা ও প্রকৃতির হৃদয় স্পর্শ করার সৌন্দর্যকে বুকে ধারণ করছে। মুসলিম বৌদ্ধ এবং হিন্দু ঐতিহ্যের অসংখ্য প্রতœতাত্ত্বিক স্পট বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান আলীর দিঘি ও মাজারের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের অধিকারী আমরা। এ ছাড়া কুমিল্লা, বগুড়া, রাজশাহী ও দিনাজপুরে রয়েছে প্রচুর পর্যটন স্থান।
তারপরও আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বারে তালা দিয়ে রেখেছি। পর্যটনের বাধাগুলো কিছুতেই অপসারণ করতে পারছি না। দুনিয়া যখন পর্যটনকে সম্বল করে এগিয়ে যাচ্ছে তখন আমরা সূচকের ক্ষেত্রে নিচে নেমে যাচ্ছি। যেখানে পর্যটন খাতে সার্কভুক্ত কোনো
কোনো দেশের জাতীয় আয় আসে ৯০ শতাংশ সেখানে আমাদের আসে এক শতাংশ। পিছিয়ে পড়া পর্যটন শিল্পের এ দেশটির সঙ্গে কেমন করে যেন লালন ফকিরের গানটির সারমর্ম অনেকখানিক জড়িত ‘বাড়ির পাশে আরশিনগর আমি না দেখিলাম তারে।
’
সত্যিই সুপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামোগত বাস্তবায়ন করলে প্রাকৃতিক অপরূপ সুদর্শন পর্যটনের কেন্দ্রস্থল হতো একমাত্র বাংলাদেশ। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা শুধু মানুষের ভালোবাসা থেকেই আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছে কক্সবাজার। কক্সবাজার, সুন্দরবন ও পদ্মা প্রাকৃতিক বিস্ময় সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃতি অর্জন করতে যাচ্ছে। এমন বিরল সুযোগ সহসাই আসবে কি না সন্দেহ। তাই আর নয় পিছিয়ে পড়া সময় এসেছে তুলে ধরার।
সবাই জানেন বিশ্বে এই প্রথমবারের মতো ‘প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচন’ করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক নিউওপেন ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন। এখন চলছে নির্বাচন প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় পর্ব। এ পর্বে সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত ২১টি অঞ্চলকে চূড়ান্ত পর্বে ২০০৯ সালব্যাপী ইন্টারনেট ও এসএমএস ভোটের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে হবে। ২০১০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে ‘নিউ সেভেন ওয়াল্ডার্স ন্যাচার’। প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে দেশের পক্ষে সবাই তাই ভোট দিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।